Saturday, July 31, 2021

করোনায় বিধ্বস্ত সাতক্ষীরা বিসিকের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো https://ift.tt/eA8V8J

আব্দুস সামাদ: লকডাউনে শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা, পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল পরিবহনে অসুবিধা, উৎপাদিত পন্যের বাজার মূল্য না থাকা ক্ষতির মুখে পড়েছে সাতক্ষীরা বিসিকের ব্যবসায়ীরা। কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে পণ্য উৎপাদন করে বাজারজাত করতে না পারায় দিন দিন এক ক্ষতি আরও বাড়ছে। এদিকে পণ্য বিক্রয় করতে না পেরে আর্থিক সংকটে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রমিকদের বেতন-ভাতাও পরিশোধ করতে পারছে না ঠিক সময়ে। ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছে এসব প্রতিষ্ঠানের কয়েক শ’ শ্রমিক।
সাতক্ষীরা বিসিক কার্যালয় থেকে জানা যায়, সাতক্ষীরা শহরের অদূরে বেতনা নদীর তীরে বিনেরপোতা নামক স্থানে ১৯৮৬ সালে ১৫.৭৫ একর জমির উপর ৯৬টি প্লট নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বিসিক শিল্পনগরী। এতে ২৮টি শিল্প স্থাপনা থাকলেও বর্তমানে চালু রয়েছে ২৪টি শিল্প কারখানা। এসব প্রতিষ্ঠানে পুরুষ ও নারী মিলিয়ে শ্রমিক রয়েছে এক হাজার এক শ’। প্রতিষ্ঠানগুলোতে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫৩ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে উৎপাদন হয়েছে ৭৫ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, করোনাকালীন সময়ে নানা সদস্যায় সাতক্ষীরা বিসিক শিল্পনগরীতে উৎপাদন কমেছে ৫০ শতাংশ। পূর্বে প্রতি মাসে ১০-১২ কোটি টাকার পণ্য উৎপাদন হলেও সেটি এখন কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র চার কোটিতে।
সাতক্ষীরা বিসিক শিল্প নগরীতে শিল্প স্থাপনার মধ্যে রয়েছে দুই টি মাছ প্রক্রিয়াজাত ইউনিট, মৎস্য হ্যাচারী, দুগ্ধ শিতলীকরণ, বরফ কারখানা, প্লাউড ইন্ডাজস্ট্রিজ, বেকারি, প্লাস্টিক ইন্ডাজস্ট্রিজ, লবন ফ্যাক্টরী, ভাস্কর্য ফ্যাক্টরী, ভেটেনারী ওষুধ ফ্যাক্টরী, ইনকিউবেটর ফ্যাক্টরী, ওয়েল্ডিং ফ্যাক্টরী, সেলাই মেশিং এর যন্ত্রাংশ ফ্যাক্টরী ও হস্ত শিল্পসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে বছরে কোটি কোটি টাকার পণ্য উৎপাদন হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠান পন্য উৎপাদন করতে পারলেও, লকডাউনের কারণে বাজারজাত করা যাচ্ছে না। এতে মালামাল গোডাউনে থেকে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। অনেকে আবার বলছেন, পণ্য উৎপাদনে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে বাজারে পণ্যের দাম তার চেয়ে অনেক কম।
তবে নতুন উদ্যোক্তারা বলেছেন, ২০২০-২১ অর্থ বছরে এখান থেকে উৎপাদন হয়েছে ৭৫ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা পণ্য। নতুন উদ্যোক্তাদের চাহিদার প্রেক্ষিতে বিসিক শিল্পনগরী এরিয়া বৃদ্ধি করে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হলে এ উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে।
তাদের দাবী, প্রায় ৩৫ বছরের পুরাতন সাতক্ষীরা বিসিক শিল্পনগরী সে সময়ের কার জন্য ঠিক থাকলেও এখন নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। চাহিদা বাড়ছে প্লটের। কিন্তু নতুনদের চাহিদার তুলনায় প্লট নেই। তাই বিসিক শিল্পনগরীর প্লট বৃদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি। এতে উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি কর্মসংস্থান হবে বহু মানুষের।
বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মেসার্স রনি প্লাইউড ইন্ডাষ্ট্রির সত্ত¡াধিকারী জিএম নুরুল ইসলাম রনি বলেন, করোনায় সাতক্ষীরা বিসিকের ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। পণ্য উৎপাদন করে তা বাজারজাত করা যাচ্ছে না। পণ্য গোডাউনে থেকে পঁচে যাচ্ছে। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠাতে পারবে না ব্যবসায়ীরা।
তিনি আরও বলেন, আমার ফ্যাক্টারীতে একটি মুরগীর বাচ্চা উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ১৫ টাকা। বাজারে বিক্রয় করতে গেলে দাম পাচ্ছি মাত্র ৫ টাকা। প্রতি পিসে লোকসান হচ্ছে ১০ টাকা। এভাবে আর কত দিন লোকসান গুনবো। এসময় তিনি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
এ ব্যাপারে বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক গোলাম সাকলাইন বলেন, লকডাউনের কারণে কিছু প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে উৎপাদন কিছুটা কমে ক্ষতির মুখে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। স্বাভাবিক হয়ে উঠতে সময় লাগবে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ৪% সুদে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার।

The post করোনায় বিধ্বস্ত সাতক্ষীরা বিসিকের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3fi9PXC

শ্রাবণের বৃষ্টিতে ঝাউডাঙ্গায় যৌবনহারা বেতনানদী কচুরিপানার দখলে https://ift.tt/eA8V8J

মনিরুল ইসলাম মনি: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নে ভূমি দস্যুদের বেপরোয়া দখল ও দীর্ঘদিন খনন না করায় এক সময়ের প্রমত্তা বেতনানদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। এরমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে নদীর জোয়ার-ভাটা। ফলে সাতক্ষীরার চিরচেনা বেতনানদী এখন কচুরিপানা দখলে নিয়েছে। তবে নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান, হয়ত আর নদী খনন হবে না! বরং দ্রæত কচুরিপানাগুলি কেটে পরিবেশ দূষণমুক্ত ও জলাবদ্ধতা নিরসন করার জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন জানান।
এদিকে গত কয়েক বছর যাবত জমাট কচুরিপানার মধ্যে বিভিন্ন এলাকার ময়লা-আবর্জনা ফেলায় দূষিত হয়ে উঠেছে ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী এলাকার পরিবেশ। এছাড়া স¤প্রতি কয়েক দিনের বৃষ্টিতে যৌবনহারা বেতনা নদীর পানি উপচে ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের অধিকাংশ আবাসিক এলাকা, ফসলের মাঠ, মাছের ঘেরসহ বিভিন্ন স্থান প্লাবিত হওয়ায় স্থানীয় পরিবেশবাদী সচেতন মহল পুনরায় দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টির আশংকা প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, দীর্ঘদিন নদী খনন না করায় একদিকে এলাকার পরিবেশের ভারসম্য নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে সৃষ্টি হচ্ছে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা। তারা আরো বলেন, দীর্ঘদিন যাবত বেতনা নদী বাচাঁও আন্দোলন কমিটির নেতৃবৃন্দ এলাকার পরিবেশ রক্ষায় এবং দূষিত পানি থেকে মুক্তি, উপচে পড়া পানিতে ভেসে যাওয়া মাছের ঘের, ফসলী জমি রক্ষায় অবিলম্বে ভূমি দস্যুদের কবল থেকে রক্ষা, নদীকে জমা পলি অপসারণ, কচুরিপানা উচ্ছেদ ও নদীতে জোয়ারভাটায় টিআরএম পদ্ধতি চালু করার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন আন্দোলন করলেও সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এখন ভয়াবহ দূষিত পরিবেশে বসবাস করতে হচ্ছে তীরবর্তী গ্রামবাসীদের। এসব মহলের প্রতিনিধিরা তাদের দাবি করে জানান, অতি দ্রæত বেতনা নদী খনন করা না হলে দেশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে সময়ের প্রমত্তা এই নদীটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কলারোয়া পৌরসদরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা বিনেরপোতা হয়ে দেশের পুর্ব-দক্ষিণে বুধহাটা বড়দলের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কপোতাক্ষ নদে মিলিত হয়েছে বেতনা নদী। ২৫-৩০ বছর আগে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা নদী পথে ব্যবসা-বানিজ্যের জন্য এ বেতনা নদী দিয়ে যাতায়াত করতো। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম নদী বন্দর গড়ে উঠেছিলো ঝাউডাঙ্গা, কলারোয়া, সাতক্ষীরা, পাটকেলঘাটা, তালাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে। এছাড়া উপকুলবর্তী উপজেলাগুলো থেকে পাইকারী ব্যাবসায়ীরা বড় বড় নৌকা যোগে বেতনা নদী দিয়ে মালামাল নিয়ে কেনা-বেচা করতে আসত। সে সময় বেতনা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে নদী বন্দর গড়ে উঠায় এলাকার সাধারণ মানুষের কর্ম সংস্থানের সৃষ্টি হয়েছিলো। কিন্তু কালের আবর্তে আজ সেই বেতনা নদীতে পলি জমে ও ভূমি দস্যুদের অবৈধ দখলের কারণে জোয়ার-ভাটাহীন মরা খালে পরিণত হয়েছে। আর নদীতে ফেলা ময়লা-আবর্জনা ও কচুরিপানা পচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে নষ্ট হচ্ছে ঝাউডাঙ্গার পরিবেশ অন্যদিকে প্রতি নিয়ত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখিন হচ্ছে সাতক্ষীরা জেলা। নদীর তীরবর্তী বাসিন্দা ইউনিয়নের হাচিমপুর গ্রামের কৃষক মহিতোষ ঘোষ জানান, গত ১৫-১৬ বছর যাবত নদী পুন:খনন করার দাবিতে রাজপথে আন্দোলন হয়েছে কিন্তু আজও নদী খননের ব্যবস্থা হয়নি। ফলে পলি মাটি জমে নাব্যতা হারিয়ে বেতনা নদী ক্রমশ সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। আর এ সুযোগে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময়ে নদীর মাঝে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, নদী তীরবর্তী চরে অবৈধ দখল করে পাকা বাড়ি-ঘর, দোকান নির্মাণ করছে। এছাড়া চর দখল করে তারা অন্যের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার ফলে বেতনা নদী এখন সংকুচিত হয়ে ¯্রােতহীন (জোয়ার-ভাটা বন্ধ) হয়ে পড়েছে। এদিকে ¯্রােত না থাকায় নদীতে শেওলা, কচুরীপানা জমে থাকা এবং নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের মল, আবর্জনাসহ বিভিন্ন নষ্ট জিনিস ফেলায় সেগুলি পচে দূর্গন্ধ চড়াচ্ছে যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তিনি দ্রæত নদী খনন করে আবারো প্রবাহ ফিরিয়ে এনে জলাবদ্ধতা দূর করা এবং অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করার জোর দাবি জানান।
কলারোয়ার বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক জহিরুল ইসলাম শাহিন জানান, জীব বৈচিত্রসহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ও দখলদারমুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান। এসময় তিনি, সাতক্ষীরা জেলায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, পরিবেশ দূষণরোধ, জলাবদ্ধতা নিরসন, কৃষি ও ব্যবসায়িক উন্নয়নের জন্য বেতনা নদী খনন করে নদী বাঁচাতে সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

The post শ্রাবণের বৃষ্টিতে ঝাউডাঙ্গায় যৌবনহারা বেতনানদী কচুরিপানার দখলে appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3zWc7Ud

জলাবদ্ধতা নিরসনে ফেসবুকে জনসাধারণের মতামত চাইলেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, ভূক্তভোগীরা শতশত মানুষের সাড়া https://ift.tt/eA8V8J

পত্রদূত ডেস্ক: স¤প্রতি অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে জেলার নেটপাটা অপসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। এ লক্ষে সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়েছে। এদিকে জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে নিরসনে করণীয় নির্ধারণে জেলাবাসীর মতামত চেয়ে সন্ধ্যা ৬টায় ফেসবুকে স্টাট্যাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। এতে রাত ১১টা পর্যন্ত ৩৪৫টি কমেন্ট করা হয়েছে। এসময়ের মধ্যে সেয়ার হয়েছে ৭০ টি এবং লাইক করা হয়েছে প্রায় ১২ শ’ মানুষ। নি¤েœ জেলা প্রশাসকের আহবানসহ কিছু কমেন্ট তুলে ধরা হলো:
“প্রিয় জেলাবাসী, সালাম নিবেন। স¤প্রতি অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমুহ কাজ করে যাচ্ছে, এ ব্যাপারে আপনাদের সকলের সহযোগিতা কাম্য। জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে নিরসনে করণীয় নির্ধারণে আপনাদের মতামত আহবান করছি। আপনাদের সুচিন্তিত মতামত নিয়ে জেলার মাননীয় সংসদ সদস্যগণ, সকল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারি দপ্তরসমূহ এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞগণের সাথে পরামর্শ করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
জেলা প্রশাসকের এমন আহŸানে ‘আবু সিদ্দিক’ নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন-এর জন্য অপরিকল্পিত মৎস্য ঘেরই দায়ী। তাই পরিকল্পিত মৎস্য ঘের ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই বলে মনে হয়।
গোলাম ফারুক লিখেছেন: আপনার এ মহতী উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
জলাবদ্ধতা হলো দীর্ঘদিনের চলমান সমস্যা…। যার একমাত্র স্থায়ী সমাধান হলো রাস্তার পাশ/সীমানার পাশ দিয়ে পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা।
সেক্ষেত্রে জিও/এনজিও’র আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক ফান্ড গঠন করে এবং জনমত গড়ে তুলে এর সমাধান সম্ভব বলে মনে করি।
শেখ জি রসুল লিখেছেন: শ্যামনগরের খাল সমুহের নেটপাটা অপসারণসহ খালের সাথে কালভার্টের সংযোজনগুলোর পানি সরার উপযোগী করলে দুর্লভ অনেকাংশে কমবে।
পবিত্র সাহা লিখেছেন: সাতক্ষীরা জেলায় অনেক জেলা প্রশাসক মহোদয়গণ এসেছেন চলেও গেছেন। কিন্তু কেউ কখনও আমজনতার আপদকালীন কথা শুনা ও মতামত উপস্থাপন করার মতো সুযোগ সৃষ্টি করেছেন কি না মনে পড়ে না। আপনার হাত ধরে অবহেলিত জেলাবাসি অনেক দূর এগিয়ে যাবে। মহামারি কোভিড-১৯ সময়ে পরিবার পরিজন নিয়ে সুস্থ থাকেন, ভাল থাকেন। এ কামনায়।
ইসতিয়াক সোহাগ লিখেছেন: সদর লাবসা ইউনিয়নের রাজনগর, মুকুন্দপুর, দেবনগর গ্রামের পানি রাজনগর খাল দিয়ে প্রাণসায়ের খাল দিয়ে বের হয় কিন্তু অসাধু ঘের ব্যবসায়ীরা পানি নিষ্কাশনের একমাত্র ক্যানেলটি ও ব্ন্ধ করে দিছে। এমতাবস্থায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার সদয় অনুরোধ জানাচ্ছি।
তাপস কুমার ঢালী লিখেছেন: আশাশুনি থানার জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাওয়ার প্রধান উপায় নদীর সাথে সংযোগ খালগুলো মুক্ত রাখা। তাও সম্ভব না হলে প্রশাসনের উপস্থিতিতে প্রতিটি বন্যার পরে এক সপ্তাহ ধরে খালগুলো দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা। এই খালগুলো মুক্ত রাখলে আশাশুনিতে জলাবদ্ধতা বলে কিছুই থাকবে না।
শাহিনা কাজল লিখেছেন: সাতক্ষীরা জেলার অধিকাংশ খালে বৈধ (নেতা, নেত্রী, কিংবা ইজারাকৃত) নেটপাটা দেয়া আছে। সেগুলোর ক্ষেত্রে প্রশাসন কি ভূমিকা নিবে সেটা দেখার জন্য অপেক্ষায় আছি।
অম্বিক মন্ডল লিকেছেন: তালা উপজেলার ১০নং খেশরা ইউনিয়নের শালিখা নদীর মাধ্যমে তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়ন, জালালপুর ইউনিয়ন, মাগুরা ইউনিয়ন, খলিষখালী ইউনিয়ন, আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়ন, দরগাপুর ইউনিয়নের সকল পানি কপোতাক্ষ নদীতে নিষ্কাশিত হয়। শালিকা গেটের ১৬ টি পাটের মধ্যে ৩ টি পাট ভাঙা থাকায় জোয়ারে নদীর পানি উঠে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পাট তিনটি নতুন করে স্থাপন করা হলে বিস্তীর্ণ এলাকার পানি ভালোভাবে নিষ্কাশিত হবে এবং বন্যার হাত থেকে লক্ষাধিক মানুষের জান ও মাল রক্ষা পাবে।জেলা প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ একান্ত কাম্য।
এভাবে শতশত মানুষ তাদের মন্তব্য ও পরামর্শ দিয়েছেন জেলা প্রশাসককে। তারা জলাবদ্ধতার স্থায়ী নিরসনে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

The post জলাবদ্ধতা নিরসনে ফেসবুকে জনসাধারণের মতামত চাইলেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, ভূক্তভোগীরা শতশত মানুষের সাড়া appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3C3LpuM

জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সাতক্ষীরা জেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা https://ift.tt/3C1IGC0

জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সাতক্ষীরা জেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। গত ১৯ জুলাই ২০২১ ইং তারিখ অনুমোদিত সেলিম রেজা মুকুল সভাপতি এবং মোঃ আসাদুজ্জামানকে সাধারন সম্পাদক করে সাতক্ষীরা জেলা গঠিত কমিটিতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও মিথ্যা আশ্রয়ের কারণে সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সকল কার্যক্রম বিলুপ্ত ঘোষণা করা করা হয়। সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহজাহান মোল্লা স্বাক্ষারিত গণ মাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস এ তথ্যা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞিপ্তিতে বলা হয়, এই কমিটিতে গত ২৯/০৫/২০২০ ইং তারিখে মৃত্যু বরণ করা সাংবাদিক দৈনিক অনির্বাণ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মৃত বুলু আহমেদকে ১নং কার্যকরী সদস্য বানিয়ে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করায় জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা মোতাবেক সাতক্ষীরা জেলা কমিটিকে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সভাপতি মুহম্মদ আলতাফ হোসেনের আদেশ ও অনুমতি সাপেক্ষে ভারপ্রাপ্ত ‘ সভাপতি শাহজাহান মোল্লা কর্তৃক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই বার্তা আদেশ প্রদান করা হলো। প্রেস বিজ্ঞপ্তি

The post জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সাতক্ষীরা জেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3C0kIai

আশাশুনিতে ১৩তম দিনে ৪২০ জনকে টিকা প্রদান https://ift.tt/eA8V8J

আশাশুনি ব্যুরো: সারাদেশের ন্যায় আশাশুনি উপজেলায় পুনরায় করোনা টিকাদান শুরুর ১৩তম দিনে ৪২০জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। শনিবার আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকাদান কার্যক্রমে পরিচালনা করা হয়। সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত টিকা প্রদান করা হয়। পূর্বে নিবন্ধনকৃত ও চলতি নিবন্ধনকরা ব্যক্তিরা টিকা গ্রহণ করেন। এনিয়ে ২য় দফায় ১৩তম দিনে ৪২০ জনসহ আশাশুনিতে সর্বমোট ৩৩২০ জন টিকা গ্রহণ করলেন।

The post আশাশুনিতে ১৩তম দিনে ৪২০ জনকে টিকা প্রদান appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3lcaVbc

আশাশুনির মরিচ্চাপ বেইলী ব্রিজে ফের ভাঙন https://ift.tt/eA8V8J

আশাশুনি ব্যুরো: আশাশুনির মরিচ্চাপ নদীর উপর নির্মিত বেইলী ব্রিজের পাটাতন (পাত) ভেঙে আবারও যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার পাটাতনের নাটবল্ট খুলে একটি পাত ভেঙে নিচে চেপে যায়। চাপড়া-আশাশুনি নদীর উপর নির্মিত বেইলী ব্রিজটি বহু দিনের পুরাতন। প্রথমবার ব্রিজটি নষ্ট হয়ে গেলে দীর্ঘদিন চরম ঝুঁকিতে ছিল। দীর্ঘদিনের ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজটি পুনরায় নতুন করে সংস্কার কাজ করা হলে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু না! তারপর থেকে কয়েক মাসের ব্যবধানে নিয়মিত পাটাতন ভেঙে বসে যাওয়ার ঘটনা ঘটে আসছে। এনিয়ে পত্রপত্রিকায় ও টিভিতে খবর প্রকাশের পর সপ্তাহ খানের ধরে তালি-পট্টি দেওয়ার কাজ করে আবার চলাচলের ব্যবস্থা করা হলেও বেশি দিন সেটি টিকে থাকেনা। ৩ মাস পূর্বে ব্রীজের একটি বড় অংশ ভেঙে ইটভর্তি ট্রাক নদীর চরে পড়ে গেলে ব্রিজের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায় এবং সেটি রীতিমত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় এবং ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেটি ভাইরাল হয়। তখন পুনরায় সংস্কার কাজ করা হলে আবার চালু হয় ব্রিজটি। কিন্তু না, বরাবরের মতো ৩ মাসের বেশি টিকে থাকলোনা ব্রিজটি। এবার ব্রিজের একটি পাতের নাটবোল্ট ভেঙে কয়েক ফুট নিচু হয়ে গেছে। ফলে ব্রিজের উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।

 

 

The post আশাশুনির মরিচ্চাপ বেইলী ব্রিজে ফের ভাঙন appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3rJdNh1

আশাশুনিতে পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতায় বেহুন্দি জাল বিনষ্ট: ১০ হাজার টাকা জরিমানা https://ift.tt/eA8V8J

আশাশুনি সংবাদদাতা: আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের বামনডাঙ্গা খালে অবৈধভাবে নেটপাটা দিয়ে পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতার অপরাধে ১০ হাজার টাকা জরিমানাসহ দুটি বেহুন্দি জাল বিনষ্ট করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন সুলতানা এ নেটপাটা অপসারণের অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান পরিচালনাকালে মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইনে ১৯৫০ এর (৫-১) ধারায় বামনডাঙ্গা গ্রামের গহর গাজীর ছেলে মো: আব্দুল জব্বার মধু গাজীকে খালে অবৈধ নেটপাটা দেওয়ার অপরাধে ২০০০ টাকা ও আরসাদ সানার ছেলে রবিউল সানাকে ৫০০০ টাকা, তুয়ারডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মজিদ সরদারের ছেলে শহিদুল ইসলামকে ৩০০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, বড়দল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম মোল্যা, ভূমি অফিসের (নাজির) সুগত অধিকারী ও আনসার ব্যাটালিয়ন উপস্থিত ছিলেন।

The post আশাশুনিতে পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতায় বেহুন্দি জাল বিনষ্ট: ১০ হাজার টাকা জরিমানা appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3xfuRwi

সাতক্ষীরায় নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল বিক্রির অভিযোগে ২ ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা https://ift.tt/eA8V8J

পত্রদূত ডেস্ক: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে অবৈধ নেটপাটা, কারেন্ট জাল অপসারণ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযানের অংশ হিসেবে শনিবার সকালে সাতক্ষীরা বড় বাজারে কারেন্ট জাল বিক্রির অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন, কাটিয়া এলাকার আব্দুল মাজেদের পুত্র আজিজার রহমান, গড়েরকান্দা গ্রামের মুনছুর আলীর পুত্র আলতাফ হোসেন। এসময় মৎস্য সংরক্ষণ আইনের ৫ ধারায় দুইজনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানে সদর উপজেলা নিবার্হী অফিসার ফাতেমা তুজ জোহরার নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন, সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন, উপ-পরিদর্শক রবীন্দ্র নাথ মন্ডল প্রমুখ।

The post সাতক্ষীরায় নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল বিক্রির অভিযোগে ২ ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3A1z7kR

কলারোয়া পৌরসভায় ডেঙ্গু মশা নিধনে অভিযান শুরু https://ift.tt/eA8V8J

সংবাদদাতা: সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভায় ডেঙ্গু মশা নিধন অভিযান শুরু হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টার দিকে কলারোয়া পৌরসভার মেয়র প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বুলবুল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পৌর বাজারের বিভিন্ন ড্রেন ও ময়লা স্থান এবং জমে থাকা পানিতে ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এসময় তার সাথে ছিলেন-কলারোয়া পৌরসভার কাউন্সিলর দিতি খাতুন, উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল আলম মল্লিক রবি, আওয়ামী লীগনেতা আবু বক্কর ছিদ্দিক লাভলু, মন্টু প্রমুখ। পৌর কাউন্সিলর দিতি খাতুন বলেন-মেয়র পৌরবাসীকে ডেঙ্গু মশার কবল থেকে রক্ষা করতে এই ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে কার্যক্রম শুরু করেছেন।

The post কলারোয়া পৌরসভায় ডেঙ্গু মশা নিধনে অভিযান শুরু appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2Wx7f9y

হত্যাবার্ষিকীতে সিপিবি নেতৃবৃন্দ: রতন সেনকে হত্যা করে তাঁর আদর্শ নস্যাৎ করা যায়নি https://ift.tt/eA8V8J

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সাবেক কেন্দ্রীয় সম্পাদকমÐলীর সদস্য ও খুলনা জেলা সভাপতি, আজীবন বিপ্লবী, ত্যাগী, মার্কসবাদী পÐিত, মানবদরদী, রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু কমরেড রতন সেনের ২৯তম হত্যাবার্ষিকী উপলক্ষে শোক র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৩১ জুলাই দলের জেলা ও মহানগরীর উদ্যোগে সকাল ৯টায় হত্যাস্থল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কে ডি ঘোষ রোডে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ কমরেড রতন সেন স্কয়ারে পুষ্পমাল্য অর্পণ, সংক্ষিপ্ত সমাবেশ এবং শোক র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময়ে ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, রতন সেন পাবলিক লাইব্রেরী, উদীচী, খেলাঘর আসরসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এছাড়াও সন্ধ্যা ৬:৩০টায় দলীয় কার্যালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভা ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচিসমূহে সভাপতিত্ব করেন সিপিবি’র কেন্দ্রীয় সদস্য ও খুলনা জেলা সভাপতি ডা: মনোজ দাশ। এ সময়ে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সদস্য এস এ রশীদ, অরুণা চৌধুরী, জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. রুহুল আমিন, বাসদের খুলনা জেলা সমন্বয়কারী জনার্দন দত্ত নাণ্টু, সিপিবি মহানগর সাধারণ সম্পাদক এড. মো: বাবুল হাওলাদার, সিপিবি নেতা সুতপা বেদজ্ঞ, মিজানুর রহমান বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা নিতাই পাল, কিংশুক রায়, নীরজ রায়, মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল, যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলা সভাপতি এড. নিত্যানন্দ ঢালী, সহ-সভাপতি অধ্যাপক বিজয় মৈত্র, মহানগর সভাপতি আফজাল হোসেন রাজু, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রিয়াসাত আলী রিয়াজ, সদর থানা সভাপতি শাহ মো: ওয়াহিদুজ্জামান জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক রামপ্রসাদ রায়, যুবনেতা শেখ রাজিব, ছাত্র ইউনিয়নের জেলা সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র সৌরভ, সিপিবি নারীসেল নেত্রী শাহিনা আক্তার, টিইউসি নেতা কামরুল ইসলাম খোকন, ইনসাব নেতা মো: রুহুল আমিন প্রমুখ। এছাড়াও বটিয়াঘাটায় উপজেলা সভাপতি সমীরণ গোলদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অশোক সরকারের পরিচালনায়, দাকোপ উপজেলার চালনায় উপজেলা সাধারণ সম্পাদক কিশোর রায়ের সভাপতিত্বে ও প্রধান শিক্ষক মহিবুর রহমান ও সমীরণ রায়ের পরিচালনায়, বাজুয়ায় দাকোপ উপজেলা সভাপতি অধ্যাপক অসিত সরকারের সভাপতিত্বে, পাইকগাছায় সিপিবি’র প্রবীণ নেতা গুলজার রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এড. প্রশান্ত মÐলের পরিচালনায়, কয়রায় আফতাব উদ্দিন হাওলাদারের সভাপতিত্বে ও গাজী আলাউদ্দিনের পরিচালনায়, রূপসায় প্রকৌশলী সুখেন রায়ের সভাপতিত্বে ও উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিমের পরিচালনায়, দিঘলিয়ায় মণ¥থ রায়ের সভাপতিত্বে এবং ফুলতলায় উপজেলা সভাপতি দিদারুল আলমের সভাপতিত্বে ও গাজী আফজালের পরিচালনায় কমরেড রতন সেন স্মরণে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসব কর্মসূচিতে কমরেড রতন সেনের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান এবং খুলনার বিভিন্ন এলাকায় সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে কমরেড রতন সেনকে স্মরণ করা হয়।
কর্মসূচিসমূহে নেতৃবৃন্দ বলেন, কমরেড রতন সেনকে হত্যা করে তাঁর গৃহীত সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদ তথা মার্কসবাদী আদর্শকে নস্যাৎ করা যায়নি। অকৃতদার, ব্যক্তি অজাতশত্রæ কমরেড রতন সেনকে হত্যা তাঁর রাজনৈতিক আদর্শের উপর আঘাত। লবণ পানিতে চিংড়ি চাষ বিরোধী, ভূমিহীনদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন, সর্বোপরি লুটেরাদের বিরুদ্ধে তাঁর নেতৃত্বে এ অঞ্চলে কমিউনিস্ট পার্টির দৃঢ় অবস্থানের কারণে লুটেরা শ্রেণি তাঁকে হত্যা করে কমিউনিস্ট পার্টিকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু কমরেড রতন সেনের উত্তরসূরিরা তাঁর রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ এবং মার্কসবাদী রাজনীতির চূড়ান্ত লক্ষ্য সমাজ বিপ্লবের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। প্রেসবিজ্ঞপ্তি

The post হত্যাবার্ষিকীতে সিপিবি নেতৃবৃন্দ: রতন সেনকে হত্যা করে তাঁর আদর্শ নস্যাৎ করা যায়নি appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3C069Dy

তালায় গ্রীষ্মকালে তাপদাহ আর বর্ষাকালে জলাবদ্ধতায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট https://ift.tt/eA8V8J

খাতা-কলমে ৬৪৬ টি গভীর নলকূল, ২২ টি সরকারি পুকুর থাকলেও বাস্তবে ভিন্ন
এসএম বাচ্চু: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমঞ্চালের সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় গ্রীষ্মকালে অনাবৃষ্টির আকাশ হতে প্রবাহিত তাপদাহে শুকিয়ে যায় খাল-বিল-পুকুর। পক্ষান্তরে ১২ মাসের মধ্যে বর্ষাকালের ৩-৪ মাস জলাবদ্ধতার কারণে সুপেয় পানির তীব্র সংকটে চলতে থাকে এই উপজেলায়।
ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ পানির আধারগুলো অনেক দূরে সরে গিয়েছে। এক কলস খাবার পানি সংগ্রহের জন্য নারী ও শিশুরা ছুটে যায় এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে। কোনো কোনো গ্রামে মিষ্টি পানির আধার বলতে আছে দুয়েকটি পুকুর। তবে অধিকাংশ গ্রামে পুকুরও নেই।
এহেন পরিস্থিতিতে সবকিছু মিলিয়ে তালা উপজেলায় সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পানির প্রয়োজন তো অন্য কিছুতে মেটানো সম্ভব নয়। তাই, যেভাবেই হোক সুপেয় পানি সংগ্রহ করতে মরিয়া স্থানীয়রা। আর যারা ক্লান্ত শরীরে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারছেন না,তাদের নগদ টাকার বিনিময়ে কিনতে হচ্ছে খাবার পানি। এভাবে গ্রীষ্মে ও বর্ষাকালে খাবার পানি সংগ্রহে রীতিমত লড়াই করতে হচ্ছে তাদের।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ২২৯টি গ্রামে ২লাখ ৯৯ হাজার ৮২০ জন জনসংখ্যা ছিল। বর্তমান বেসরকারি জরিপ অনুযায়ী এর সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ২৯ হাজার। প্রকৃতপক্ষে শুমারি হলে লোকসংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। এ উপজেলায় পুকুরের সংখ্যা দেওয়া আছে ২,৮৮১টি। এরমধ্য সরকারি পুকুর ২২টি, সরকারিভাবে অগভীর নলকূপের সংখ্যা ২৪ হাজার ৭৬৩টি নলকূপ থাকলেও এর মধ্যে সামান্য কিছু নলকূপে নিরাপদ পানি ঘোষণা করা হয়েছে। আর গভীর নলকূপের সংখ্যা ৬৪৬টি থাকলেও বর্তমানে ওই সমস্ত নিরাপদ পানির উৎস অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে।
প্রয়োজনের তাগিদেই উপজেলা সদরের আশপাশের বাসিন্দারা পানযোগ্য এক কলসি পানির জন্য কয়েক কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ছুটে পানি নিতে তালা সরকারি কলেজ, উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ি সংলগ্ন, তালা মহিলা কলেজ সংলগ্নসহ মাত্র হাতেগোনা কয়েকটি গভীর নলকুপ থেকে পানি নিচ্ছেন। আর বাকি যাদের বাড়ি উপজেলা সদর হতে অনেক দূরে তারা পাশের পুকুর হতে পানি ফিল্টারের মাধ্যমে সংগ্রহ করে প্রয়োজন মেটাচ্ছে।
২০০০ সালের পর থেকে বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা এ উপজেলার স্যানিটেশন ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়ে। ২০০১ সাল থেকে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন তৈরিতে জরিপ অনুযায়ী জনসচেতনতা ও বাস্তবায়নে ২০০৩ সালে শতভাগ অর্জন করায় এক যুগান্তকারী সাফল্য। বর্তমান ২০ বছরের ব্যবধানে সঠিক তদারকি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রচার-প্রচারণা ও লোকবল সঙ্কটে তালার স্যানিটেশন ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে।
এদিকে উপজেলার প্রত্যেকটি বাসা বাড়িতে টিউবওয়েল থাকলেও ২০০৫ সালে নিরাপদ ও অনিরাপদ জরিপে লাল ও সবুজ রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। বর্তমান ওই চিহ্নিত ব্যবস্থা না থাকায় উপজেলার ৮০ ভাগ মানুষ এখনো আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছেন। যার কারণে সম্প্রতি তালার জালালপুরের একই পরিবারের ৮-১০ সদস্য আর্সেনিক আক্রান্ত হয়েছেন।
তালা উপজেলার সর্বত্রই কৃষি কাজের জন্য অতিমাত্রায় সেচ পাম্প দিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানি। ফলে পানির লেয়ার নিচে নেমে যাচ্ছে। এ কারণে গ্রামের অধিকাংশ টিউবওয়ালেই পানি উঠছে না। আর উঠছে তা পানযোগ্য নয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন কাক ডাকা ভোর থেকে উপজেলার মহান্দী, খলিলনগর, নলতা, গোনালি, শাহাপুর, খড়েরডাঙা, শিবপুর, গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দারা কলসি, ড্রাম, বোতল নিয়ে সাইকেল, মোটরসাইকেল ও ভ্যান যোগে ছুটছেন উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসা সামনে, সরকারি কলেজ ও মহিলা কলেজ অভিমুখে।
শুধুমাত্র তালা উপজেলার লোকজন নয়, এখানে পানি নিতে আসছেন সুদূর পাইকগাছা, কপিলমুনি থেকেও। সেখানে গিয়ে মিলছে পানি সংগ্রহ করতে যাওয়া মানুষের লম্বা লাইন। অনেক সময় ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করার পর মিলছে কাক্সিক্ষত পানি।
উপজেলার বালিয়াদহ গ্রামে দেখা যায়, সরকারি পুকুরে বসানো ফিল্টার করা পানি নিতে টিকারামপুর গ্রাম, বাগমারা, চাঁদকাটি, বলরামপুর গ্রাম হতে কয়েক শতাধিক সাধারণ মানুষ পানি নিতে আসছে। তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা।
অপরদিকে সুপেয় পানি সংকটকে কাজে লাগিয়ে উপজেলা সদরে এলাকায় গড়ে ওঠা পানি কোম্পানিতেও ভিড় করছেন স্বচ্ছল পরিবারের লোকজন। কিন্তু সেখানেও চাহিদা অনুযায়ী পানি সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহ, খরা, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এবং বর্ষকালের ৩-৪ মাস জলাবদ্ধতার কারণে এ সঙ্কট ঘনীভূত হচ্ছে। আগামি কয়েক বছরে এ সংকট আরও ব্যাপকতা লাভ করবে। তাই এখন থেকেই বিকল্প পথে মানুষকে সুপেয় পানি সরবরাহে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে। তাছাড়া আমরা গভীর নলকুপ বিভিন্ন স্থানে বসিয়েছি এবং বসানোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোন ভালো ফল পাচ্ছি না।

