আমেরিকায় করোনার তাণ্ডব এখনো চলছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এবং শত শত মানুষ মৃত্যুবরণ করছেন। করোনা আমেরিকায় মহামারি হিসাবে দেখা দিয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আমেরিকায় ৯ লাখ ৫৬ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং প্রায় ৫৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রিকভারী করে বাসায় ফিরেছে ১ লাখ ২ হাজার মানুষ। অনেক বিশেষজ্ঞ অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন, আমেরিকায় করোনায় মানুষ মৃত্যুর সকল রেকর্ড ছড়িয়ে যাবে।
এ দিকে নিউইয়র্ক স্টেটে ২ লাখ ৮৮ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গিয়েছেন প্রায় ২২ হাজার মানুষ। তবে নিউইয়র্ক স্টেটে গত ২৪ ঘন্টায় ৪৩৭ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
নিউইয়র্ক সিটির গভর্নর এন্ড্রু কুমো তার নিয়মিত বিফ্রিং এ জানান, নিউইয়র্ক সিটি এখনো রিওপেন করার কোনো সম্ভাবনা নেই। নিউইয়র্ক সিটিতে আগামী ১৫ মে পর্যন্ত লকডাউন চলবে। অন্যদিকে গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আরও ৪ জন বাংলাদেশির প্রাণহানি ঘটেছে।
সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত আমেনিকায় করোনায় ১৯৯ জন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। যে সব বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন তারা হলেন- নিউইয়র্কের সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পারফর্মিং আর্টস-এর (বিপা)সহ সভাপতি বাবলী নেওয়াজ করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৫ এপ্রিল ভোরে কুইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। (ইন্না লিল্লাহি… রাজিউন)। বিপার শিক্ষিকা এ্যানি ফেরদৌস জানান, বাবলী নেওয়াজ দীর্ঘ দিন থেকে ডায়ালাইসিস করতেন। গত ২৩ এপ্রিল তিনি তার জ্যামাইকার বাসায় জ্বরে আক্রান্ত হন। ঐ রাতেই তিনি বমি করা শুরু করেন এবং শ্বাস কষ্ট শুরু হলে তার মেয়েরাই এ্যাম্বুলেন্স কল করেন। এ্যাম্বুলেন্স এসে তাকে কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি গত ২৫ এপ্রিল শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬১ বছর। মৃত্যুকালে তিনি দুই মেয়ে মুন মুন নেওয়াজ, তৃণা নেওয়াজ, এক নাতনিসহ আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন। এ্যানি ফেরদৌস আরো জানান, তিনি কয়েক বছর আগে স্বামী হারিয়েছেন। দুই মেয়েকে নিয়েই ছিলো তার পৃথিবী। মেয়ে মুনমুনকে বিয়ে দিয়েছে। তৃণারও বিয়ে ঠিক হয়েছে। এ বছর বিয়ে হবার কথা। দু:খজনক বিষয় হচ্ছে আমরা এই দু:সময়ে তাদের জন্য কিছু করতে পারছি না। এমন কি শান্ত্বনা জানানোর জন্যও যেতে পারছি না। এর থেকে কষ্টের আর কী হতে পারে!কম্যুনিটির অত্যন্ত পরিচিত মুখ এবং যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর এইচ মিয়ার বাবা মহিউদ্দিন নিউইয়র্কের এলেমহার্স্ট হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি… রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬০ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, সন্তানসহ আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন।
জানা গেছে, মরহুম মহিউদ্দিন কিছু দিন আগে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানেই তিনি করোনায় আক্রান্ত হন এবং গত ২৫ এপ্রিল সকালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, মহিউদ্দিনের দেশের বাড়ি পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার পুকুনিয়া গ্রামে। তার মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদসহ সকল নেতাকর্মীরা শোক জানিয়েছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।নিউইয়র্ক প্রবাসী ফরিদ আহমেদ ছাইদুল গত ২৫ এপ্রিল ভোরে নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহে… রাজিউন)। তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সে হার্টএ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ২৭ বছর। মৃত্যুকালে তিনি বাবা- মা- ১ ভাইসহ আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন।
জানা গেছে, ছাইদুল প্রায় ৬ মাস আগে বাংলাদেশে গিয়েছিলেন এবং বিয়ে করে এসেছিলেন। আমেরিকায় নিজের কনে আনার আগেই নিজেই চলে গেলেন পরপারে। তার মৃত্যুতে বিয়ানীবাজার সমিতির সভাপতি মকবুল রহিম চুনই এবং সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান রুহেলসহ কার্যকরি কমিটির সকল সদস্য শোক প্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
কুমিল্লা সোসাইটি অব ইউএসএ’র কার্যকরি কমিটির সাবেক সদস্য মিজানুর রহমান করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ এপ্রিল রাত ১০টা ৩০ মিনিটে জেকোবি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৫৩ বছর। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন কুমিল্লা সোসাইটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সকল কার্যকরি সদস্য।
সূত্রঃ ঠিকানা
The post আমেরিকায় আরও ৪ বাংলাদেশিসহ মৃত্যু ১৯৯ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2KCyR41
No comments:
Post a Comment