প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে উদ্দেশ্য করে অমার্জিত ও অসৌজন্যতামূলক ভাষা ব্যবহারের জেরে- তীব্র প্রতিবাদ ও সমালোচনার মুখে নত শিরে ক্ষমা প্রার্থনা করলেও মতিভ্রম কাটেনি কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার। ‘অনিচ্ছাকৃত’ যে ভুলের জন্য তাদের এই ক্ষমা প্রার্থনা, ইচ্ছাকৃতভাবে তা এখনও বহাল রেখে পত্রিকাটির কর্তৃপক্ষ পরিষ্কারভাবে জানান দিলো যে, তাদের ভ্রম সংশোধনির বার্তা ছিল প্রহসনমূলক মিথ্যাচার।
তবে সবচেয়ে দুঃখের বিষয়টি হলো, যারা নিজেরাই চীনের খয়রাতির বোঝা বয়ে চলছে, তাদেরই মিডিয়া ‘খয়রাতি’ তকমাজুড়ে সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের আত্মসম্মানে এই আঘাত করলো!
লিংক: আনন্দবাজারের অনলাইন ভার্সনে বাংলাদেশ সমৃক্ত সেই সমালোচিত প্রতিবেদন।
গত ২০ জুন আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘লাদাখের পরে ঢাকাকে পাশে টানছে বেইজিং’- শীর্ষক এক প্রতিবেদনের শুরুতেই ‘বাণিজ্যিক লগ্নি আর খয়রাতির সাহায্য ছড়িয়ে বাংলাদেশকে পাশে পাওয়ার চেষ্টা চীনের নতুন নয়’ বলে মন্তব্য করা হয়। এই ধৃষ্ট মন্তব্যের বিরুদ্ধে সমন্বিতভাবে তীব্র প্রতিবাদ জানায় আবাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো। এক পর্যায়ে এই ইস্যুতে গর্জে ওঠে পুরো দেশ। তবে আঘাত পেলেও প্রকৃত বন্ধুর মতই মৌনতায় চরম ধৈর্য্য ও সহনশীলতার প্রকাশ ঘটায় বাংলাদেশ সরকার।
তীব্র সমালোচনার মুখে এক পর্যায়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে প্রতিবেদনটি সম্পর্কে ‘ভ্রম সংশোধনি’ প্রকাশ করে আনপ্নদবাজার পত্রিকা। এতে বলা হয়, ‘লাদাখের পরে ঢাকাকে পাশে টানছে বেজিং’ শীর্ষক খবরে খয়রাতি শব্দের ব্যবহারে অনেক পাঠক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। পত্রিকা কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থী।’

কিন্তু বুধবার (২৪ জুন) পত্রিকাটির অনলাইন ভার্সনে চোখ বুলাতেই দেখা যায়, ক্ষমা চাইলেও এখন অবধি তাদের অনলাইন ভার্সনে সেই সমালোচিত প্রতিবেদনটি অসংশোধিত ভাবেই বিদ্যমান। অর্থাৎ ‘খয়রাতি’ মনোভাব থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি পত্রিকাটি। আর তাতেই, ক্ষমা প্রার্থনা প্রসঙ্গে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে পাঠক-মনে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছে, তাহলে কি এ ক্ষমা চাওয়া কেবলই লোক দেখানো? অনিচ্ছাকৃত ভুল বললেও কেন তারা এ শব্দের পরিবর্তন আনছে না?
আনন্দবাজার ‘খয়রাতি’ শব্দের ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চাইলেও ‘নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা’ এই বিষয়টির ব্যাখ্যা দেয়নি। অর্থাৎ ঢাকার যে দুজন প্রতিনিধি রয়েছেন তারা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সে বিষয়ে কথা বলেনি কলকাতার এই পত্রিকাটি।
গত ২১ জুন আনন্দবাজার পত্রিকার বাংলাদেশ প্রতিনিধি কুদ্দুস আফ্রাদ এই রিপোর্টের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমি স্পষ্ট করে জানাতে চাই, এ রিপোর্ট আমার লেখা নয়। আমি নিজে এ রিপোর্টের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। রিপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের প্রতিক্রিয়ার কথা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
পরে ডিজিটাল ভার্সনের অঞ্জন রায়ও একই কথা জানান। কিন্তু আনন্দবাজার সে বিষয়ে বক্তব্য দেয়নি- অর্থাৎ এটি ডেস্ক রিপোর্ট কি না তা স্পষ্ট করেনি।
প্রথম দিকে এই সমালোচিত ইস্যুটি কেবল মাত্র আনন্দবাজার পত্রিকার দায়বদ্ধতা বিবেচনা করা হলেও, এখন এ ক্ষেত্রে দেশটির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে মানুষ। বাংলাদেশের একাধিক কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ বলছেন, বিষয়টি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে জটিলতা সৃষ্টির সম্ভাবনাকে উস্কে দিচ্ছে আর তৃতীয় কোনো পক্ষ সেটার ফায়দা লুটার চেষ্টা করতে পারে।
The post ভ্রম সংশোধনের বার্তা দিয়েও মতিভ্রষ্ট আনন্দবাজার appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2CDf6bN
No comments:
Post a Comment