The post তালায় গ্রীষ্মকালে তাপদাহ আর বর্ষাকালে জলাবদ্ধতায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3j85Hul

তালায় থামছে না বাল্যবিবাহ: প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা https://ift.tt/eA8V8J

পত্রদূত ডেস্ক: ‘একটা শেষ করতে করতে আবারও বাল্যবিবাহের তথ্য। সমস্ত বাল্যবিবাহ মনে হচ্ছে তালায়! অন্য উপজেলাগুলো কত ভালো।’ তালা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা এমন মন্তব্য করেছেন তার নিজ ফেসবুকে। আর ঐ সমস্ত তথ্য দিয়ে আসছে জেলা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি। এবার আরও তিনটা!
প্রতিরোধ কমিটির সাকিব জানান, কোভিড-১৯ এ ঈদ আনন্দ পুষিয়ে নিতে জেলায় অনেক কন্যা শিশুর বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে। জেলায় প্রায় ১২শ’ গ্রাম, তার মধ্যে একই গ্রামের চার কিশোরী। এরা তালা উপজেলার শারসা দাখিল মাদ্রাসার ৭ম, ৮ম ও ৯ম শ্রেণী ছাত্রী। স্কুল ও শিক্ষকদের সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের যোগাযোগ এবং শিক্ষকদের বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে ভূমিকা না থাকায় মাধ্যমিকের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ ছাত্রীর বিয়ে হয়ে যায়। যদিও মহামান্য হাইকোর্ট স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর সরাসরি দায়ী বলে তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য বলেছেন।
যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাড়ি ইউনিয়নের কাজী আবদুল্লাহ। স¤প্রতি এই কাজী তার নিজ কর্ম এলাকা ছেড়ে সাতক্ষীরার শার্শা গ্রামের চার অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদেররকে বিয়ে দিয়েছে যা এলাকাবাসী জানেন।
বর্তমানে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি লকডাউনে এসব ফৌজদারি অপরাধীরা বাল্যবিবাহ করে দেদারচ্ছে ঘরসংসার করছে। এবিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

The post তালায় থামছে না বাল্যবিবাহ: প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3fjpQN4

মুন্সীগঞ্জে জলবদ্ধতা নিরসনে অবৈধ নেটপাটা অপসারণ https://ift.tt/eA8V8J

মুন্সিগঞ্জ (শ্যামনগর) প্রতিনিধি: কয়েক দিনের বৃষ্টিতে উপকূলীয় এলাকায় জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এ জলবদ্ধতা নিরসনে শনিবার দুপুর ১টা থেকে মুন্সীগঞ্জ ইউনিয়নে বিভিন্নে খালে অভিযান চালিয়ে অবৈধ নেটপাটা অপসারণ করে উপজেলা প্রসাশন। জেলা প্রসাশকের নির্দেশনায় শ্যামনগর সহকারী কমিশনার (ভূমি) শহীদুল্লাহ ও মৎস্য কর্মকর্তা তুষার মজুমদারের উপস্থিতে। মুন্সীগঞ্জ ভূমি কর্মকর্তা আয়নুল হক অভিযান চালিয়ে অবৈধ জাল আটক করে। এ অভিযান জলবদ্ধতা নিরসন না হওয়া পযর্ন্ত অব্যাহত থাকবে।

The post মুন্সীগঞ্জে জলবদ্ধতা নিরসনে অবৈধ নেটপাটা অপসারণ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3rJ3dq6

শ্যামনগরে মোবাইলকোর্টে কারেন্টজাল ব্যবসায়ীদের জরিমানা https://ift.tt/eA8V8J

সুন্দরবনাঞ্চল (শ্যামনগর) প্রতিনিধি: শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শনিবার সকালে মোবাইলকোট পরিচালনা করে কারেন্টজাল ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হয়।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে প্রকাশ, নকিপুর বাজারে ১জন ও সোনারমোড় বাজারে ২জন মোট ৩জন কারেন্টজাল ব্যবসায়ীকে মোবাইলকোটে ১২হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং পরবর্তীতে আটককৃত জাল জনসম্মুখে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার তুষার মজুমদার, শ্যামনগর থানা পুলিশ, উপজেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ প্রমুখ।
অপরদিকে উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া খাল, মুন্সিগঞ্জ খাল, শ্যামনগর উপজেলা সদরসহ অন্যান্য স্থানের খালে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ নেটপাটা অপসারণ করা হয়।

The post শ্যামনগরে মোবাইলকোর্টে কারেন্টজাল ব্যবসায়ীদের জরিমানা appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3jbJlIe

কুলিয়ায় নেটপাটা অপসারণ কার্যক্রম শুরু https://ift.tt/eA8V8J

কুলিয়া (দেবহাটা) প্রতিনিধি: দেবহাটার কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান আসাদুল ইসলামের নেতৃত্বে ইউনিয়নের নদী-খালগুলোতে নেটপাটা অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছলিমা আক্তারের নির্দেশনায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য অচিন্ত্য মন্ডল, ভরত সরকার, বিকাশ সরকার, আমিরুল ইসলাম, সদস্যা শ্যামলী রানীসহ গ্রাম পুলিশগণ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় কুলিয়া ইউনিয়নের কুলিয়া বাঁধের মুখ, দত্তডাঙ্গা, নূর্নিখোলা, পুটিমারি, কদমখালি, সুবর্ণবাদ, আনদুলপোতা, টিকেট, ঝিনুকঘাটাসহ কুলিয়া ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সকল খালের মধ্যে থাকা সকল প্রকার কারেন্টজাল, বাঁশের পাটা, নেট ইত্যাদি অপসারণ করা হয়।
এবিষয়ে কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান আসাদুল ইসলাম বলেন, নি¤œচাপের প্রভাবে গত ২৮-২৯ জুলাই দু’দিনের টানা বর্ষণে কুলিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার বিঘা মৎস ঘের, ফসলি জমি ও পুকুর ভেসে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। খালগুলো জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য উন্মুক্ত থাকলেও কালের পরিক্রমায় কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে খালের বুকে অবৈধভাবে নেটপাটা দিয়ে কৃত্রিম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনা মোতাবেক সকল প্রকার কারেন্টজাল, বাঁশের পাটা, নেট ইত্যাদি অপসারণ শুরু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল খালের নেটপাটা অপসারণ করা হবে।

The post কুলিয়ায় নেটপাটা অপসারণ কার্যক্রম শুরু appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3C1B5U0

তালায় চাল ব্যবসায়ী বাবুরালী সানার ইন্তেকাল https://ift.tt/eA8V8J

নিজস্ব প্রতিনিধি: তালার বিশিষ্ট চাল ব্যাবসায়ী উপজেলা ছাত্র সমাজের সহ-সভাপতি মো: রেজাউল ইসলাম সানার ছেলে মো: বাবুরালী সানা (৭৩) আর নেই (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)।
গত শুক্রবার রাত্র অনুমান ১০টার দিকে অসুস্থ্যজনিত কারণে নিজগৃহে মৃত্যুবরণ করেন। সকাল সাড়ে ৯টায় মিনিটে তার নামাজে জানাযা আধ্যাত্মিক সাধক এজাহার আলী স্মৃতি নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্ত¡রে অনুষ্ঠিত হয়।
জানাযা নামাজে উপস্থিত ছিলেন জাতীয়পার্টির তালা উপজেলা সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান সাংবাদিক এসএম নজরুল ইসলাম, জাতীয়পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম আলাউদ্দীন, যুগ্ম- সম্পাদক এসএম জাহাঙ্গীর হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ হাবিবুর রহমান, সাবেক ইউপি সদস্য জাপানেতা সৈয়দ খায়রুল ইসলাম মিঠু, জাতীয় ছাত্রসমাজের সাতক্ষীরা জেলা সাধারণ সম্পাদক এসএম আকরামুল ইসলাম, উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মো: ইউনুস আলী সরদার প্রমুখ।

The post তালায় চাল ব্যবসায়ী বাবুরালী সানার ইন্তেকাল appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3fhdFjT

শতাধিক মানুষের মাঝে খাদ্য সমগ্রী পৌছে দিলো সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগ https://ift.tt/eA8V8J

নিজস্ব প্রতিনিধি: করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সরকার ঘোষিত চলমান কঠোর লকডাউন মধ্যে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় ভ্যান, ইজিবাইক ও রিক্সাচালক এবং পানিবন্ধি শতাধিক মানুষের মাঝে খাদ্য সমগ্রী পৌছে দিয়েছে সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগ। শনিবার দুপুরে শহরের বিভিন্ন সড়কে ও সদর উপজেলার লাবসা, ছয়ঘরিয়া ও তুজুলপুর এলাকায় উক্ত খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন, যুবলীগ নেতা জিএম অয়াহিদ পারভেজ।
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক ও মঈনুল হোসেন নিখিলের পরমর্শে এসব খাদ্য সামগ্রী বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শিমুন শামস, জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়ক জহুরুল হক নান্টু, ২নং যুবলীগের সভাপতি মিঠুন ব্যানার্জী, সাধারন সম্পাদক মাসুদ পারভেজ প্রমুখ। তারা এ সময় জানান, তাদের এই খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।

The post শতাধিক মানুষের মাঝে খাদ্য সমগ্রী পৌছে দিলো সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3feXG5y

বাংলাদেশের জুনায়নাও সেরা টাইমিং পেলেন অলিম্পিকে https://ift.tt/eA8V8J

 

টোকিও অ্যাকুয়াটিকস সেন্টারে বাংলাদেশের দুই সাঁতারুকে উৎসাহ দিতে এসেছিলেন তাকাহিরো তাগুচি। হাতে ছিল লাল-সবুজ পতাকা। যিনি একসময় বাংলাদেশ দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার উপস্থিতিতে বাংলাদেশের আরিফুল ইসলাম ও জুনায়না আহমেদ খারাপ করেননি। দুজনই নিজেদের সেরা টাইমিং পেয়েছেন।

আরিফুল ৫০ মিটার ফ্রি-স্টাইলের হিটে সেরা টাইমিং করেছেন। তেমনি লন্ডন প্রবাসী জুনায়না আহমেদও আগের চেয়ে ভালো টাইমিং করে সাঁতার শেষ করেছেন।

মেয়েদের ৫০ মিটার ফ্রি-স্টাইল হিটে জুনায়না ২৯.৭৮ সেকেন্ড সময় নিয়ে পঞ্চম হয়েছেন। ২০১৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ৩০.৯৬ সেকেন্ড সময় ছিল তার আগের সেরা।

হিটে আট জনের মধ্যে পঞ্চম হয়েছেন জুনায়না। তাজিকিস্তানের আনাস্তাশিয়া ২৯.০৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে হিটে প্রথম হয়েছেন। সব মিলিয়ে ৮১ জনের মধ্যে ৬৮তম বাংলাদেশি এই সাঁতারু।

The post বাংলাদেশের জুনায়নাও সেরা টাইমিং পেলেন অলিম্পিকে appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3zZihD9

৯ মাস পর ফের শুরু কাঁকড়া রফতানি https://ift.tt/eA8V8J

প্রতীকী ছবি

দীর্ঘ ৯ মাস বন্ধ থাকার পর ফের শুরু হলো কাঁকড়া রফতানি। মৎস্য অধিদফতরের উপপরিচালক নিয়াজ উদ্দিন জানান, চীনের দেয়া বেশকিছু শর্ত পূরণের পর  নতুন করে রফতানি শুরু হয়েছে।

নতুন করে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্ত করেছে চীন। এর মধ্যে চীনে পাঠানো হয়েছে কাঁকড়া ও কুচিয়ার ৩৪টি চালান।

মৎস্য অধিদফতরের উপপরিচালক জানান, রফতানি করা কাঁকড়া ও কুচিয়ায় সীসা ও ক্যাডমিয়াম ধরা পড়ার পর ২০২০ সালের জুনে চীন কিছু শর্ত আরোপ করে। তখন মৎস্য অধিদফতরের ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট ইস্যু করার মাধ্যমে রফতানি সচল করা হয়। পরে সেপ্টেম্বরে এক রফতানিকারক জাল সার্টিফিকেট দিয়ে ধরা পড়ার পর রফতানি আবার বন্ধ হয়। বিএম ট্রেডার্সকে এ জন্য কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

ঢাকার সাভার, চট্টগ্রাম ও খুলনায় মৎস্য অধিদফতরের তিনটি ল্যাবরেটরিতে নতুন প্রযুক্তি স্থাপনের মাধ্যমে ১২/১৩টি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর এখন রফতানির সার্টিফিকেট দেয়া হচ্ছে। আগে চীনের এ ধরনের টেস্ট রিকোয়ারমেন্ট ছিল না। ফলে কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ছাড়াই যে কেউ চায়নায় কাঁকড়া ও কুচিয়া রফতানি করতে পারতেন।

তাদের নতুন শর্ত অনুযায়ী, ইংরেজি ও চীনা ভাষায় এখন সার্টিফিকেট দিতে হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান বলেন, চীনের পক্ষ থেকে কিছু সার্টিফিকেট চাওয়া হয়েছিল। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে এখন আর রফতানিতে বাধা নেই।

করোনা মহামারির শুরুর দিকেই চীনে কাঁকড়া রফতানির বাজারে ধস নামে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ডলারের কাঁকড়া রফতানি হলেও পরের বছর ২০২০-২০২১ অর্থবছরে তা ১২ মিলিয়ন ডলারে নামে।

হংকং, মিয়ানমার, ভিয়েতনাম, জাপান, মালয়েশিয়াসহ আরও কিছু দেশে কাঁকড়া রফতানি হলেও মূল বাজার চীন।

চীনের বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রভাবে সামগ্রিক রফতানি ৫০ শতাংশ কমে যায়।

The post ৯ মাস পর ফের শুরু কাঁকড়া রফতানি appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3ff32xZ

লকডাউনে থেমে আছে সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ https://ift.tt/eA8V8J

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ হত্যার এক বছরেও পুরো ঘটনা যেন রহস্যাবৃত। এর মাঝে ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দিয়েছে র‍্যাব। যদিও লকডাউনের কারণে, থমকে গেছে বাদিপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ। আর তাতেই সাক্ষিদের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত মামলার বাদি সিনহা রাশেদের বোন।

চৌকস সেনা কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। মাঝপথে যেমন চাকুরিজীবন শেষ করেছেন, জীবনের ইতিও টেনেছেন অপ্রত্যাশিতভাবে অকালে। পঞ্জিকায় একটি বছর বদলে গেছে মেজর সিনহার মৃত্যুদিনের। তবু তার মৃত্যু যেনো রহসাবৃত।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্টে মেজর সিনহা নিহত হন পুলিশের গুলিতে। এরপর জল ঘোলা হয় অনেক। তৎকালীন টেকনাফের ওসি প্রদীপ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকতসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন সিনহার বোন। পরে গ্রেফতার করা হয় ঘটনার সময় এপিবিএন এর তিন সদস্য ও পুলিশের তিন সোর্সকেও। কয়েকমাস তদন্ত শেষে ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেয় তদন্তকারী সংস্থা র‍্যাব। যার মধ্যে ১২জনই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

গত ২৬ জুলাই বাদীপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ থাকলেও লকডাউনে তা পিছিয়ে যায়। মামলার বাদী অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার বোন এখন শঙ্কায় আছেন, সাক্ষীদের সুরক্ষা নিয়ে।

