এম. আব্দুল করিম, কেশবপুর (যশোর): যশোরের কেশবপুরে মিষ্টি জাতের গ্রীন মাল্টা বারী-১ ও চায়না কমলা চাষে বাম্পার ফলন হওয়ায় স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছে কৃষক মো. সেলিম হোসেন। ইতোমধ্যে তার প্রতিটি গাছেই জাতের গ্রীন মাল্টা ও চায়না কমলার ধরন এসেছে। কিছুদিন গেলেই মাল্টা ও কমলা বিক্রি শুরু হবে। নার্সারী মালিক সেলিমের দীর্ঘ ৪ বছরের শ্রমে তার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে। উপজেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত নওয়াব আলী সরদারের ছেলে সেলিম পেশায় একজন নার্সারী ব্যবসায়ী ছিলেন।
তিনি ২০১১ সাল থেকে এ পেশার সাথে জড়িত। নিজের জমিসহ অন্যের জমি বর্গা নিয়ে তার নার্সারীর ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার সুবাদে ২০১৬ সালে তার পরিচয় হয় পার্শবর্তী মনিরামপুর উপজেলার মুজগুন্নি গ্রামের সফল মাল্টা চাষী আব্দুল করিমের সাথে। তার ক্ষেতের মাল্টার ফলন দেখে তিনি সিদ্ধান্ত নেন মাল্টা চাষ করার। তারই অনুপ্রেরণা ও পরামর্শে ওই বছরই তার ক্ষেত থেকে ৭০ পিস চারা কিনে এনে তিনি ক্ষেতে রোপন করে পরিচর্যা শুরু করেন। নার্সারী মালিক সেলিম বলেন, পর পর তিন বছর নার্সারী ব্যবসায় লাভ না হওয়ায় তিনি ভিন্ন কিছু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে মাল্টা চাষের পরিকল্পনা গ্রহন করেন। করিম ভাইয়ের দিক নির্দেশনায় তিনি মাল্টা চাষ করে সফল হয়েছেন। এবং স্ববলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। চারা রোপনের পর থেকে নিয়মিত পরিচর্যা করায় ২ বছরের মাথায় প্রতিটি গাছে অসংখ্য মাল্টা ধরেছে। তার ক্ষেতের কমলা সুস্বাদু। প্রতিটি গাছে ৩শ’ থেকে ৪শ’ পিচ মাল্টা ধরেছে। প্রতি কেজী মাল্টা ১শ’ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করছেন।
পাশাপাশি তিনি বাণিজ্যিক ভাবে তার ক্ষেতে চারা উৎপাদন করছেন। তার উৎপাদিত চারার কোন রোগ বালাই নেই বললেই চলে। তার নার্সারীতে মাল্টা বারী-১, চায়না কমলা, মাল্টা, ভেরাকাটা মাল্টা, ঝুরি কমলা, নাগপুরি কমলা, ছাতকী কমলাসহ হরেক রকমের ৭ হাজারের মতো চারা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, তিনি শুধু একজন মাল্টা চাষী নন, মাল্টার চাষ সম্প্রসারণেও তিনি ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার নার্সারীর উৎপদিত কমলা ও মাল্টার চারা দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ৮টি বাগান করতে উৎসাহিত করেছেন। তার অনুপ্রেরনায় উপজেলার সন্ন্যাসগাছা গ্রামের আবু হুরাইরা, একই গ্রামের মিজানুর রহমান, আব্দুল আজিজ, ভেরচি গ্রামের আরাধন কুন্ডু ও সাতাইশকাটি গ্রামের আক্তার হোসেন মিঠুর কমলা ও মাল্টা বাগান উল্লেখযোগ্য। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, কেশবপুরের মাটি বারী-১ জাতের মাল্টা চাষে খুবই উপযোগী। এ জাতের কমলা ও মাল্টা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এবং অনেকেই এখন মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছে।
The post কেশবপুরে মাল্টা চাষে কৃষক সেলিমের সুদিন appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/31tNj7P
No comments:
Post a Comment