রজতকান্তি সিংহচৌধুরী
চলে গেলেন শঙ্খ ঘোষ (৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩২ — ২১ এপ্রিল, ২০২১)। বঙ্গসংস্কৃতির অঙ্গনে এক নিঃশব্দ নক্ষত্রপাত। জ্ঞানপীঠ, সাহিত্য আকাদেমি, রবীন্দ্র পুরস্কার সহ নানা সম্মানে ভূষিত এই কবি-অধ্যাপক মানুষটি শাদা ধুতি-পাঞ্জাবিতে ছিলেন আনখশির নিরহংকার, আজীবন মাটির সঙ্গে সংলগ্ন। লিটল ম্যাগাজিন এবং তরুণ কবির অভিভাবক এবং প্রযতœবান শিক্ষক। তাঁর নিরুচ্চার স্নেহশীলতার মুদ্রা আমাদের বোধের শুশূষা।
তাঁর জন্ম আজকের বাংলাদেশের চাঁদপুরে তাঁর মামার বাড়িতে। আদি বাড়ি বরিশালের ঐতিহ্যশালী বানারিপাড়া গ্রামে, যে-গ্রামের নদী সন্ধ্যানদীর কথা তাঁর কবিতায় লহরে লহরে ভেসে ওঠে, ‘আমার নদীর নাম সন্ধ্যানদী, তুমি তার জল’ (‘সন্ধ্যানদীজল’, ছন্দের ভিতরে এত অন্ধকার, ১৯৯৯)। বস্তুত জল তাঁর কবিতায় ঘুরে ঘুরেই কথা কয়। ‘জলই পাষাণ হয়ে আছে’ (২০০৪) হয়ে ওঠে কবিতার বইয়ের নাম, যেখানে ‘সমস্ত ক্ষতের মুখে পলি’ (২০০৭)। ‘পাঁজরে দাঁড়ের শব্দে’ (১৯৮০) ‘রক্তে জল ছলছল করে’, পদক্ষেপে পদক্ষেপে ধেয়ে আসতে থাকে ‘এক অক্ষৌহিণী বৃষ্টিরেখা’।
পড়াশোনার শুরু পদ্মাতীরে পাবনা জেলার পাকশি শহরের চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠে, যেখানে তাঁর বাবা মণীন্দ্রকুমার ঘোষ ছিলেন প্রধান শিক্ষক। বাবার কাছ থেকে আমাদের কবি পেয়েছেন বাংলা ভাষা আর রবীন্দ্রনাথের প্রতি ভালোবাসা। কবি লিখেছেন, ‘কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আমার ছোটোভাইয়ের মৃত্যু অনিবার্য জেনে বাবা একদিন ক্লাসে এসে শুনিয়েছিলেন একটির পর একটি ‘নৈবেদ্য’-র কবিতা। মা অমলবালার প্রশ্রয়ে এখানেই কবিতা লেখার শুরু। বারো বছর বয়সী এক কিশোর, রাত্তিরবেলা পড়তে বসে একটু চোখ লেগে গিয়েছিল তার। মা খাওয়াতে বসে বকুনি দিলেন, তাঁর ওই ছেলের দ্বারা কিচ্ছু হবে না! ওর বয়সে কত বিখ্যাত মানুষ কত বড়ো বড়ো কাজ করেছেন, বিজ্ঞান, সমাজসেবা, খেলাধুলা বা শিল্পসাহিত্যের দুনিয়ায়। ভাবুক কিশোরটি গালে হাত দিয়ে ভাবতে থাকে, তার তো আর কোনো দিকেই দক্ষতা নেই, অন্তত কবিতা তো সে লিখতে পারে। খাতা ভর্তি করে কবিতা লেখা চলতে থাকল। আজকের শঙ্খ অবশ্য মনে করেন, ছন্দোবদ্ধ সেই লেখার একটিও কবিতা ছিল না।