বাদীপক্ষের আইনজীবীর প্রত্যাশা, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতির উন্নতি হলে, দ্রুততম সময়ে হবে বিচার। যদিও সার্বিক বিবেচনায় অসন্তোষ আসামিপক্ষের।

পুলিশের গুলিতে মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহা নিহতের পর বেশ কয়েকমাস, পুলিশ কিংবা অন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী অপরাধীদের অতর্কিত আক্রমনের ঘটনা ঘটেনি। আত্মরক্ষার্থে করা গুলিতে নিহত হয়নি কোনও সন্ত্রাসীও। তবে সম্প্রতি আবারও ঘটেছে এমন বেশ কয়েকটি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা।

সিনহা হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত ১৫ আসামি হলেন—ওসি প্রদীপ কুমার দাস, পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দ প্রদীপ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল-মামুন, মোহাম্মদ মোস্তফা, সাবেক এএসআই সাগর দেব, সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মা; এপিবিএনের তিন সদস্য— এসআই মোহাম্মদ শাহজাহান, কনস্টেবল মোহাম্মদ রাজীব ও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এবং পুলিশের মামলার তিন সাক্ষী নূরুল আমিন, আয়াজ উদ্দিন ও নিজাম উদ্দিন।

অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের ১২ জন দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামিদের মধ্যে প্রদীপ ও রুবেল শর্মা জবানবন্দি দেননি। তদন্ত কর্মকর্তা ৮৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন।

The post লকডাউনে থেমে আছে সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3j4wKH3

সাতক্ষীরায় করোনা উপসর্গে ৬ জনের মৃত্যু, নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি https://ift.tt/eA8V8J

সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে দুই নারীসহ অরো ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এনিয়ে জেলায় ৩০ জুলাই শুক্রবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৮৫ জন। আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৫৪২ জন।

করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তিরা হলেন, যশোরের শার্শা উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামের মৃত মোঃ রজব আলীর ছেলে রিয়াজুল ইসলাম (৭০), সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁকাল গ্রামের মোঃ আব্দুর রহমানের ছেলে মোঃ আসাদুল ইসলাম (৩৫), একই উপজেলার ইন্দ্রিরা গ্রামের মৃত সত্যেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরীর ছেলে মনোরঞ্জন রায় চৌধুরী (৭৫), পাটকেলঘাটা থানার বড়বিলা গ্রামের মৃত মোঃ রহমতুল্লাহ’র ছেলে মোঃ আব্দুল ওদুদ (৮৫), আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামের মৃত হানিফ মোল্যার ছেলে মোঃ খায়রুল ইসলাম মোল্যা (৬০) ও কালিগঞ্জ উপজেলার উচ্ছেছপাড়া গ্রামের মৃত সেফাত আলীর ছেলে মোঃ আকরাম হোসেন (৬২)।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তিরা গত ১৩ জুলাই হতে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ জুলাই ভোর রাত ৩টা ২৫ মিনিট থেকে বেলা পৌনে ৪টার মধ্যে বিভিন্ন সময়ে তাদের মৃত্যু হয়।

সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, ৩১ জুলাই সকাল পর্যন্ত মোট ১৬৪ জন রোগী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ১০ জন করোনা পজেটিভ ও বাকি ১৫৪ জন সাসপেক্টেড। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ২৪ জন ও সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন ২৫ জন। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে ৮ জন।

সাতক্ষীরা সদর হাসপতালের মেডিকেল অফিসার ও জেলা করোনা বিষয়ক তথ্য কর্মকর্তা ডাঃ জয়ন্ত কুমার সরকার জানান, গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় করোনা উপসর্গে ৬ জন মারা গেছে। শুক্রবারে কোন নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি।

তিনি আরো বলেন, শুক্রবার ৩০ জুলাই পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৫৯৪ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৩৮৮ জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ১ হাজার ১২১ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ২৯ জন। ভর্তি রোগীর মধ্যে সামেক হাসপাতালে ১০ জন ও বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩ জন সহ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ২৩ জন এবং বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছে ৬ জন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ১ হাজার ৯২ জন।

করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ মিলে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪৭ জন। সামেক হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৬৪ জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩জনসহ সরকারি ও বেসরকারি মিলে জেলায় মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২১১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় সুস্থ হয়েছেন ৫৮ জন। জেলায় ৩০ জুলাই পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৮৫ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরো ৫৪২ জন।

The post সাতক্ষীরায় করোনা উপসর্গে ৬ জনের মৃত্যু, নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3BUcuAx

কমেছে মৃত্যু ও শনাক্ত: খুলনা বিভাগে একদিনে মৃত্যু ১৯, শনাক্ত ৫৭১ https://ift.tt/eA8V8J

খুলনা বিভাগে ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা কমেছে। গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে শনাক্ত হয়েছে ৫৭১ জনের।

এর আগে শুক্রবার (৩০জুলাই) বিভাগে ৩৪ জনের মৃত্যু এবং ৭৯৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। শনিবার (৩১ জুলাই) বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ জন করে মৃত্যু হয়েছে কুষ্টিয়ায়। বাকিদের মধ্যে খুলনায় ৪ জন, যশোর ও ঝিনাইদহে ৩ জন করে; চুয়াডাঙ্গায় ২ জন, বাগেরহাট ও মেহেরপুরে একজন করে মারা গেছেন।

খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায় গত বছরের ১৯ মার্চ। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে আজ সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৯২ হাজার ৯৩২ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ৩৮৮ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৮ হাজার ৭৮৬ জন।

The post কমেছে মৃত্যু ও শনাক্ত: খুলনা বিভাগে একদিনে মৃত্যু ১৯, শনাক্ত ৫৭১ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2V6jKsp

হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় আরেক মামলা https://ift.tt/eA8V8J

আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্লবী থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে র‌্যাব বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন আইনের ৩৫, ৫৫ ও ৭৩ ধারায় মামলাটি করা হয়। এই নিয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তারের পর গতকাল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাকে তিনদিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়।

পল্লবী থানা ও র‌্যাব-৪ সূত্র জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে র‌্যাব-৪ এর একজন ইন্সপেক্টর বাদী হয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। একই দিন সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান থানায় র‌্যাব বাদী হয়ে আরও দুটি মামলা করেছে। এর মধ্যে একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ‘চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি সংগঠন করে সমালোচনা মুখে পড়েন হেলেনা জাহাঙ্গীর। এরপর তাকে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপকমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় তার গুলশানের ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাসায় দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়। আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর রাত দেড়টা থেকে চারটা পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর-১১ নম্বরের এ ব্লকের তিন নম্বর রোডে জয়যাত্রা টেলিভিশনের কার্যালয়ে অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে বিভিন্ন অবৈধ সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

The post হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় আরেক মামলা appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3ffXFOX

ভুঁইফোঁড় সংগঠনের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ https://ift.tt/eA8V8J

পত্রদূত ডেস্ক: লীগযুক্ত ভুঁইফোঁড় সংগঠনের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। প্রথমে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করবে দলটি। এরপর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করবে সংশ্লিষ্টদের। এ ছাড়া দলের যেসব নেতা এসব সংগঠনের উপদেষ্টা বা নেপথ্যে থেকে পরিচালনার সঙ্গে জড়িত তাদের মৌখিকভাবে সতর্ক করা হবে। ভুঁইফোঁড় সংগঠনগুলোর সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না দলটি। তাই প্রশাসনিক সহায়তা ও দলীয় নেতাদের সতর্ক করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, এক আওয়ামী লীগে এখন শত শত লীগ। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা এসব ভুঁইফোঁড় সংগঠন এখন আওয়ামী লীগের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তবে এসব সংগঠন আওয়ামী লীগ নেতাদের হাত ধরেই গড়ে ওঠা। এখন অন্তত এমন দুই শতাধিক সংগঠন নামের আগে-পরে লীগ, বঙ্গবন্ধুর পরিবার ও মুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে চলছে। ক্ষমতাসীন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রীরাও অংশ নিয়ে থাকেন এসব সংগঠনের অনুষ্ঠানে। কিছু সংগঠন আছে রাজধানীতে ইস্যুকেন্দ্রিক আলোচনায় টিভি ক্যামেরার সমাবেশ ঘটানোই তাদের কাজ।

এসব আয়োজনে আওয়ামী লীগের সব বড় বড় নেতাও অংশ নেন। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান একটি অনলাইনকে বলেন, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের বাইরে যারা লীগ যুক্ত করে স্বার্থ হাসিলে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা আসলে অবৈধ। আমাদের দলের কিছু নেতা তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যান। সম্প্রতি দলের সাধারণ সম্পাদক ওইসব সংগঠন নিয়ে স্পষ্ট মন্তব্য করেছেন।

আশা করি দলের কোনো নেতা ভবিষ্যতে ভুঁইফোঁড় সংগঠনের অনুষ্ঠানে যাবেন না। ভুঁইফোঁড় সংগঠন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্বীকৃত সংগঠনের বাইরে কোনো মনগড়া বা হঠাৎ গজিয়ে ওঠা সংগঠনকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার কোনো সুযোগ নেই। দলের গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী আওয়ামী লীগের রয়েছে সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং বিভিন্ন উপ-কমিটি। দল ক্ষমতায় থাকলে নানান সুবিধাভোগী শ্রেণি এবং বসন্তের কোকিলরা এ ধরনের চেষ্টায় লিপ্ত হয়, যুক্ত হয় নানান আগাছা-পরগাছা।

দলীয় সভাপতির ঘোষণা অনুযায়ী দলের মধ্যে কারও প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে এ ধরনের কাজে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলের নাম ভাঙিয়ে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে প্রশাসনিক ব্যবস্থা। নেতাদের অনেকে বলছেন, এসব সংগঠনের হাত ধরে সুবিধা আদায়ের জন্য ভিন্নপন্থি নেতারাও এখন আওয়ামী লীগে। দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে ছবি তোলাই তাদের কাজ। এসব ছবি দিয়ে তারা প্রতারণার জাল বিছিয়ে থাকেন।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, ভুঁইফোঁড় সংগঠনগুলোর সঙ্গে আওয়ামী লীগের অতীতে কোনো সম্পর্ক ছিল না, এখনো নাই, ভবিষ্যতেও হবে না। রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের জন্য আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে বিতর্ক তৈরি করছে। এদের বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে সতর্ক নজর দেয়া হচ্ছে। ভুঁইফোঁড়দের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই। কারণ তারা আমাদের সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার মধ্যে নেই। তবে তাদেরকে প্রশ্রয় না দিলে তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।

এ ধরনের সংগঠনের সঙ্গে যদি কেউ রাজনৈতিক সংশ্রব না রাখে তাহলে তারা উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। তবে ভুঁইফোঁড় সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম দিয়ে যারা রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলছেন তারা আসলে আওয়ামী লীগের কেউ নন। তারা সবাই অবৈধভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

আমরা এ ধরনের সংগঠনের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছি। পুলিশকে অবহিত করেছি। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও রয়েছে ভুঁইফোঁড় সংগঠনের তৎপরতা। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে স্বীকৃত আটটি সহযোগী ও তিনটি ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন রয়েছে। সহযোগী সংগঠনগুলো হচ্ছে- যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, তাঁতী লীগ ও আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ। ভ্রাতৃপ্রতিম তিনটি সংগঠন হলো- ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ ও মহিলা শ্রমিক লীগ। এর বাইরে আওয়ামী লীগ হাইকমান্ডের মৌখিক সম্মতিতে কর্মসূচি পালন করছে আওয়ামী মোটরচালক লীগ, হকার্স লীগ ও বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ। আর বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অনুমতি নিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম করে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদ। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে এমন কয়েকটি সংগঠনের কার্যকলাপ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার জের ধরে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এক সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, দলের সহযোগী সংগঠন ছাড়া কেউ নামের সঙ্গে ‘লীগ’ শব্দ যোগ করতে পারবে না।

লীগযুক্ত ভুঁইফোঁড় সংগঠন: বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত যেসব লীগযুক্ত ভুঁইফোঁড় সংগঠনের ব্যানার-পোস্টার দেখা যায়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ ইলেকট্রিক লীগ, নাপিত লীগ, ফকির লীগ, প্রবীণ লীগ, বাউল লীগ, গাড়িচালক লীগ, স্বাধীনতা লীগ, তরুণ জনতা লীগ, তরুণ লীগ, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ, জাতীয় শিশু-কিশোর লীগ, বাংলাদেশ আওয়ামী তৃণমূল লীগ, আওয়ামী সোনার বাংলা লীগ, আওয়ামী বাস্তুহারা কল্যাণ সমিতি, আওয়ামী সমবায় লীগ, আওয়ামী শিশু লীগ, আওয়ামী প্রচার লীগ, আওয়ামী ছিন্নমূল হকার্স লীগ, আওয়ামী তরুণ লীগ, আওয়ামী রিকশা মালিক শ্রমিক ঐক্য লীগ, আওয়ামী পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা লীগ, আওয়ামী নৌকার মাঝি লীগ, আওয়ামী ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী লীগ, আওয়ামী যুব সাংস্কৃতিক জোট, আওয়ামী পর্যটন লীগ, বঙ্গবন্ধু বাস্তুহারা লীগ, বঙ্গবন্ধু আদর্শ পরিষদ, বাংলাদেশ আওয়ামী অনলাইন লীগ, বিশ্ব আওয়ামী অনলাইন লীগ, বঙ্গবন্ধু লেখক লীগ, জননেত্রী পরিষদ, দেশরতœ পরিষদ, নৌকা সমর্থক গোষ্ঠী, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, আওয়ামী হকার্স ফেডারেশন, বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারা বাস্তবায়ন পরিষদ, বঙ্গমাতা পরিষদ, ডিজিটাল আওয়ামী প্রজন্ম লীগ, মুক্তিযোদ্ধা তরুণ লীগ, বঙ্গবন্ধু গ্রাম ডাক্তার পরিষদ, জননেত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় লীগ, আমরা মুজিব হবো, নৌকার নতুন প্রজন্ম, ডিজিটাল ছাত্রলীগ, একুশে আগস্টের ঘাতক নির্মূল কমিটি, সজীব ওয়াজেদ জয় পরিষদ, বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরিষদ, দেশীয় চিকিৎসক লীগ, আমরা নৌকা প্রজন্ম, নৌকার নতুন প্রজন্ম, বঙ্গবন্ধু একাডেমি, বঙ্গবন্ধু নাগরিক সংহতি পরিষদ, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা গবেষণা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু শিশু একাডেমি, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু যুব পরিষদ, বঙ্গবন্ধু জাতীয় লেখক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগ, আমরা মুজিব সেনা, রাসেল মেমোরিয়াল একাডেমি, শেখ রাসেল শিশু পরিষদ, শেখ রাসেল শিশু সংসদ, ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া ফাউন্ডেশন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী, পঁচাত্তরের ঘাতক নির্মূল কমিটি, মুক্তিযুদ্ধ ও গণমুক্তি আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবার কল্যাণ পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা জনতা লীগ, আওয়ামী শিশু-যুবক সাংস্কৃতিক জোট, চেতনায় মুজিব, দেশীয় চিকিৎসক লীগ, ছিন্নমূল মৎস্যজীবী লীগ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লীগ, বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারা বাস্তবায়ন পরিষদ, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ, জনসেবা লীগ, নবীন লীগসহ বাহারি নামের নানা সংগঠন।

The post ভুঁইফোঁড় সংগঠনের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3fhxpUh

জয়যাত্রা টিভিতে ৮০০ সাংবাদিক: নিয়েছেন মাথাপিছু ১ লাখ টাকা! https://ift.tt/eA8V8J

পত্রদূত ডেস্ক: হেলেনা জাহাঙ্গীর। আলোচিত এক নাম। সম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ নামে একটি নাম সর্বস্ব সংগঠনের ব্যানারে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এনিয়ে হইচই শুরু হয় সর্বত্র। বহিষ্কার করা হয় আওয়ামী লীগ থেকে। এরপরই একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে তার নানা অপকর্মের কাহিনী। ধূর্ত প্রকৃতির হেলেনা জাহাঙ্গীর যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে নানা ছুতোয় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা আদায় করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব অভিযান চালায় তার বাসায়। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে তার বাসা থেকে বিভিন্ন নথিপত্র উদ্ধার করেছে র‌্যাব। সেখানে ১৪টি প্রতিষ্ঠানের প্যাড পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, হেলেনা ফাউন্ডেশন, হেলেনা শিশু কল্যাণ সংঘ, হেলেনা সেবা সংঘ, হেলেনা আলোর দিশারী ফুটবল ক্লাব, হেলেনা সারগাম একাডেমি, হেলেনা চক্ষু হাসপাতাল ও জয়যাত্রা অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডটকমসহ আরও একাধিক প্রতিষ্ঠানের প্যাড। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাব তার কাছে জানতে চেয়েছিল ওই প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়গুলো কোথায়?

