আহসান হাবিব, আশাশুনি: আশাশুনিতে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলেছে। সারা দেশের ন্যায় জেলার সকল পর্যায়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা করোনার প্রকোপ নিয়ে যখন হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। ঠিক তখনই আশাশুনি হাসপাতালসহ উপজেলা প্রশাসনের করোনা ভাইরাস নিয়ে তেমন কোন পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হতে দেখা যাচ্ছে না। এপর্যন্ত করোনা উপসর্গ বা করোনা আক্রান্ত হয়ে একের পর এক করোনা পজেটিভ রোগির খবর আসার পরও মানুষের মধ্যে নেই সচেতনা এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণে একে বারেই গড়িমশি শুরু হয়েছে। গত বছর আশাশুনি উপজেলায় ৪১জন করোনা পজেটিভ হয়েছিল।
যার অধিকাংশই ভিন্ন জেলা থেকে আক্রান্ত হয়ে আশাশুনিতে এসেছিল। সেসময় করোনায় মারা যায় মাত্র ৩ জন। এ হিসেব আশাশুনি হাসপাতালে যথারীতি ছিল এবং তাদেরকে কঠোরভাবে হোম কোয়ারিন্টিন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টিন বা হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ২য় ঢেউয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা ও ভারত থেকে রোগিদের আগমনের মধ্যদিয়ে আশাশুনিতে করোনা রোগির আবির্ভাব ঘটে। ২য় ধাপে আশাশুনিতে এ পর্যন্ত সরকারি হিসেবে (হাসপাতাল) ৩৮জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। ২৪ মে একদিনে ৬ জন করোনা পজেটিভ হয়েছে। তখন ছিল রোগির সংখ্যা ২৩জন (২য় ধাপ)। এরপর ৫দিনে আরও ৫জনের করোনা পজেটিভ এসেছিল। এ পর্যন্ত সর্বমোট (১ম ও ২য় ধাপ) ৭৯জন করোনা পজেটিভ এসেছে। সর্বশেষ ২ জুন ৪ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য ২য় ধাপে করোনায় কোন মৃত্যু হয়েছে এমন কোন তথ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। উপজেলার দক্ষিণ চাপড়া গ্রামে বাশারত হোসেন (৫৭), গুনাকরকাটি গ্রামের আব্দুল আলিম (৬০), গোদাড়া আল মাদানি দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক আব্দুল মজিদ করোনা পজিটিভ হয়ে ইন্তেকাল করেছেন। এছাড়া খরিয়াটি গ্রামের উজ্জল চৌকিদারের মা পার্বতী রানী রাহা (৬০), উত্তর চাপড়া গ্রামের বাক্কার (৪৫) করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। বুধহাটা ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জি: আ. ব. ম মোছাদ্দেক জানান, চাপড়ার বাশারত করোনা আক্রান্ত হয়ে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়, উত্তর চাপড়ার আবু বক্কার শতভাগ করোনা উপসর্গ নিয়ে ইন্তেকাল করেছেন।
কুল্যা ইউপি চেয়ারম্যান হারুন চৌদুরী জানান, গুনাকরকাটি গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম করোনায় আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। সে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে সনদ রয়েছে। আ’লীগ নেতা ডা: মোশাররফ হোসেন জানান, খরিয়াটির পার্বতী রানী রাহা করোনা আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা হাসপাতাল ও পরে তালা হাসপাতালে যায়। ৩০ মে মারা গেলে তার শেষকৃত্যে গ্রামের মানুষ অংশ নেয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি ও তার সন্তানসহ ২/১ জন গভীর রাতে সমাধির ব্যবস্থা করেন।
এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সুদেষ্ণা সরকার, সেনেটারী ইন্সপেক্টর জিএম গোলাম মোস্তফা ও পরিসংখ্যান বিদ আব্দুল খালেক জানান, গত বছর ৩জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিল। এবছর কেউ মারা গিয়েছে এমন কোন তথ্য তাদের কাছে নেই। করোনার ছোবল নিয়ে সচেতন মানুষ যখন নিতান্ত অসহায় হয়ে পড়েছেন। যখন প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের অধিকতর সচেতনতার সাথে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যথেষ্ট ভূমিকা গ্রহনের কথা, তখন করোনা আক্রান্তের সরেজমিন পরিস্থিতি উপলব্ধি এবং আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকলে এলাকা বা বাড়ি লকডাউন, ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। তখন হাসপাতালে সঠিত তথ্য না থাকায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে এলাকার সচেতন মহল।
The post আশাশুনিতে করোনায় মৃত্যু-৫: আক্রান্ত ৭৯, তথ্য নেই কর্তৃপক্ষের appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3g7M6sL
No comments:
Post a Comment