উচ্চশিক্ষা প্রেসিডেন্সি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। জীবনের প্রথম তিনটে বছর আর সাত থেকে পনেরো বছর এটুকুই তাঁর সর্বসাকুল্যে পুব বাংলায় থাকা। বাকি সময় কলকাতায়। তবু জন্মভূমির মানুষ, নিসর্গ আর সংস্কৃতি গভীর ছায়া ফেলেছে তাঁর কবিতায়। যেখানে ‘ভেজা বিকেলের পাশে ডানা মেলে বসে আছে আলো।’ (পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ, ১৯৮০)
ঘরছাড়া এক মানুষের বেদনা তাঁর অনেক কবিতাতেই, স্মৃতি ছাড়া যার কোনো বাস্তবিক বাস্তুভূমি নেই। ‘স্মৃতি যেন দীর্ঘযাত্রী দলদঙ্গল’, ‘এক পা ছেড়ে অন্য পায়ে হঠাৎ সব বাস্তুহীন।’ স্মৃতিবিধুর ‘দশমী’ কবিতায় তাই দেখি জন্মের মতো ভিটেমাটি ছেড়ে শেষ বিদায়,
‘ঠাকুমা যেমন ঠিক দশমীর চোখে দেখে জল
যাই পাকা সুপুরির রঙে-ধরা গোধূলির দেশ
আমি যাই’
(তুমি তো তেমন গৌরী নও, ১৯৭৮)
কিংবা, ছোটোদের জন্য লেখা ‘সুপুরিবনের সারি’ উপন্যাসের কিশোর নায়ক নীলু যেমন দ্বাদশীর বিকেলে দেশ ছেড়ে শেষ বারের মতো নৌকোয় ভেসে যেতে যেতে দেখে,
‘চোখের সামনে থেকে সরে যাচ্ছে কাছারিঘর, ম-প, দালানঘরের ছায়া। ওদের কি আমি প্রণাম করেছিলাম?..প্রণাম তোমায় মাটি।..এই তো ছ-আনি বাড়ির ঘাট দিয়ে এগিয়ে চলেছে নৌকো, আরেকটু পেরোলেই ঘোষের বাড়ি বড়ো বাড়ি সব উত্তরের বাড়ি, আরেকটু পেরোলেই লাইব্রেরি, আর তারপরেই তো হাটখোলার কোণ। প্রণাম মাটি, প্রণাম সাঁকো, প্রণাম ঢাক কাঁসর। টিনের চালা, নিকোনো উঠোন, হাটখোলা, প্রণাম।..
শেষ? হ্যাঁ, শেষ। প্রণাম তোমায় শেষ। প্রণাম তোমায়, এই দ্বাদশীর বিকেল। প্রণাম, ওই খালের মুখে নদীর জলের ঢেউ। প্রণাম তোমায় তুলসীতলা, মঠ। প্রণাম, ফুলমামি। প্রণাম, তবে প্রণাম তোমায় সুপুরিবনের সারি।’
কিন্তু তবুও তো কবিতার ভূমিতে কবির ‘পুনর্বাসন’,
‘যা ছিল আর যা আছে দুই পাথর ঠুকে
জ্বালিয়ে নেয় প্রতিদিনের পুনর্বাসন।’
(তত্রৈব)
‘সত্যি বলা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই কবিতার’, এই মন্ত্রে বিশ্বাসী তাঁর কবিতায় একদিকে যেমন অস্তিত্বের ঝংকার, অন্যদিকে তেমনি স্বৈরতন্ত্র, মৌলবাদ, গণহত্যা, ফাঁপা নাগর সংস্কৃতি, সামূহিক পচন আর সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে হার্দ্য প্রতিবাদ।
নকশাল আন্দোলনের দিনে পুলিশের গুলিতে মৃত তাঁর প্রিয় ছাত্র তিমিরবরন সিংহকে নিয়ে লেখা প্রথম কবিতার শেষ তিন চরণ,
‘তার মাঝখানে পথে পড়ে আছে ও কি কৃষ্ণচূড়া? নিচু হয়ে বসে হাতে তুলে নিই