তিনি তার কোনো উত্তর দিতে পারেননি। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম ভাঙিয়ে তিনি সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে বিভিন্ন কাজের তদবির করে আর্থিক সুবিধা নিতেন। সূত্র জানায়, হেলেনার সচিবালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তরে যাতায়াত ছিল অবাধে। সচিবালয়ে যাতায়াত করতে পাস পাওয়ার ব্যাপারে কোনো অসুবিধা হতো না। বিশেষ করে গণপূর্ত অধিদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে তার বিশেষ সম্পর্ক ছিল। ওদিকে গতকাল বিকালে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করেছে র‌্যাব। ডিজিটাল প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে এ মামলায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন গুলশান থানার ওসি (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলাম। এরআগে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব জানিয়েছিল অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানির অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করা হবে। এ ছাড়া তার বাসা থেকে মাদক, বিদেশি মুদ্রা ও বন্যপ্রাণীর চামড়া জব্দের ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে মামলা করা হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও তথ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন ছাড়া জয়যাত্রা নামক টেলিভিশন চ্যানেল পরিচালনার কারণে আলাদা টেলিযোগাযোগ আইনে পৃথক পাঁচটি মামলা করা হবে।

র‌্যাব জানায়, প্রতারণার জাল বিস্তার করার জন্য হেলেনা খুলে বসেন জয়যাত্রা নামে একটি আইপি টেলিভিশন। ওই টেলিভিশনের কোনো অনুমতি ছিল না বলে র‌্যাব জানিয়েছে। রাজধানীর পল্লবীতে দুইটি ফ্ল্যাটে তিনি ওই টেলিভিশন খুলেছিলেন। টেলিভিশনের জন্য হেলেনা ২০ লাখ টাকা খরচ করে স্টুডিও নির্মাণ করেছিলেন। মিডিয়া কেন্দ্রিক প্রভাব ও প্রতিপত্তির কারণে টেলিভিশন তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

সূত্র জানায়, ঢাকাসহ সারা দেশে ওই ভুয়া আইপি টিভির জন্য তিনি ৮০০ সাংবাদিক নিয়োগ দিয়েছেন। শুধু ঢাকা শহরে তার সাংবাদিকের সংখ্যা ২০০ জন। বিভাগীয় শহরগুলোতে ২৫ জন করে ওই টিভির সাংবাদিক তিনি নিয়োগ দিয়েছেন। এ ছাড়াও জেলা ও থানা কেন্দ্রিক ওই টিভির সাংবাদিক নিয়োগ দিয়েছিলেন। তাদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। হেলেনা র‌্যাবের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, জেলা কেন্দ্রিক সাংবাদিক নিয়োগে তিনি ১ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। তাদের তিনি একটি করে জয়যাত্রা টিভির আইডি কার্ড দিয়েছেন।

২ বছরের চুক্তিতে ওই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের কোনো মাসিক বেতন দেয়া হবে না বলে জানিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও তার ভুয়া টিভিতে লোকজন জয়েন করেছে। কেন এত টাকা দিয়ে তার টিভিতে জয়েন করেছে তার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে র‌্যাব। যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের নাম ও ঠিকানা এবং এরা মূলত ওই এলাকায় কী কাজ করেন তা বের করার জন্য কাজ করছে র‌্যাব। সূত্র জানায়, জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হেলেনা। আর ওই টিভি পরিচালনা করতো শাহদাৎ ও সুমন নামে দুই ব্যক্তি। হেলেনা গ্রেপ্তার হওয়ার পর তারা পলাতক রয়েছে।

সূত্র জানায়, হেলেনা যেখানেইযেতো তার সঙ্গে আরও দুইটি গাড়ি তাকে এসকর্ট করে নিয়ে যেতো। গাড়িতে লাগানো থাকতো ছোট ফ্ল্যাগ।
এ ছাড়াও হেলেনা যেখানেই যেতেন তার সঙ্গে ২ জন সুন্দরী থাকতো। তারা হেলেনার ব্যক্তিগত সহকারী এবং নিজেদের জয়যাত্রা টেলিভিশনের সাংবাদিক পরিচয় দিতেন। তারাও গাঢাকা দিয়েছেন। সূত্র জানায়, রাত হলেই হেলেনা ঢাকার বিভিন্ন ক্লাব পাড়ায় বিচরণ করতেন। ঢাকার একাধিক ক্লাবে তিনি প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম ভাঙিয়ে যাতায়াত করতেন।

গুলশান অল কমিউনিটি ক্লাব, বিজিএমইএ অ্যাপারেল ক্লাব, বোট ক্লাব, গুলশান লেডিস ক্লাব, উত্তরা লেডিস ক্লাব, গুলশান ক্লাব ও বারিধারা ক্লাবে যাতায়াত করতেন। হেলেনা নিজেকে সিস্টার হেলেনা পরিচিত করার জন্য ঢাকা এবং কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন স্থানে পোস্টারিং করেছে। এজন্য তার লোকজন তাকে সিস্টার বলে ডাকতেন। কেউ তাকে ম্যাডাম বা স্যার বললে তিনি তাদের সিস্টার বলে ডাকার আদেশ দিতেন বলে র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন। সূত্র জানান, বাংলার মাদার তেরেসা উপাধি পাওয়ার জন্য হেলেনা নিজের উদ্যোগে গড়ে তুলেছিলেন হেলেনা ফাউন্ডেশন। তবে সেটি প্যাড সর্বস্ব। সেটির কোনো কার্যালয় ছিল না। কুমিল্লার একাধিক এলাকায় ৪ বার গরিব লোকদের আর্থিক সহযোগিতার ফটোসেশন করে তিনি এলাকার বিভিন্ন স্থানে পোস্টারিং করেছেন।

সূত্র জানায়, হেলেনা মূলত আলোচনায় আসেন চাকরিজীবী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ঘোষণা দিয়ে পোস্টার ছাপানোর পর। পোস্টারে মাহবুব মনির নামে এক ব্যক্তিকে সাধারণ সম্পাদক পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে। মনির এখন লাপাত্তা। তাকে খুঁজছে র‌্যাব। চাকরিজীবী লীগ এ সদস্যপদ দেয়ার কথা বলে অনেকের কাছ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগেই তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

হেলেনা জাহাঙ্গীরের জন্ম কুমিল্লা জেলায়। বাবা মরহুম আবদুল হক শরীফ ছিলেন জাহাজের ক্যাপ্টেন। সেই সুবাদে তিনি বেড়ে উঠেছেন চট্টগ্রামের হালিশহরের মাদারবাড়ী সদরঘাট এলাকায়। লেখাপড়া করেছেন স্থানীয় কৃষ্ণচূড়া স্কুলে। চাকরিসূত্রে তার বাবা রাশিয়ায় চলে গেলে মায়ের সঙ্গে গ্রামে ফিরে যান হেলেনা। ১৯৯০ সালে বিয়ে করেন ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে। তারপর থেকে তার নামের পাশে যুক্ত হয় জাহাঙ্গীর। বর্তমানে তিনি হেলেনা জাহাঙ্গীর নামেই পরিচিত। বিয়ের কয়েক বছর পর মিরপুরে ভাড়া করা দুটি রুম নিয়ে শুরু করেন কাপড়ের ব্যবসা।

অল্প কিছুদিনের মধ্যে দেখেন সফলতার মুখ। ব্যবসার কারণে পরিচিত হতে থাকেন সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তির সঙ্গে। ব্যবসায়িক সফলতা বিস্তারের পাশপাশি তার বিচরণ হয় রাজনৈতিক অঙ্গনে। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে কম সময়ের ভেতরে ব্যবসায়িক প্ল্যাটফরমে পরিচিত হয়ে যান। জয়যাত্রা গ্রুপের ব্যানারে একে একে গড়ে তোলেন একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আওয়ামী লীগের উপ-কমিটিতেও জায়গা করে নেন। ভিন্ন ভিন্ন বিতর্কে জড়িয়ে হেলেনা প্রায়ই আলোচনায় উঠে এসেছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বিতর্কে জড়িয়ে শেষ রক্ষা হয়নি।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে সোয়া ১২টা। গুলশানের ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাড়ি। এই বাড়িতেই থাকতেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসুর নেতৃত্বে র‌্যাব সদস্যরা হেলেনার বাসায় প্রবেশ করে রাত ৮টায়। দীর্ঘ প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযান শেষে রাত সোয়া ১২টায় র‌্যাব তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও হরিণের চামড়া উদ্ধার করে। আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব সদর দপ্তরে নেয়া হয়। পরে রাতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের মালিকানাধীন জয়যাত্রা টেলিভিশনের অফিসে অভিযান চালায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অভিযানের পর র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে হেলেনার বাসায় অভিযান চালিয়েছেন তারা। আর গতকাল র‌্যাবের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফরম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অস্ট্রিয়া প্রবাসী আলোচিত সেফুদার সঙ্গে হেলেনার লেনদেন ছিল।

সেফুদা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের মাধ্যমে দেশবাসীর নজর কাড়তে চেষ্টা করেন। তাকে তিনি নাতি ডাকতেন। সেফুদার সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল এবং তার সঙ্গে লেনদেনও ছিল। তিনি বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীর অপকৌশলের মাধ্যমে নিজেকে ‘মাদার তেরেসা’, ‘পল্লীমাতা’, ‘প্রবাসীমাতা’ হিসেবে পরিচিতি পেতে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। তার পৃষ্ঠপোষকতায় একটি সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া খেতাবের অপপ্রচার চালাতো। বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গ থেকে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের নামে অর্থ সংগ্রহ করতেন। যা মানবিক সহায়তায় ব্যবহারের চেয়ে খেতাব প্রচার-প্রচারণায় বেশি ব্যবহার করা হতো। হেলেনা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রেখে নিজের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেন। তিনি ১২টি ক্লাবের সদস্যপদে রয়েছেন বলে র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

রাজনৈতিক অঙ্গনে হেলেনা বিতর্ক: রাজনৈতিক অঙ্গনে হেলেনাকে নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। আলোচনা আছে হেলেনা শুধু আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত নয় এর আগে তিনি অন্য দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এসে হেলেনা বলেন, আমি যেকারো সঙ্গেই ছবি তুলতে পারি। এর মানে এই না যে, আমি বিএনপি বা জাতীয় পার্টির রাজনীতি করি। আমি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার রাজনীতি করি।

তবে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ছিলেন হেলেনা। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের দিকে তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন। ২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। আবদুল মতিন খসরু মারা গেলে ওই আসনে মনোনয়নের জন্য দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। তবে মনোনয়ন পাননি।

দল থেকে অব্যাহতি: আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্যপদ থেকে গত রোববার হেলেনা জাহাঙ্গীরকে অব্যাহতি দিয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উপ-কমিটির সদস্য সচিব ও আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ সই করেন। এতে বলা হয়, হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ছিলেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড সংগঠনের নীতিবহির্ভূত হওয়ায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্যপদ হতে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

তিনি উপ-কমিটির সদস্য হয়েছিলেন গত ১৭ই জানুয়ারি। সূত্র জানায়, হেলেনা জাহাঙ্গীর উপ-কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে পারছিলেন না। তার কিছু কিছু কাজ সংগঠনকে বিব্রত করেছে। এ জন্য তাকে উপ-কমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া সম্প্রতি ফেসবুকে নেতা বানানোর ঘোষণা দিয়ে ছবি পোস্ট করে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেন হেলেনা।

ব্যবসায়িক পরিচয়: বিয়ের ৬ বছর পর ১৯৯৬ সালে রাজধানীর মিরপুর ১১-তে একটি ভবনের দুটি ফ্লোর নিয়ে হেলেনা শুরু করেন প্রিন্টিং ও এম্ব্রয়ডারি ব্যবসা। নিট কনসার্ন প্রিন্টিং ইউনিট লিমিটেড দিয়ে শুরু করে জয়যাত্রা গ্রুপের আওতায় একে একে তিনি গড়ে তোলেন জয় অটো গার্মেন্ট লিমিটেড, জেসি এম্ব্রয়ডারি অ্যান্ড প্রিন্টিং এবং হুমায়রা স্টিকার লিমিটেড। সবক’টি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পুরস্কৃতও হয়েছেন রোটারি ক্লাবের একজন ডোনার হিসেবে। তার প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১২ হাজার কর্মী কাজ করছেন।

আইপি টিভি ও জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনে অভিযান: বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানের বাসা থেকে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটকের পর র‌্যাব তার মিরপুরে জয়যাত্রা টিভি ও জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে অভিযান চালায়। রাত ২টার পরে এই অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। অভিযানে দুই কার্যালয় থেকে বেশকিছু কাগজপত্র জব্দ করেছে অভিযানিক দল। তবে আইপি টিভি’র বৈধতার কোনো কাগজপত্র পায়নি র‌্যাব। তাই আইপি টিভি জয়যাত্রার অফিস থেকে বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম জব্দ করেছে র‌্যাব।

এসব সরঞ্জামের কোনোটিরই বিটিআরসির অনুমোদন ছিল না বলে জানিয়েছে র‌্যাব। গতকাল র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখা থেকে বলা হয়েছে, জয়যাত্রা টেলিভিশনের কোনো ধরনের বৈধ কাগজপত্র নেই। জয়যাত্রার মিরপুরের অফিসে অনেক সরঞ্জামাদি পাওয়া গেছে যেগুলো স্যাটেলাইট টিভির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। বিটিআরসি’র সহযোগিতায় এসব মালামাল জব্দ করা হচ্ছে। সেখানে টেলিযোগাযোগ আইনে কী মামলা করা যায় সেটাও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

The post জয়যাত্রা টিভিতে ৮০০ সাংবাদিক: নিয়েছেন মাথাপিছু ১ লাখ টাকা! appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3lbS5kt

জেলায় মৎস্যে ক্ষতি ৫৩ কোটি, ১৭ হেক্টর বীজতলা পানির নিচে https://ift.tt/eA8V8J

আব্দুস সামাদ: নিম্নচাপের প্রভাবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত সাতক্ষীরায় সর্বমোট ২৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে জেলার কালিগঞ্জ, আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৯ হাজার ৪৫৯ টি মৎস্য ঘের পানিতে ভেসে গেছে। সরকারিভাবে ভেসে যাওয়া ঘেরের আয়তন নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৬৫ হেক্টর। যাতে ক্ষতির পরিমান দেখানো হয়েছে ৫৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
এদিকে জেলা কৃষি অফিস বলছে, ভারি বর্ষণে জেলার নিম্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৭শ হেক্টর জমির আমন বীজতলার পানিতে ডুবে আছে। একই সাথে সদ্য রোপনকৃত ৮৬০ হেক্টর জমির আমন ধান পানির নিচে রয়েছে। এখনি ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা সম্ভব নয় জানিয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, পানি স্থায়ী হলে যে ক্ষতি হবে তা সহসায় কাটিয়ে উঠতে পারবে না কৃষক।
তবে, জেলা ব্যাপী সকল সেক্টরে যে ক্ষতি হয়েছে তা এখনো পর্যন্ত সঠিকভাবে নিরুপন করতে পারেনি বলে স্ব স্ব দপ্তর থেকে জানিয়েছে।
জেলা মৎস্য অফিসার মো: মশিউর রহমান বলেন, কালিগঞ্জ, আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৯ হাজার ৪৫৯ টি ঘের পানিতে ভেসে গেছে। যার আয়তন ১২ হাজার ৬৫ হেক্টর। এতে মৎস্য সেক্টরে ক্ষতি হয়ে ৫৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
তিনি আরও জানান, কালিগঞ্জ উপজেলায় ৬ হাজার ৬৯৫ টি ঘেরে ৪ হাজার ১৫১ হেক্টর মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। এ উপজেলায় ভেসে যাওয়া ঘেরে ক্ষতির পরিমান ১৮ কোটি ৫ লাখ টাকা।
আশাশুনি উপজেলায় ৫ হাজার ৭৯২ টি ঘেরে ৩ হাজার ৫৯১ হেক্টর মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। এ উপজেলায় ভেসে যাওয়া ঘেরে ক্ষতির পরিমান ১৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
আশাশুনি উপজেলায় ৬ হাজার ৯৭২ টি ঘেরে ৪ হাজার ৩২৩ হেক্টর মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। এ উপজেলায় ভেসে যাওয়া ঘেরে ক্ষতির পরিমান ১৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

 

এদিকে সাতক্ষীরা জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মোঃ আঃ বাছেদ জানান, অতি বৃষ্টির কারণে জেলার কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা সঠিকভাবে নিরুপন করতে একটু সময় লাগে। এ বিষয়ে সকল উপজেলায় এযোগে কাজ করছে। রবিবারে মধ্যে সঠিকভাব ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, পানিবন্দি মানুষের কথা বিবেচনা করে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তাৎক্ষণিক ২৫৬ মে.টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। একই সাথে কালিগঞ্জ, আশাশুনি ও শ্যামনগর এই তিন উপজেলায় ১ লাখ করে মোট ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, চলমান অতিবৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে/জনদুর্ভোগ লাঘবে অবৈধ নেট-পাটা স্থাপনকারীদেরকে স্ব-উদ্যোগে ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারণ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি অনেকে নেট-পাকা অপাসারণ করে নিয়েছে। যারা এখনো নেট-পাটা অপসারণ করেনি তারে বিরুদ্ধে আজ শনিবার থেকে সকল উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নেতৃত্বে অভিযান শুরু হবে। এতে বাধা দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, জেলায় বিভিন্ন সেক্টরে যে ক্ষতি হয়েছে তার এখনো নিরুপন করা সম্ভব হয় নি। তবে কাজ চলছে। আগামী দুএকদিনের মধ্যে জেলায় ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা সম্ভব হবে। তবে, যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পানি বন্ধি জীবন যাপন করছে তাদের জন্য চাল এবং নগদ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

The post জেলায় মৎস্যে ক্ষতি ৫৩ কোটি, ১৭ হেক্টর বীজতলা পানির নিচে appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3xgiNuo

