খেশরা (তালা) প্রতিনিধি: চোরচক্রের উৎপাতে তালার ইসলামকাটি ইউনিয়নের খরাইল বিলের মৎস্য চাষীরা অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। এই বিলের ঘেরগুলোতে চোরেরা প্রতিনিয়ত হানা দিয়ে হাজার হাজার টাকার মাছ চুরি করছে। ঘটনার প্রতিকার পেতে ভুক্তভোগী ঘের মালিকরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলার খরাইল বিলের মৎস্যঘের ব্যবসায়ী হায়দার আলী মোড়ল জানান, বিলে তাদের ৪০ বিঘার এবং পাশেই মোস্তাক আহমেদ এর একটি বৃহৎ সাদা মাছের ঘের রয়েছে। এছাড়া বিলে বিভিন্ন ব্যক্তির অর্ধশত মিশ্র ঘের রয়েছে। বছরের পর বছর মানুষ এখানে ঘের করলেও আগে তেমন চুরি হয়নি। কিন্তু বিগত ২ বছর ধরে বিভিন্ন ঘেরে নিয়োমিত চুরির ঘটনা ঘটছে।
ভুক্তভোগী ঘের মালিক দিদার মোড়ল বলেন, বিলের কিছু ঘেরের অসাধু কর্মচারীদের সহযোগীতায় চোরচক্র সুযোগ বুঝে ঘেরে হানা দিয়ে মাছ চুরি করছে। চোরদের ধরতে ঘেরের পাহারা জোরালো করা হয়েছে। তিনি বলেন, শনিবার গভীর রাতে খরাইল ভবানীপুর গ্রামের রেপুতি মন্ডল ওরফে ধোনাসহ তার ছেলে নীলকন্ঠ, অনেশ^র, লংকেশ^র ও সুকান্ত বিলের দিকে জাল এবং নৌকা নিয়ে আসে। তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় দু’টি ঘেরের পাহাদাররা সজাগ হয়ে ওটে। বিষয়টি আচ করতে পেরে ধোনা ও তার ছেলেরা কৌশলে চলে যায়। রেপুতি মন্ডল ওরফে ধোনার বিরুদ্ধে সুন্দবনের দস্যুদের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকা সহ বিভিন্ন ঘের থেকে মাছ চুরির অভিযোগ রয়েছে বলে দিদার মোড়ল জানান।
ভুক্তভোগী মাছচাষী আয়ুব আলী; ঘেরের পাহারাদার মুজিবুর রহমান ও ফারুক শেখ বলেন, সারাদিন ঘুমিয়ে থেকে গভীর রাতে ধোনা সহ তার ছেলেরা সুযোগ বুঝে ঘের থেকে মাছ চুরি করে। এঘটনার বহু আলামত রয়েছে। শনিবার গভীর রাতেও তারা মাছ ধরতে এসে অবস্থা বেগতিক দেখে সটকে পড়ে। দেওয়ানীপাড়া গ্রামের মাছচাষী শরিফুল বিশ^াস ও আজহারুল ইসলাম জানান, এলাকার ঘেরগুলোতে চোরচক্র প্রতিনিয়ত হানা দিচ্ছে। মাছ চুরির ফলে ঘের মালিকরা নি:স্ব হচ্ছে। তিনি বলেন, বিলে বড় কোনও ঘের বা বিল-খালে মাছ না থাকার পরও ধোনা এবং তার ছেলেরা প্রতিদিন সকালে বিভিন্ন হাটবাজারে বিপুল পরিমান মাছ বিক্রি করতে নিয়ে যায়। যে কারনে সন্দেহ হচ্ছে-ধোনাসহ তার ছেলেরা ঘেরগুলো থেকে মাছ চুরি করছে। ইতোপূর্বে ধোনা ও তার ছেলে মাছ চুরিকালে ধরা পড়ে।
এবিষয়ে ধোনা মন্ডল ও তার ছেলে নীলকন্ঠ মন্ডল মাছ চুরির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা পরিবারের সকলে পেশাদার মৎস্যজীবী। প্রতি রাতে দু’টো নৌকা নিয়ে আমরা ৪ ভাই এবং বাবা বিলের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত সরকারি খালে মাছ ধরতে যায়। এখান থেকে যে মাছ পাই তার কিছু বিক্রি করি এবং কিছু নিজেদের টপ ঘেরে ছেড়ে দিই। একটা মহল আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করছে।
তবে, তাদের এই বক্তব্য মিথ্যা দাবী করে ঘের মালিক খোরশেদ মাহমুদ বলেন, সরকারি খালে তেমন কোনও মাছ নেই। ধোনা ও তার ছেলেরা খালে মাছ ধরার অযুহাত দিয়ে বিলে আাসে আর সুযোগ পেলেই অন্যের ঘের থেকে মাছ ধরে। এরমধ্যে ছোট মাছগুলো তাদের ছোট্ট টপ ঘেরে ছেড়ে দেয় এবং বড় মাছগুলো বাজারে বিক্রি করে। এঘটনায় তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে, মাছ চুরির ঘটনায় অতিষ্ট ঘের ব্যবসায়ী দিদার মোড়ল রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) মাছ চুরির অভিযোগে ধোনা ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে তালা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
The post চোরের উৎপাতে খরাইল বিলের মৎস্য খামারীরা অতিষ্ট appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2YuOqVD
No comments:
Post a Comment