তোমার ছিন্ন শির,তিমির।’
(তিমির বিষয়ে দু-টুকরো, মূর্খ বড়ো সামাজিক নয়, ১৯৭৪)
কবিতার শেষ চরণটি যেন মাত্রার দিক থেকেও
দু-টুকরো হয়ে যায়। আধার আর আধেয় তাঁর কবিতায় এইভাবে ওতপ্রোত থাকে।
আবার, দলতান্ত্রিক রাজনীতি-সংঘটিত গণহত্যার দিনে কবি উচ্চারণ করেন :
‘দাপিয়ে বেড়াবে আমাদের দল
অন্যে কবে না কথা
বজ্রকঠিন রাজ্যশাসনে
সেটাই স্বাভাবিকতা।’
(‘স-বিনয় নিবেদন’, মাটিখোঁড়া পুরনো করোটি, ২০০৯)
ভালোবাসাই কবিকে দেয় দুঃখ বইবার সক্ষমতা। শূন্যকে পূর্ণ করে সুরে ধন্য করবার শপথ। কেননা, ‘ভালোবাসা কথাটার গায়ে ঝুলে আছে মৌচাক।’ (‘জলেভাসা খড়কুটো : দ্বিতীয় গুচ্ছ’, শবের উপরে শামিয়ানা’, ১৯৯৭)
রুচির সমগ্রতায় তিনি একই সঙ্গে গ্রহণ করতে পারেন কবিতার নানা রকম। নেরুদা আর হিমেনেথ, হুইটম্যান আর গিনসবার্গ, জীবনানন্দ আর সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা।
প্রান্তিক মানুষজনের বেদনা তাঁর কবিতা মর্মস্পর্শী :
‘বাপজান হে
কইলকাতায় গিয়া দেখি সক্কলেই সব জানে
আমিই কিছু জানি না
অ সোনাবৌ আমিনা
আমাকে তুই বাইন্দা রাখিস, জীবন ভইরা আমি তো আর কইলকাতায় যামু না।’
(‘কলকাতা’, আদিম লতাগুল্মময়, ১৯৭২)
কত ভিন্ন ধরনে কুঁকড়ে গেছেন বয়ঃসন্ধির এই তরুণ কলকাতার বিশাল বিরূপ সমাবেশে, তার মস্ত দাম্ভিক চালচলনে, ভুল মানুষের ভিড়ে।
তাঁর কবিতায় দেখি, উন্নাসিক নাগরিকতা ‘আপন ভাষায় গাঁয়ে বসে’ খুদকুঁড়ো- খাওয়া প্রান্তজনের প্রতি অদ্ভুত, কিন্তু বাস্তব ধিক্কারে সোচ্চার :
‘রক্তে তো ইংরেজি নেই, বাঁচবে কীভাবে পৃথিবীতে!’
(‘রক্তের দোষ’, ছন্দের ভিতরে এত অন্ধকার, ১৯৯৯)
কিংবা,
‘পিষে ধরে আমাদের গ্রামীণ নিশ্বাস, সজলতা
কী ভাষায় আমাদের একান্ত বাঁচাও হল পাপ।’
(‘আত্মঘাত’, প্রহরজোড়া ত্রিতাল, ১৯৮২)
তবুও,
‘তোমার কোনো ধর্ম নেই, এই
শূন্যতাকে ভরিয়ে দেওয়া ছাড়া।’
(‘ত্রিতাল’, তদেব)
কারণ,
‘মদ খেয়ে তো মাতাল হত সবাই
কবিই শুধু নিজের জোরে মাতাল!’ (ঐ)
মানুষ মাত্রেরই সামাজিক দায় থাকে। কবিরও। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, কবিতার উচ্চারণ সবসময় সমাজের চোখে চোখ রেখেই করতে হবে। কবিতায় যদি কল্পনাজগতের প্রসার হয়, সেটা তো সমাজেরই কাজ। অথচ রাজনীতি চায় কবিকে শ্লোগানের জোগানদাতা করে রাখতে। এর বিরুদ্ধে শঙ্খের শ্লেষঘন প্রতিবাদ :
আমি কি তোমার দৃষ্টি চেয়েছি?