Friday, July 30, 2021

ক্যাম্পাস টু ক্যাম্পাস https://ift.tt/eA8V8J

শাহনাজ পারভীন

বিদায় বেলায় আমাকে কাঁদিয়ে মারছিলো
আমারই লাগানো রাশি রাশি রাধাচূড়ার মায়াবী পাপড়ি,
একগাদা এলোমেলো বগন বিলাস,
রঙ্গন, এ্যালম-া, লটকন, রয়েলের ঘন সবুজ ফলগুলি।
বাদাম গাছটির নতুন গজানো ছাতার
মতো ছড়িয়ে পড়া নান্দনিক ডালগুলি
অঝোর ধারায় কাঁদছিল সকাল থেকেই।
আমার কথা ভেবে ভেবে কাঞ্চনের লম্বা গাছটি
অনবরত মন খারাপ করে তার গাঢ গোলাপী
পাপড়িগুলো ঝরিয়ে দিচ্ছিলো মিহি বাতাসে
অতপর তারা গড়াগড়ি খেতে খেতে ঠিক আমার
পথপ্রান্তে করজোড় মিনতিতে এলিজি শোনালো আমায়–
যেয়ো না বন্ধু।  যেয়ো না।
তুমি যদি চলে যাও তো আমার রাশিরাশি পাপড়িকে
কে মান্য করবে? কে ভালোবেসে তুলে নেবে কপোলে কাহার?
আমি কার লাগি থোকায় থোকায় ফুটে থাকি বলো!
আমলকীর চিরল পাতা কতগুলো কচি
ফুল নিয়ে আমাকে ঘিরে ধরলো ঘুর্ণিঝড়ের মাতম হাওয়ায়!
যেয়ো না যেয়ো না, বন্ধু ।
চারিদিকে, ক্যাম্পাস জুড়ে একই আকুতি যেয়ো না, যেয়ো না বন্ধু।
দেখো, আমাদেরকে দেখে শেখো
এ জীবন শুধু বিলিয়ে দেবার! ভোগের জন্য নয়।

বাগানের মাঝ খান থেকে হঠাৎ বসরা গোলাপ
তার লাল পাপড়িতে সুগন্ধ ছড়িয়ে লিখে দিলো সেই চিঠি।
সুগন্ধ আর সৌন্দর্যকে বাঁচিয়ে রাখতেই
শুধু শক্ত কাঁটার আঘাত রোজ রোজ সয়ে নিয়ে রক্তাক্ত করি।
তা তো তুমি দিব্য চোখেই দেখতে পাও আমাকে না ছুঁয়েও।
জলপাই গাছের দীর্ঘ মগডাল
আমার অলক্ষ্যেই কেঁদে কেটে চুড় হলো তার কাছে যেতেই।
যেয়ো না বন্ধু। যেয়ো না।

শত গঞ্জনা সয়ে রুয়ে দিয়েছিলাম নাম না জানা
কত হরিৎ পত্র পল্লবী, বৃক্ষের ছায়া অবিরাম।
প্রতিদিন আলো হাওয়া, রোদ জলে দেখেছি
তাদের অদম্য ভালোবাসায় যতেœ রেখেছিলাম বলেই
বিদায় বেলায় এই আকুতি তাদের।

পলাশের ডাল মৌন হয়ে আমাকে বিদায় জানায়।
আরও আরও কত শত ঘাস পত্র পল্লব, ফুল,
লতা, ডাল অশ্রু আর হৃদয়ের অর্ঘমালায় আমাকে বিদায় জানায়।
শুধু অস্ফুট বেদনায় বলি–
যেতে যে হবেই, চলে যেতে হয়!
বিদায় দাও, হে বন্ধু বিদায়।

তাদেরকে পিছে ফেলে আমিও পা বাড়াই আগামীর পথে
সে সৌরভে, সে বেদনায় ¤্রয়িমাণ মাথা নীচু নতুন কর্মক্ষেত্রে ঢুকি।
মাথা উঁচু দাঁড়িয়ে আছে অশোক, পলাশ, বকুল,
মহুয়ার গন্ধমাতাল লুকোচুরি সেখানে।
দীর্ঘ ক্যাম্পাসে মায়াজাল উড়োউড়ি ছড়াছড়ি
আমাকে বরণ করে ভালোবাসা আর ভালোবাসায়!
আহা! জীবন বিধুর কেনে? আহা! জীবন এত মধুর কেনে!

The post ক্যাম্পাস টু ক্যাম্পাস appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2V4bdWM

গুছিয়ে নেবার গল্প https://ift.tt/eA8V8J

জাকির আবু জাফর
বাবার হুকুম ছিলো- সবকিছু ঠিকঠাক গুছিয়ে নেবে
ভোর হলে চোখ থেকে ঘুমগুলো গুছিয়ে নিতাম
স্বপ্নগুলো গুছিয়ে রাত রেখে দিতাম মশারীর ভাঁজে
রাতের সমস্ত দাগ ঝেড়ে বিছিয়ে দিতাম দিনের তরিকা

মক্তব-শিক্ষক বলতেন চুলগুলো গুছিয়ে নাও
চুল গোছগাছ করে গুছিয়ে নিতাম মুখও
কেননা উস্তাদ মুখে দেবেন খোদার কালাম

এত কণ্ঠ, ডানে বাঁয়ে, এত যে শব্দের ধ্বনি
শিক্ষক একাই ধ্বনিগুলো গুছিয়ে নিতেন
বলতেন মনটি গুছিয়ে রেখো বুকের ভেতর
কেননা মনই বেসামাল হয় আজীবন
কৈশোরের সকালগুলো আজো জ্বলে স্মৃতির জেহেনে

উঠোনের রোদগুলো গুছিয়ে নিতাম নাস্তার টেবিলে
মা বলতেন- টেবিলের ছায়াগুলো ঝেড়ে
রোদগুলো রেখে দাও
আমরা ছায়া ঝেড়ে রেখে দিতাম টেবিলের তলে
নাস্তায় রোদের ঝোল ঢেলে জুড়িয়ে নিতাম ঝাল
শরীর গুছিয়ে নিতে গোগ্রাসে গিলতাম

দর্পিত দুপুর চারিদিক থেকে ছায়াগুলো গুছিয়ে
রেখে দিতো গাছের নীচে
গাছও গুছিয়ে নিতো ছায়ার শরীর
ভাবি আলো তীর্যক হলেই কেনো ছায়া ছোট হয়ে যায়

পাখির ফিরতি সুর মিশে বাঁশবন থেকে নামতো সন্ধ্যা
সন্ধ্যার মৌনতা গুছিয়ে রাখতাম বইয়ের ভাঁজে
গভীর হলেও মশারিতেই থেকে যেতো রাত
কেবল জীবন গুছিয়ে নেবার তৃষ্ণায়  জাবর কেটেছি বইয়ের পাতায়

সবাই জীবন গুছিয়ে নেবার কথাই বলে
জীবন গোছাতে গোছাতে দেখি-
মৃত্যুই গুছিয়ে রাখে মানুষ !

The post গুছিয়ে নেবার গল্প appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3BZOb43

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে শনিবার করোনার টিকা পাবেন যারা? https://ift.tt/eA8V8J

 

পত্রদূত ডেস্ক: সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে কোভিড-১৯ টিকার জন্য রেজিষ্ট্রেশন করা ৫৫৯ ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

করোনার টিকা প্রদানকালে হুড়োহুড়ি ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। শনিবার তালিকায় প্রকাশিত ৫৫৯ব্যক্তির বাইরে আর কাউকে টিকা দেওয়া হবে না বলে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শনিবার যে ৫০৫ জন রেজিষ্ট্রশনকারী টিকা পাবেন তাদের তালিকা দেখতে লিংকে ক্লিক করুন:

The post সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে শনিবার করোনার টিকা পাবেন যারা? appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3rNax4i

অনুমোদন পেলো যশোর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি https://ift.tt/eA8V8J

ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের ২০ মাস পর যশোর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শুক্রবার ৩০ জুলাই ১৯ জন উপদেষ্টাসহ ৯৪ সদস্যের এই কমিটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অনুমোদন দেন।

২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলন থেকে শহিদুল ইসলাম মিলনকে সভাপতি ও শাহীন চাকলাদারকে সাধারণ সম্পাদক করে ২২ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিলো। শুক্রবার ঘোষণা করা হলো পূর্ণাঙ্গ কমিটি।

পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি ছাড়াও সহসভাপতি আছেন ১১ জন। তারা হলেন আব্দুল মজিদ, হায়দার গনি খান পলাশ, সাইফুজ্জামান পিকুল, আব্দুল খালেক, একেএম খয়রাত হোসেন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী রায়হান, গোলাম মোস্তফা, অ্যাভোকেট জহুর আহমেদ, অ্যাডভোকেট এবিএম আহসানুল হক, মেহেদী হাসান মিন্টু ও এসএম হুমায়ুন কবীর কবু।

এছাড়া অন্যান্য পদধারীরা হলেন, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনির, আশরাফুল আলম লিটন ও মীর জহুরুল ইসলাম, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাভোকেট গাজী আব্দুল কাদের, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু সেলিম রানা, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ফারুক আহমেদ কচি, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুখেন মজুমদার, দফতর সম্পাদক হিসেবে মজিবুদ্দৌলা কনক, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুন্সী মহিউদ্দিন আহমেদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সাঈফুদ্দিন সাইফ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল কবির বিপুল ফারাজী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সেতারা খাতুন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক জিয়াউল হাসান হ্যাপী, শিক্ষা মানব সম্পাদক বিষয়ক সম্পাদক এ এসএম আসিফ-উদ-দ্দৌলা অলোক, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ আতিকুর বাবু, শ্রম সম্পাদক কাজী আব্দুস সবুর হেলাল, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক কাজী বর্ণ উত্তম, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পদাক ডা. এমএ বাশার, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আফজাল হোসেন, মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী ও জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, উপদপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদার, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক লুৎফুল কবীর বিজু এবং কোষাধ্যক্ষ মঈনুল আলম টুলু।

উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা হলেন অ্যাডভোকেট মঈনুদ্দিন মিয়াজি, নজরুল ইসলাম ঝর্ণা, অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান, মাস্টার রুহুল আমিন, গোলাম মোস্তফা খোকন, জাহাঙ্গীর আলম মুকুল, সৈয়দ ওসমান মঞ্জুর জানু, অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম, এস এম কামরুজ্জামান চুন্নু, গোলাম রসুল, প্রণব ধর, জয়নাল আবেদীন, নওশের আলী, মিজানুর রহমান মৃধা, অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন খান, আব্দুল মান্নান মিনু, মোবাশ্বের হোসেন বাবু, আহসান উল্লাহ মাস্টার ও সোলায়মান হোসেন।

কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, এমপি কাজী নাবিল আহমেদ, এমপি শেখ আফিল উদ্দিন, এমপি রনজিৎ রায়, এমপি মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন, মোহিত কুমার নাথ, আলেয়া আফরোজ, ফিরোজ রেজা আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা শরীফ খাইরুজ্জামান রয়েল, এনামুল হক বাবুল, কৃষিবিদ আব্দুস সালাম, ফারুক হোসেন, সরদার অলিয়ার রহমান, মেহেদী মাসুদ চৌধুরী, শওকত আলী, আসাদুজ্জামান মিঠু, আসাদুজ্জামান আসাদ, মীর আরশাদ আলী রহমান, আনোয়ার হোসেন মোস্তাক, মোস্তাফা আশিষ দেবু, প্রভাষক দেলোয়ার হোসেন দিপু, কামাল হোসেন (শহর), অধ্যাপক মোয়াজ্জোম হোসেন, রফিকুল ইসলাম মোড়ল, মসিউর রহমান সাগর, অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম তুহিন, ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ, এহসানুর রহমান লিটু, গোলাম মোস্তফা, সামির ইসলাম পিয়াস, আলমুন ইসলাম পিপুল, অমিত কুমার বসু, নাজমা খানম, ভিক্টোরিয়া পারভিন সাথী, হুমায়ুন সুলতান ও মারুফ হোসেন খোকন।

চলতি মাসে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম মিলন ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সমন্বয়ে একটি প্রস্তাবিত কমিটি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের  এবং খুলনা বিভাগীয় আওয়ামী লীগের দায়িত্বরত নেতা ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হোসেনের কাছে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়।

প্রস্তাবিত কমিটির মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শুক্রবার কমিটির অনুমোদন দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

গত কমিটির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর রোকেয়া পারভীন ডলি, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রেজাউল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক কাজী রফিক ও দফতর সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপু নতুন কমিটিতে স্থান পাননি।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, নতুন কমিটিতে কিছু বাদ পড়বে কিছু নতুন ঢুকবে এটাই স্বাভাবিক। সবমিলিয়ে কমিটি ভাল হয়েছে।

The post অনুমোদন পেলো যশোর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3fbpQ1C

উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিফলন https://ift.tt/eA8V8J

খালেদ মারুফ
মূলত উনবিংশ শতকের একেবারে গোড়ার দিকে, ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার অব্যবহিত পর থেকেই ক্রমান্বয়ে বাংলা একটি আধুনিক, রুচিশীল ও পরিমার্জিত নাগরিক ভাষা হিসেবে গড়ে ওঠে। জ্ঞাত ইতিহাস অনুযায়ী এর প্রায় আট শতাব্দিকাল পূর্ব থেকেই বাংলা ভাষা লিখিত হয়ে আসছিল।
যুগবিন্যাসের নানা পর্যায়ে সেগুলোকে আমরা ‘সান্ধ্য’, মধ্যযুগীয়’ নানা নামে চিহ্নিত করি। এগুলো সবই পদ, পদ্য বা কাব্যরূপে প্রকাশিত। সুতরাং বাংলা গদ্য-সাহিত্যের ইতিহাস মোটামুটি দু’শ বছরের বলে ধরে নেওয়া যায়। মধ্যযুগে বাংলার সামন্ত নৃপতিদের পৃষ্ঠপোষকতায় এক ধরনের বাংলা কাব্যের চর্চা হলেও বাংলা ভাষা তার জন্য নিজস্ব ভূ-খ- আর স্বাধীন ভাষার মর্যাদা অর্জন করেছে অল্পকাল। এমনকি সেটা অর্ধশতাব্দিও নয়।

এই স্বল্পতম সময়ের মধ্যে আকারে-প্রকারে ও ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণ উপন্যাস আমরা কতগুলো পেয়েছি, কতগুলোই বা পাওয়া সম্ভব। জাতীয়তাবাদী উন্মেষের কালে রচিত উপন্যাসসমূহের মৌল প্রবণতার অনুসন্ধান করলে এর ভেতর মানবিক ক্রিয়াকলাপের বাইরে আমরা মূলত দেশভাগের অভিঘাত ও সাম্প্রদায়িক নিষ্ঠুরতার কবল থেকে জাতি ও ভাষাকে মুক্ত করার প্রচেষ্টার দিকটি বিশেষভাবে দেখতে পাই।

উপন্যাসের ইতিহাসও খুব বেশি প্রাচীন নয়। ধরা হয় মার্কেন্টাইল ক্যাপিটালিজমের সাথেই এই বিশেষ ধরনের শিল্পরীতির আবির্ভাব। ফলে তা কিছুতেই চারশ বছরের বেশি নয়। এর মধ্যে ক্লাসিক হিসেবে মর্যাদা পাওয়া উপন্যাসের সংখ্যা ঠিক কত?