চেয়েছি কি কোনো জীবনছবি
তোমার কাছে যা চেয়েছি সে শুধু
হও স্লোগানের জোগানদাতা।
তা যদি না হও আমিও নাচার
কোনো পথ নেই তোমার বাঁচার —
তাকে আজ আর কীভাবে নামাব
ঘাড়ে চেপে আছ যে-মান্ধাতা।
(‘কবি’, জলই পাষাণ হয়ে আছ,২০০৪)
বিশ্বাস রাখেন তরুণ কবির স্পর্ধায়। ‘আমার যদি ইচ্ছে হয় প্রেমেরই কথা বলি। আমার যদি ইচ্ছে হয় প্রকৃতিতে যাই; আমার যদি ইচ্ছে হয় সহজ কথা বলি, আমার যদি ইচ্ছে হয় দুরূহতায় যাই; আমার যদি ইচ্ছে হয় অলংকারে বলি, আমার যদি ইচ্ছে হয় নিরাভরণ হই; আমার যদি ইচ্ছে হয় ছন্দ দিয়ে বলি, আমার যদি ইচ্ছে হয় ছন্দ ছেড়ে যাই; আমার জন্য নির্ধারিত পথ রাখেনি কেউ, আমার পথেও চাই না কাউকে।
একজন তরুণ কবি, সুবিনীত স্পর্ধায়, কেবল এই কথাগুলিই ভাবতে পারেন।’ নতুন লিখতে-আসা ছেলেমেয়েদের বুকে বলভরসা আনে তাঁর এই উচ্চারণ (কবির বর্ম, বিজল্প)।
এক অন্ধ কালের ভেতর দিয়ে যেতে-যেতেও তাঁর জ্ঞানপীঠ-ভাষণে (২০১৬) তিনি উচ্চারণ করেন বের্টোল্ড ব্রেখটের সংক্ষিপ্ততম এই কবিতা :
‘দিনগুলি যখন অন্ধকার হবে
তখনও কি আর থাকবে কোনো গান?
জরুর থাকবে তখন গান —
সেইসব গান হবে দিনগুলি কত অন্ধকার।’
লেখেন, ‘অথচ তোমার জন্য মায়া আজও জটিলতাময়’-এর (‘মায়া’, এও এক ব্যথা উপশম, ২০১৮) মতো মায়াবী পঙক্তি।
যে-দুনিয়ায় ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, সেখানেও ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ হয়ে ওঠে তাঁর কবিতার জিয়নকাঠি।
বন্ধুদের অনুমতিক্রমে এখানে নিবেদন করি আমার সাম্প্রতিক কবিতার বই ‘কবিতা স্বয়মাগতা’ (২০১৯, আদম) থেকে একটি ছোট্ট কবিতা, নাম
‘গোদাবরী পার হয়ে যাওয়া’, কবির এবং তাঁর চরণের উল্লেখ যার বয়ানে?
গোদাবরী পার হয়ে যাওয়া
রাজামুন্দ্রিতে মন্দ্রিত গোদাবরী
যে-সুরে বইছে কী করে তা গানে ধরি?