যদি আমরা ক্লাসিক বলতে তাই বুঝি, যা সময়ে-সময়ে, যুগে-যুগে নতুন কিংবা পুরাতন পাঠকের ভেতর পাঠস্পৃহা জাগিয়ে থাকে। আমরা আবারও তা পাঠ করি আর নবতর বাস্তবতার সাথে সাযুজ্য খুঁজি, পুনরাবিষ্কার করি। এর বাইরে রয়েছে অসংখ্য পুরাণ আর মহাকাব্য, যেগুলোর অধিকাংশই তৈরি হয়েছে একটি দীর্ঘ কিংবা স্বল্পকালীন যুদ্ধ ও প্রাণক্ষয়ের ইতিহাসকে উপজীব্য করে।

জনজীবনের স্বাভাবিক ভাষা থেকে আধুনিক-লেখ্যরূপ পরিগ্রহ করতে বাংলা ভাষাকে পাড়ি দিতে হয়েছে সহ্রাব্দকালেরও অধিক সময়। এই সুবিশাল কালপর্বের একেবারে শেষে অর্থাৎ আমরা যখন এসব কথা বলছি, তখন থেকে মাত্র অর্ধশতাব্দিরও কম সময়পূর্বে বাংলা ভাষা একটি সর্বগ্রাসী ভয়াল যুদ্ধের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।

সেই যুদ্ধের অভিঘাত কী, কতদূর বিস্তৃত এবং সাহিত্যে তার প্রতিফলন ইত্যাদি বিষয় প্রত্যক্ষ করার মতো সময় আমাদের হয়েছে কিনা সেটিও বিশেষভাবে লক্ষ্য করার বিষয় বলে মনে হয়। ফরাসি বিপ্লবের দেড় শতাব্দি অতিক্রান্ত হবার পরও যখন মাও সে তুং মনে করেছিলেন, এতদ্রুত নাকি ঐ ঘটনার মূল্যয়ান করা সম্ভব নয়।

ঠিক একইভাবে অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ ১৯৯০-৯২ সালের দিকে অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের দুই দশক কেটে যাবার পর, যখন শওকত ওসমানকে প্রশ্ন করেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এখনও কোনো মহৎ উপন্যাস রচিত হলো না কেন’, উত্তরে শওকত ওসমান আমেরিকার গৃহযুদ্ধ আর নেপোলিয়নের রুশ অভিযানকে কেন্দ্র করে রচিত দুটি মহৎ উপন্যাসের নাম করে বলেন, ‘এগুলো ওসব ঘটনার প্রায় সত্তর-আশিবছর পরে লিখিত, সাধারণত দেশের কোনো বিশেষ উল্লেখযোগ্য ঘটনার ওপর উপন্যাস অনেক পরে লেখা হয়, উত্তেজনা থিতিয়ে গেলে।’

ড. আজাদ ও শওকত ওসমানের সেই আলাপচারিতারও কুড়ি-পঁচিশ বছর পর এই বিষয়ক একটি লেখা তৈরির প্রয়োজনে আমি যখন একজন মাঝবয়েসি লেখকের নিকট মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে লেখা পাঁচটি উপন্যাসের নাম জানতে চাইলাম তখন, তিনি একটু ভেবে মাত্র তিনটি উপন্যাসের নাম করতে সক্ষম হলেন। তাই বলে মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে আসলেই কি কোনো মহৎ সাহিত্য রচিত হয়নি।

এই প্রশ্নের উত্তর সত্যিই খানিকটা দুরূহ। দালিলিক কাজ ও স্মৃতিচারণ পর্যাপ্ত না হলেও যা হয়েছে তা-ও নিছক কম নয়। সেগুলো নিশ্চয় পরবর্তীকালের উপন্যাস রচয়িতাদের সহয়তা করবে।

মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে রচিত সাহিত্যের ভঙ্গিমা ও বিষয়সূচক এক আলোচনায় ঐতিহাসিক মুনতাসীর মামুন মতপ্রকাশ করেন যে, বাঙালির বীর কাহিনির অভাব থেকেই মুক্তিযুদ্ধ ঘিরে তৈরি উপন্যাসগুলো নিছক বীর কাহিনিতে পরিণত হয়েছে এবং যেগুলোর অধিকাংশই অপ্রস্তুত অবস্থায় লেখা। তিনি মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যতখানি বীরত্বের তার চেয়ে অধিক হলো বিসর্জনের, ত্যাগের। এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচিত সাহিত্যে এই ত্যাগ-তীতীক্ষার বিষয়টি মূর্ত হয়ে ওঠা বাঞ্ছনীয়।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ঘিরে এ পর্যন্ত লেখা হয়েছে যে অসংখ্য গ্রন্থাবলি তার নির্ঘন্ট তৈরি না করে আমরা বরং একটি শ্রেণিকরণের সাহয্যে বিষয়টিকে আর একটু সুস্পষ্টতাদানের চেষ্টা করতে পারি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখেছেন যুদ্ধের ভয়াবহতায় পালিয়ে যাওয়া অধ্যাপক, বিজয় অর্জনের প্রারম্ভে আল-বদরের গুলিতে প্রাণ দানকারী সাতিহ্যিক-অধ্যাপক, লিখেছেন যুদ্ধে সাংগঠনিক নেতৃত্ব প্রদানকারী ব্যক্তিবর্গ, লিখেছেন প্রত্যক্ষ যোদ্ধা, গেরিলা ও সমরনায়কবৃন্দ।
যুদ্ধকালে প্রতিদিনের দিনপঞ্জি লিখেছেন অনেক কবি-সাহিত্যিক, যুদ্ধে স্বামী-সন্তান হারানো মা, প্রাগ্রসর গৃহবধু ছাড়াও অবরুদ্ধ ঢাকায় আটকে পড়া মধ্যবিত্তের অনেকেই। লিখেছেন দেশের বাইরে অবস্থান করে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সমর্থন আদায়ের সংগ্রামে লিপ্ত বুদ্ধিজীবীগণ। প্রবাসী সরকারের নানা পর্যায়ে যোগদানকারী কর্মকর্তাবৃন্দ লিখেছেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকলীন সুতীব্র কূটনৈতিক সংগ্রামের বিবরণ।

লিখেছেন মিত্রবাহিনির একাধিক জেনারেল, ট্রেনার। মুক্তিযুদ্ধকালে ভারত-বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ায় দায়িত্বপালনকারী সাংবাদিকবৃন্দ এমনকি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী দালালচক্র ছাড়াও দখলদার-হানাদার বাহিনির জেনারেলরাও সে সময়ের স্মৃতিচারণ করে বই-পুস্তক রচনা করেছেন। আমাদের পূর্বসূরি মহান সাহিত্যিকরা তাদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ অভিজ্ঞতা আর কল্পনা শক্তির মিশেল দিয়ে যে পরিমাণ গল্প-উপন্যাস রচনা করেছেন তার পরিমাণও কম নয়।
এছাড়া প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত কয়েক হাজার নতুন বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বইপত্র প্রকাশিত হয়ে আসছে মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে। তবু কী আমরা আমাদের মহান যুদ্ধের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে লেখা স্বার্থক এক বা একাধিক উপন্যাস রচনা করতে সক্ষম হইনি? হয়তো হইনি।
হয়তো আংশিক সফল হয়েছি, নিদেনপক্ষে আমরা ঐ মহান পটভূমিকার ওপর আঁচড় কাটছি প্রতিদিন, প্রতিবছর। আলোচনার প্রারম্ভে উল্লেখ করা হয়েছিল, পুরাণ কিংবা মহাকাব্যসমূহের কথা; যা প্রায় সবগুলিই কোনো না কোনো যুদ্ধের পটভূমিকায় রচিত। সবশেষে আমরা যদি পৃথিবীতে রচিত সর্বশেষ দু-একটি ক্লাসিকের ওপর দৃষ্টি ফেরাই, সেটা হোক ল্যাটিন কিংবা আফ্রিকার, সেগুলোর অন্তরালেও আমরা খুঁজে পাই তাদের জাতীয় জীবনে ঘটে যাওয়া দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধ অথবা এমনতর কোনো ঐতিহাসিক ঘটনার অভিঘাত।

সুতরাং আশাপোষণ করা যায়, অনীহা, বিমুখিনতা ও জাতিগত হীনম্মন্যতার নাগপাশ কাটিয়ে বাংলা ভাষাও তার কাঙ্খিত উপন্যাসটি রচনা করে নেবে অচিরেই। কেননা আমরা শওকত ওসমান নির্দেশিত সময়ের মুখোমুখি চলে এসেছি। আর সে উপন্যাসে বর্ণিত কালপর্ব কয়েক দশক কিংবা শতবর্ষে ব্যাপৃত হলেও মূল অভিঘাতটি হবে মুক্তিযুদ্ধ উৎসারিত, একথা নিঃসংশয়ে বলা যায়।

The post উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিফলন appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3rLheUw

নদী https://ift.tt/eA8V8J

নাসরিন জাহান মাধুরী

জলযাত্রায় একাই গেলে নদী তুমি
জানতে একমুখী ¯্রােত ফেরাবে না তোমায় আর
তোমার চির চেনা ঘাটে
মহাযজ্ঞে মিশে গেছে নদী
তার ফেলে যাওয়া পথের রেখার ছাপ স্পষ্ট
এখানে স্টেশনে ট্রেন থামে ট্রেন যায়
বুনোফুলের মালার গন্ধ খুঁজে ফেরে
নদীর হিসেব না মেলানো গল্পের
নদীতীরে প্রতীক্ষায় ছিল যারা ক্লান্তিবিহীন চোখে!
তারাও ফিরে যায় বিফল মনোরথে
নদী হাসে ছেলেবেলার লুকোচুরি হাসি।

The post নদী appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2VikdYc

বয়েস বাড়ছে বাতাসের দেশে https://ift.tt/eA8V8J

মো. আরিফুল হাসান
ভোরের আলো তখনও সবখানে ছড়িয়ে পড়েনি। কলিমুদ্দি ঘুম থেকে উঠে। পেটটা ভারিরকম চাপ দিয়ে আছে। সোজা সে ছুটে বাথরুমের দিকে। যেতে যেতে আর ধরে রাখতে পারে না। লুঙ্গিটা নষ্ট হয়। কলিমুদ্দি কোনরকম বাথরুমের দরজা ভেজিয়ে কমোডে বসে। শালার পেট খারাপ হওয়ার আর সময় পাইল না! মনে মনে খিস্তি ছাড়ে সে। ঘরে তার বৌ। এখন সে খেয়ে কাজে যাবে। কী কাজ করবে কলিমুদ্দি? সে এখন নিজেও জানে না নতুন সকাল তার জন্য কি কাজ নিয়ে আসবে। সে ঘর থেকে বের হবার সময় পাঁচ-সাতশো টাকাও পকেটে রাখে। সুযোগমতো হলে যেকোনো ব্যবসা শুরু করতে পারবে। এই অল্প টাকাতেও ব্যবসা হয়। বুদ্ধি খাটাইলে এই টাকা থেকেও দুতিনশো টাকা লাভ করা যায়। কলিমুদ্দি প্রায়ই এককাদি কলা কিনে কান্দিরপাড় মোড়ে হেঁটে হেঁটে বিক্রী করতে থাকে। পুলিশ অবশ্য দৌড়ানি টৌরানি দেয়, মাঝে মধ্যে পিটাও দেয়। কিন্তু কি করার? কাজ না থাকলে তাকে তো একটা না একটা কিছু করে দুচার টাকা উপার্জন করতে হবে। জোরে একটি কোঁৎ দেয় কলিমুদ্দি। মনে হয় পেটের ভেতরের নাড়িভুড়ি সব বেরিয়ে যাবে। কলিমুদ্দি মনে করতে পারে না, গতকাল কি এমন খতিকর খেয়েছিলো সে যার জন্য তার আজ পেট খারাপ? গতকালতো সে কাজ পেয়েছিলো। একটা ভাঙা ভবনের রাবিশ সরানোর কাজ করছিলো ওরা সতেরোজন। গায়ে খেটেছে, দুপুরে গরম ভাতের সাথে ডিম ভাজি খেয়েছে। তারপর একটা বিড়ি হাতে আবার লেগে গেছে কাজে। ওরা সতেরো জন। কে কোথাকার তা জানার উপায় নেই। কন্টাক্টর সারাক্ষণ জোকের মতো লেগে থেকে কাজ আদায়ের চেষ্টা করছে। কাজ শতভাগ আদায় হলেও কন্টাক্টরের উনাপেনা শেষ হচ্ছে না। অবশ্য টাকাটাও সাথে সাথে দিয়ে দিয়েছে। ফেরার পথে যখন একটা একহাজার টাকার চকচকে নোট কন্টাক্টার তার চোখের সামনে মেলে ধরলো, তখন প্রায় চোখে জল চলে আসছিলো কলিমুদ্দির।
গ্রামছাড়া শহরে আসা মানুষ কলিমুদ্দি। গা খাটা জীবন তার একরুমের একটি বাসায় বৌ আর নিজের বিপর্যয় ভবিষ্যতের টানাপোড়েন আর লজ্জায় বেচে থাকা। তবুও মানুষ স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে আর কলিমুদ্দিরা জানে যে তারা মানুষ নয় তাই তাদের স্বপ্ন নেই। ফেরবার পথে পাঁচশো গ্রাম খাসির মাংস নিয়ে ফেরে কলিমুদ্দি। বৌ অবশ্য রাধেনি। বলেছে, পত্থম রোজার দিন রাইন্দাম। কলিমুদ্দি কিছু বলেনি। কলমি শাক ছোলার ডালদিয়ে রান্না করা হয়েছে। কলিমুদ্দি তাই খেয়ে শুয়ে পড়ে। সারাদিন বেশ ধকল গিয়েছে তার। একেকটা সময় মনে হয়েছে পিপাসায় বুকটা ফেটে যাচ্ছে। কিন্তু ঘনঘন পানি খাওয়া কন্টাক্টরের বারণ। সে বলেছে, চা নাস্তাপানি একসাথে করবা। কাম ফাঁকি দিয়া পানি বিড়ির নাম কইরা উইঠ্যা গেলে টাকা কম পাইবা। তাই কেউ সহজে উঠতে চায়নি। কাজের ফাঁকে ফাঁকেই নিজেদের মধ্যে একটি দুটি কথা বলেছে ওরা। কলিমুদ্দির ডান পাশে যে লোকটি কাজ করছিলো তার নাম মমিনউদ্দিন, বাড়ি নোয়াখালি। কলিমুদ্দিন ঝুড়িতে রাবিশ তুলতে তুলতে প্রশ্ন করেছিলো, বাড়ি কই ভাই? নোয়াখালি। কোন জায়গায়? হেনি। ও, আইচ্ছা; আমি কুমিল্লার, বাড়ি মুরাদনগর। মমিনউদ্দিন চোখ না তোলেই জিগায়, বাসা কনে? ধর্মপুর। ধর্মপুর? আইও তো ধর্মপুর থাহি। তারপর আর কোনো কথা হয় না তাদের। কলিমুদ্দিই কথা আগায় না। ঘরে তার নতুন বিয়া করা বৌ আছে। বাসার পদপরিচয় সে যারে তারে দিতে ভয় পায়।

কলিমুদ্দির বৌয়ের নাম জরিনা। গেরস্তঘরের কন্য হইলেও তার বাপের আর গেরস্তি অবশিষ্ট ছিলো না। এখন শেষদশায় এসে নিরুপায় হয়ে মেয়েকে গাখাটা শ্রমিকের কাছে বিয়ে দিতে হয়েছে তাহেরউল্লাহকে। না হলে গেরস্তের মেয়ে অন্তত গেরস্তঘরেই বিয়ে দিতে পারতো। দেখতে শুনতে খারাপ না জরিনা। সুকেশ, চিক্কন দেহ, উন্নত নিতম্ব, দাড়িম্ব স্তনÑ সবই আছে। চোখের ভ্রুতে কাজম জলদ, চোখদুটো তার ডাগর ডাগর, ঠোঁট দুটো তার কমলার কোয়াÑ সবই আছে। শুধু নেই তার পিতার সঙ্গতি। না হলে সবাই বলে, এমন মেয়ে জজ ব্যরিস্টারের বৌ হইলে মানাইতো। শুনে কলিমুদ্দি মুচকি মুচকি হাসে। আবার ভয়ও হয়। সত্তিই যদি কোনো জজব্যরিস্টারের নজরে পড়ে যায় জরিনা, তার আদরের জরিনা, তাহলে সে বাঁচবে? দুজনকে দুজন মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। স্বামীর আর্থিক অবস্থার দৈন্যতা এতটুকু পীড়া দিতে পারে না জরিনার মনে। বরং সারাক্ষণ একটা সুখের হাসি ফুটে থাকে গোলাপ হয়ে, চন্দ্রমল্লিকা হয়ে তার ঠোঁটে ঠোঁটে। স্বামীর যা উপার্জন, তা থেকেই দুটো টাকা সঞ্চয় করার চেষ্টা করে জরিনা। বলে, একদিন আমাগো সব হইবো। সে স্বামীর মাথায় হাত বুলায়। আয়েশে কলিমুদ্দির ঘুম চলে আসে। সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেছে আজ। জরিনা বুঝতে পারে। সেও ঘুমিয়ে যায়।

বাথরুম থেকে বের হয়ে জরিনাকে ডেকে সবকিছু বলে কলিমুদ্দি। একবারের বাথরুমেই তার শরীর অনেক কাহিল হয়ে গেছে। কাজে যাবার সাহস পাচ্ছে না। তবুও কলিমুদ্দি জানে, কাজে তাকে যেতেই হবে। জরিনা হাতে পায়ে ধরে বারণ করে। কলিমুদ্দি নিষেধ শোনে না। যাবার জন্য তৈরি হয় সে। দেরশো টাকায় কেনা টেট্টনের শার্টটি গায়ে দেয়। গামছাটা কাঁধে চাপায়। ওরা কোদাল নিতে যাবে এমন সময় তার পেট আবার মোচড় মারে। গামছাটা ফেলে আবার দৌঁড়ায় বাথরুমের দিকে। বাথরুমটা ঘরেরই এককোনায় দেয়ালঘেষা। খট করে বাথরুমের ছিটকিনি খুলে ঝড়ের মতো প্রবেশ করে কলিমুদ্দিন। আহারে! এই লুঙ্গিটাও বরবাদ হইলো। করুণ আর্তনাদ ভেসে আসে কলিমুদ্দির কণ্ঠে। এবার সে বের হয় বৌয়ের উড়না পেঁচিয়ে। ওরস্যালাইন আনতে হবে। প্যান্ট পড়তেও ভয় পাচ্ছে সে, যদি এটিও নষ্ট হয়ে যায়! তাহলে তো বিপদ আপদে পড়ার মতো কিছু থাকবে না। কোনোকিছু না ভেবেই সে জরিনাকে বলে তার জন্য স্যালাইন কিনে আনতে এবং এই বলা তার জন্য শেষে কালশাপ হয়।

গ্রামের মেয়ে জরিনা। শহরে এসেছে ছমাসের মতো হলেও স্বামীর সাথে একদুদিন ছাড়া সে কখনো বাসার চৌকাঠ ডিঙায়নি। গলির মোড়ে ওষুধের দোকান থাকলেও সেটি খুঁজে পেতে জরিনার মনে হয় তাকে বিস্তর হয়রান হতে হবে। শেষ পর্যন্ত পেয়ে যায় ওষুধের দোকান। একটি ফর্সা ছেলে বসে আছে দোকানে। বয়েস তার স্বামীর মতোই হবে, ছাব্বিশ কি সাতাশ। কেনো যেনো চোখ ফেরাতে পারে না জরিনা। ওষুধ বিক্রেতা ছেলেটিও অপলক তাকিয়ে থাকে জরিনার দিকে। এই মহল্লায় সে দোকানদারি করছে তিনবছর যাবৎ। এর আগে এতো অপরূপ রূপবতী কাউকে সে কখনো দেখেনি। নিকটেই ভিক্টোরিয়া কলেজ। কতো মেয়ে আসে যায় রোজ। কিন্তু ওষুধ বিক্রেতা ছেলেটির কাছে মনে হয় এর আগে সে এমন রূপসী আর দেখেনি। সে যেচে জরিনার সাথে আলাপ জমাতে চেষ্টা করে। জরিনাও যেনো আলাপ করতে মুখিয়েই ছিলো। স্যালাইন বিনিময় কালে দুজনের অবাধ্য আঙুল ছোঁয়াছুঁয়ি করে ফেলে। এক তড়িৎ ঝড় দুজনের মধ্যেই প্রকম্পিত হয়।