সংগীতহীন দৈনন্দিন যাপনে
মুখগুলি ঢেকে-ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে,
বলে রেখেছেন আগেই শঙ্খ ঘোষ
তবু গোদাবরী সম্বৃতনির্ঘোষ
স্পন্দন তোলে প্রান্তরকিনারায়
প্রাত্যহিকের সীমানা ঠিকই হারায়।
(প্রথম প্রকাশ : শারদ সংখ্যা সৃষ্টির একুশ শতক)
বহুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। প্রেসার, সুগারের বালাই ছিল না, তবে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। মাঝেমধ্যেই অক্সিজেন, নেবুলাইজার নিতে হত। আর ছিল মারাত্মক পারকিন্সন’স ডিজিজ, যার প্রকোপে কথা বলা, এমনকি লেখা অবধি বাধাপ্রাপ্ত হয়ে আসছিল। তবু এসবের মধ্যেও সৃজনশীলতা ছিল অব্যাহত। মূলত শ্রুতিলিখনের মাধ্যমে। এই ফেব্রুয়ারিতেও লিটল ম্যাগাজিন মেলায় সদ্যপ্রয়াত পাঁচ সতীর্থ অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবেশ রায়, সুধীর চক্রবর্তী আর অরুণ সেনকে নিয়ে গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় ‘পাঁচটি তারার তিমির’ নামে এক প্রদর্শনীতে উপস্থিত হয়েছেন। অলোকদা চলে যাবার পরে ফেসবুকে আমার এক লেখা ‘দোলায় আছে ছ’পণ কড়ি’ পড়ে নিজে থেকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
শেষ দেখা ৭ ফেব্রুয়ারির সকালবেলায়। দুদিন আগে তাঁর ৮৯ বছরের জন্মদিন। প্রণাম করে জিজ্ঞেস করলাম, আবার কখন দেখতে পাব? উনি বললেন, ফোনে কথা বলে নেব। সেই দেখা আর হয়নি। বাঙালি সংস্কৃতির অভিভাবক এই মানুষটির কাছে আমাদের আরও অনেক কিছু শেখার, জানার, নেওয়ার। এখনও তা বাকি রয়ে গেছে।
প্রয়াত হয়েছেন শঙ্খ ঘোষ। শক্তি-সুনীল-শঙ্খ-উৎপল-বিনয়, জীবনানন্দ পরবর্তী বাংলা কবিতার এই পঞ্চপা-বের বাকি চার জন চলে গিয়েছিলেন আগেই। চলে গেলেন শঙ্খ ঘোষও,৮৯ বছর বয়সে।
জন্ম অবিভক্ত বাংলার চাঁদপুরে,৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩২ সালে। প্রকৃত নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ।পিতা মণীন্দ্রকুমার ঘোষ মাতা অমলা ঘোষ।
পূর্ব পুরুষের নিবাস বরিশালে। বেড়ে উঠেছেন পাবনায়,পিতার কর্মক্ষেত্রে।
প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর।
পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন অধ্যাপনাকেই। পড়িয়েছেন কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজ, সিটি কলেজ এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
১৯৬৭ সালে আমেরিকার আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক লেখক কর্মশালায় যোগ দেন। পরে পড়িয়েছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, সিমলার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বহু পুরস্কারে সম্মানিত। ১৯৭৭-এ ‘মূর্খ বড়, সামাজিক নয়’ কাব্যগ্রন্থের জন্য নরসিংহ দাস পুরস্কার, ওই বছরই ‘বাবরের প্রার্থনা’ কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান শঙ্খবাবু।
১৯৮৯ সালে ‘ধুম লেগেছে হৃদকমলে’ কাব্যগ্রন্থের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার, ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’-এর জন্য সরস্বতী পুরস্কার পান। ২০১৬ সালে জ্ঞানপীঠ পুরস্কার।
১৯৯৯ সালে বিশ্বভারতীর দ্বারা দেশিকোত্তম সম্মানে এবং ২০১১-য় ভারত সরকারের পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত।
এ যাবৎ তাঁর ৩৪ খানা কাব্যগ্রন্থ, ৪৮ খানা গদ্যগ্রন্থ,শিশুতোষ গ্রন্থ ২৩ খানা ,বক্তৃতা সংকলন ৫ খানা প্রকাশিত হয়েছে।
কবিতার পাশাপাশি রবীন্দ্রচর্চাতেও প্রসিদ্ধি অর্জন করেছেন। ‘ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ’ তাঁর উল্লেখযোগ্য গবেষণা গ্রন্থ। প্রাবন্ধিক হিসেবেও সুবিদিত। ‘শব্দ আর সত্য’, ‘উর্বশীর হাসি’, ‘এখন সব অলীক’ উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থ।
তিনি ছিলেন উদার মানবতাবাদী ও শৈল্পিক প্রতিবাদী সত্তার জীবন্ত উপমা। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সমকালীন অভিভাবক
মহান এই কবির প্রতি আমাদের বিন¤্র শ্রদ্ধা।
The post শঙ্খ ঘোষ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3dNs1Iq
No comments:
Post a Comment