স্যালাইন খেয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করে কলিমুদ্দি। দিনের একটার দিকে তার পেট ধরে যায়। ইতিমধ্যে শুকিয়ে যাওয়া লুঙ্গিটা পরে সে। শার্টের পকেটে একটা পাঁচশো টাকার নোট, দুটো বিশ টাকার নোট ও একটি একশো টাকার নোট নিয়ে সে বের হয়। আজ আর কোনো কাজ পাওয়া যাবে না। কিছু একটা বেচাবিক্রি করেই চলতে হবে। বাসা থেকে হাঁটতে হাঁটতে কলেজ মোড় এসে কলিমুদ্দি দেখে এক জেলে কিছু মাছ নিয়ে বসে আছে। বলছে নদীর মাছ। আসলে নদীর মাছ না, এগুলো প্রোজেক্টের মাছ। কলিমুদ্দি বুঝে, আর এও বুঝে যে পাব্লিকেও এসব মাছ নদীর মাছ বলে কিনবে না। মানুষ এখন এত বেকুব না। কলিমুদ্দি জেলেকে হাক দেয়Ñ মাছ কতো? ষোল্লো শো। কলিমুদ্দি বুঝে, তার গ্যাঁটে এ ব্যবসা কুলোবে না। তবুও একটা বাড়ি মেরে দেখে, পজেক্টের মাছ এতো দামে কেউ কিনবো? ট্যাকা চাইরশো দিবানি। জেলে খিস্তির মতো কিজানি বলে। কলিমুদ্দি দমে না, শেষমেষ ছয়শো টাকা দিয়ে সে মাছগুলো কিনতে চায়। কিন্ত জেলে দিতে চায় না। এমন সময় এক লোক এসে মাছগুলো একহাজার টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে যায়। কলিমুদ্দি বিরসবদনে পথ চলে। রেলগেটের কাছে এসে কলিমুদ্দি একবার রেলস্টেশনটা ঘুরে যেতে চায়। ওদিকে অনেককিছু বিক্রি বাট্টা হয়। তার মতো পার্টটাইম ব্যাবসায়ীদের একটা বড় সুযোগ থাকে এখানে দুচার পয়শা উপার্জন করার। কলিমুদ্দিন রেললাইনের কংক্রিটে পা দিয়ে লাত্থি দিতে দিতে চলে। তার মতো লোকের বাঁচার অভাব হয় না। কলিমুদ্দি জানে, পুরুষ মানুষের কোনো কাজের অভাব নেই। তাই সে সময়ের সাথে সাথে যেকোনো কাজেই নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে। একবার বাথরুম পরিষ্কারের কাজেও কিছুদিন নিয়মিত গিয়েছে সে। এখন তো শহরে প্রায়ই ড্রেন পরিষ্কারের কাজে যেতে হয়। এসব এখন গা সওয়া হয়ে গেছে তার।

স্টেশানে সে ছোটখাটো একটা ব্যবসা হাতাতে পারে। এক লোক মাথায় করে একঝাঁকি বড়ই নিয়ে এসেছে বিক্রির জন্য। কলিমুদ্দি সেগুলো তিনশো টাকায় কিনে ফেলে। ঝুড়ির জন্য আরও পঞ্চাশ টাকা দিতে হয় তাকে। অবশ্য দিন শেষে সে ঝুড়িটাও বিক্রি করে যাবে। সুতরাং তার কোনো লস নাই। একটা বড়ই মুখে দেয় কলিমুদ্দি। আহ! রসালো। মিষ্টি যেনো অমৃত! কলিমুদ্দি কাছাকাছি একটা মুদির দোকানে যায়। পনেরো টাকার পলিথিন কিনে দোকানেই মেপেমেপে প্রতি পলিথিনে এককেজি করে ভরে সে। আটটি পলিথিন হওয়ার পর আরও কিছু বড়ই থেকে যায়। কলিমুদ্দি সেগুলো দুইটা পলিথিনে মুড়ে ঝরিনার জন্য রেখে দেয়। আবার সে স্টেশনে চলে আসে। একশো বিশ টাকা কেজি বড়ই হাঁকায়। দুয়েকজন চল্লিশ পঞ্চাশ টাকা দাম তুলে। কলিমুদ্দি বলে, একটা খাইয়া দেখেন; ট্যাকা দুই শো দিতে মন চাইবো। লোকজন কেউ কেউ ফাও খেতে চায়, কলিমুদ্দি এসব এড়িয়ে চলে। দেখতে দেখতে রেলস্টেশনে কলিমুদ্দির তিন প্যাকেট বড়ই বিক্রি হয়ে যায় একশো টাকা কেজি দরে। তারপর কলিমুদ্দি বাকি বড়ইগুলো নিয়ে রওয়ানা দেয় কান্দিরপাড়ের দিকে। একশো পঞ্চাশ টাকা দাম হাঁকায় এবার।

বিকেল পড়ছে। জরিনার কেনো যেনো মনে হয় তার আবার ফার্মেসিতে যাওয়া দরকার। এবার সে সুন্দর করে সাজে। কপালে একটা টিপ দেয়। এবং অপেক্ষাকৃত সুন্দর জামাটি পরে বের হয়। বরাবরের মতোই দোকানদার অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে তার দিকে, সেও পলক ফেলতে পারে না। এবার জরিনা দোকানে আসার কোনো নির্দিষ্ট কারন ব্যাখ্যা করতে পারে না। একবার বলে মাথা ধরেছে, একবার বলে পেটের ডানপাশে চিনচিনে ব্যাথা। ওষুধ বিক্রেতা ছেলেটি বুঝে যে কোনো কারন ছাড়াই জরিনা এসেছে তার সাথে দেখা করতে। সে একটি সিভিট ট্যবলেট এগিয়ে দেয় জরিনার দিকে। তারপর বলে, এক্ষুনি খেয়ে ফেলেন। জরিনা পাতা ছিড়ে ট্যাবলেটটি মুখে দেয়। টক–মিষ্টিতে তার মুখ ভরে উঠে। সেদিন আরও অনেক কথা বলে তারা দু’জন। জরিনা বলে, তার একটা বাবুর দরকার। স্বামীর ট্যাকা নাই বলে চিকিৎসা করাতে পারছে না। ওষুধ বিক্রেতা ছেলেটি তাজ্জব হয়ে শোনে। কেমন যেনো একটা অনুরণন টের পায় নিজের ভেতর।

ছেলেটির নাম সোলায়মান। বাড়ি চৌদ্দগ্রামের দিকে। কুমিল্লায় এসে ভিক্টোরিয়ায় ভর্তি হলেও পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে এই নগরবঞ্চিত ক্ষুদ্র আয়ের মানুষদের পশ্চিম ধর্মপুরে একটি গলির মুখে ছোট্ট একটি ফার্মেসি দিয়ে বসেছে। তিনমাসের এলএমএএফ কোর্স করে সে টুকটাক ডাক্তারি বিদ্যার কিছু শিখে নেয়। নিজের কাকার দোকানে ওষুধ বিক্রির কাজ করেও সে কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করে। সঙ্গতি এবং সামর্থের বিচারে সে কলিমুদ্দি থেকে একটু উপরে আর সামাজিক মর্যাদার দিক থেকে আরেকটু উপরে। জরিনা কী দেখে পাগল হলো বলা যায় না। হয়তো গাঁয়ের মেয়ে সাফসুতরা শাদা ত্বকের রূপ দেখে মজে থাকতে পারে। এমনিতেও সোলায়মান পছন্দ করার মতোই ছেলে। তার দোকানের মালিক তবারক মিয়াঁ অবশ্য আঁড়েঠাঁড়ে জানতে চায় সোলায়মানের গ্রামের বাড়ির অবস্থা সম্পর্কে। সোলায়মান তবারক মিয়ার কথার উদ্দেশ্য বুঝে। কিন্তু সে তবারক মিয়ার মেয়েকে বিয়ে করতে চায় না। কালা ধুমসি মেয়েকে সোলায়মান কেনো বিয়ে করতে চাইবে।

সেদিন কলিমুদ্দি এক অদ্ভুত কাজ করে বসে। জরিনার জন্য রাখা বড়ইগুলো সে একটা মাগীকে দিয়ে আসে। নিজের লাভের তিনশো টাকা এবং পুঁজির দুইশো টাকা মিলিয়ে মোট পাঁচশো টাকা সে গুঁজে দেয় বারনারীর বুকের ভাঁজে। এ কাজ সে কেনো করেছে সে জানে না। শুধু জানে, আজ তার দেখা হয়েছিলো সেদিনের সেই নোয়াখালির শ্রমিক মমিনউদ্দিনের সাথে। তারপর দুজনে দুটো রিক্সায় যার যার দেহবিতান নিয়ে ছুটেছিলো দুদিকে। এই কুমিল্লায় কলিমুদ্দি থাকছে সবমিলিয়ে তিনবছর। বৌ নিয়ে এসেছে তাও হয়ে গেছে ছ’মাস। অথচ এ কাজ সে এর আগে কোনোদিন করেনি। কান্দিরপাড়ে মাগি সস্তা। দুশো তিনশো টাকা দিয়েই পাওয়া যায়। একটু সুন্দরীর দিকে ঝুঁকলে পাঁচ-ছয়শো খরচ হতে পারে। কলিমুদ্দি একটি রিক্সায় চেপে রাজবাড়ী দুধবাজার গেট দিয়ে একটা অন্ধকারমতো কোথায় যেনো ঢুকে যায়। তারপর যখন বেরিয়ে আসে তখন কলিমুদ্দির মেজাজ ফুরফুরে না হয়ে একধরণের ভয় ও পাপবোধ আক্রান্ত হয়। সে নিরুদ্দেশের মতো হাঁটতে থাকে। হাঁটতে হাঁটতে রেলস্টেশনে এসে দশটাকার বিনিময়ে গণ সৌচাগারে নিজেকে ভালোমতো ধৌত করে সে। কিন্তু তার গায়ের ময়লা যেনো দূর হয় না। আসার সময় দশ টাকা দিয়ে একটি সাবান কিনে এনেছে, প্রায় সবটা ঘষে ফেললেও তার মনে হতে থাকে তার গায়ে লেগে আছে থোকা থোকা ময়লা। সকালের বাথরুমের কথা তার মনে হয়। মনে হয়, পরপর দুটি লুঙ্গি ভরে গিয়ে এখন যেনো থোকা থোকা মল তার দেহে অমোছনীয় হয়ে সেঁটে রয়েছে। বাইরে থেকে কেউ দরাম দরাম দরজায় ধাক্কাচ্ছে। সম্বিৎ ফিরে পায় কলিমউদ্দি। দিগম্বর দেহটা গামছায় মুছে লুঙ্গিটা পরে বেরিয়ে আসে। তারপর স্টেশনের একটি চায়ের দোকানে রাত বারোটা পর্যন্ত বসে থেকে বাসায় ফেরে।

পরদিন সকালে প্রথম রমজানে রান্না করার জন্য রেখে দেয়া আধা কেজি ছাগলের মাংস রান্না করে ফেলে জরিনা। কলিমুদ্দি তাজ্জব হলেও মনে মনে খুশি হয়। সাধারণত বৌয়েরা ভালোমন্দ কিছু রান্না করে তার স্বামির প্রতি ভালোবাসার বহিপ্রকাশ থেকেই। কলিমুদ্দি মনে মনে নিয়ত করে, রমজানের আগে সে আবারও আধাকেজি খাসির মাংস কিনে আনবে। আজ পেটপুট সব কিলিয়ার। কোনো গ-গোল নাই। কলিমুদ্দি খুশি মনে ভাত খেতে বসে। কিন্তু খেতে বসে কলিমুদ্দির মনে হয় তার স্ত্রী তাকে ঠিকমতো মাংসটা তুলে দিচ্ছে না পাতে। মুখ ফুটে বলতে গেলেও লজ্জা পেলো কলিমুদ্দি। সে ঝোল–আলু মিলিয়ে কোনোরকম ভাত খেয়ে উঠলো। মনে মনে ভাবলো, হয়তো তার স্ত্রীর সংযমী পরিকল্পনা তরকারিটা দিয়ে দুতিনদিন চালিয়ে দিবে। মনে মনে একপশলা খুশিও হলো সে। যা হোক, নিজের মনের পাপবোধ, তরকারি সংক্রান্ত দ্বিধা, আর কাজে যাবার তাড়াহুড়া তাকে জরিনার কাছ থেকে বিদায় নিতে ভুলিয়ে দেয়। এই প্রথম সে ঘর থেকে বের হলো জরিনাকে না বলে। জরিনার অবশ্য এ জন্যে কোনো মন খারাপ হয়নি। সে দুপুরের জন্য সোলায়মানকে আমন্ত্রণ করে রেখেছে।

সেদিন দুপুরে জরিনা ও সোলায়মান একসঙ্গে খেলো। তবে তারা ভাত কিংবা তরকারী কিছুই খায়নি। আদিম পাপের বাহন যে গন্ধম, সেদিন দুপুরে তারা দুজন সেই ফুলে সর্বনাশ হয়ে গেলো। তারপর রাত করে বাড়ি আসলে কলিমুদ্দি কড়াইয়ের ঢাকনা খোলে সবটা তরকারি দেখতে পেয়ে স্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয় মনে মনে। আর কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকে না। মহল্লার কেউও এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ করে না কারন ডাক্তার তো যে কারো ঘরেই আসতে পারে। তাছাড়া ঠিক দুপুরের সময় সোলায়মান কার ঘরে প্রবেশ করলো, কে কার ঘরের দরোজা খুলে দিলো এসব দেখার খুব কম অবসরই এখন মানুষের আছে। তারও সাতদিন পর, চৌদ্দদিন পর, যখন রাত পোহালেই প্রথম রোজা আর একদিন, সেই দিন রাতে কলিমুদ্দি জরিনাকে আদর করতে উদ্যত হলে জরিনা না করে। সে জানায়, ডেইট অভার হইছে তিনদিন। কলিমুদ্দি হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারে না। তবে জরিনা বুঝতে পারে, বৈধ হোক আর অবৈধ হোক, পেটের মধ্যে একটাকিছুর বয়েস বাড়ছে বাতাসের দেশে।

The post বয়েস বাড়ছে বাতাসের দেশে appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2WCUxGu

জোছনার বালিয়াড়ি https://ift.tt/eA8V8J

ভাস্বতী গোস্বামী
জ্যোৎস্নার রাত এলে মিতুর তেষ্টা বেড়ে যায়। আকণ্ঠ ‘জ্যোৎস্না -মাধবীতে’ সে তার তৃষ্ণা মেটায়। এসময় তার দু-চোখ ভরে ঘুম আসে। ঘুমের ভিতর টের পায় শিরায় শিরায় জড়ানো চাঁদ, ধীরে ধীরে তার পোশাক খুলে নিচ্ছে। চোখ খুলে দেখতে পায় পুকুরের জলে, গলা-কাটা পূর্ণিমা ভাসছে। নগ্ন মিতু পুকুরে নেমে পূর্ণিমাকে জড়িয়ে ধরে। পূর্ণিমার জলোভাব শরীর হাতড়ে হাতড়ে কিছু খোঁজার চেষ্টা করে। বারবার ব্যার্থ হয়ে মাথা তুলে আকাশ দ্যাখে। ঠিক এসময়েই খিলখিল হেসে ওঠে পূর্ণিমা। জলের সারেঙ্গীতে ওর গান শোনে মিতু Í

‘ইস্ দুনিয়া কা সঙ্গ্ না চাহু
না ম্যাঁয় ঝুমকা, কঙ্গন না চাহু
য্যায়সে ভি হো, জিৎনা ভি হো রং পিয়া কে রঙ্গনা চাহু’

রেখায় রেখায় ফুটে ওঠে পূর্ণিমার কিন্নর শরীরের মানচিত্র। দুধসাদা ঢেউমালা, বালি-আকাশ আর চিনচিনে মৃত্তিকার স্পর্শ পায় মিতু। ফেনার ‘শাহতুষে’ জড়ানো পূর্ণিমার শরীরে টলটল করছে একমুঠো জল। নিজের আকাশী বসন টেনেটুনে পা আড়াল করে ব’সে পড়ে মিতু। আর তখনই দ্যাখে তার আকাশী বসন বদলে সেখানে সফেদ আকাশ। ভিজে উঠছে বসন প্রান্ত। মনে পড়ে, তার ঋতুমতী হওয়ার সময় এটা। দু-পায়ের ফাঁক দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে চ্যাটচেটে জ্যোৎস্নার রেখা। রক্তফুলকে, শ্বেতপদ্ম হতে দে’খে, ভয়ার্ত মিতু চাঁদ দ্যাখে। জলের বুকে লেপটে যাওয়া পূর্ণিমা খোঁজে। চাঁদের রাজ্যে তখন স্তরে স্তরে স্ফটিকের রাজপ্রাসাদ উঠেছে। উঁচু উঁচু স্তম্ভের গায়ে তার ছায়া পড়ে। নিজেকে দেখে চমকে ওঠে সে। তার শরীরের ভার লাঘব হয়ে গেছে। পা-দুটি, মাটি থেকে অনেকটা ওপরে। মেঘের মতো স্তন, কুয়াশাজড়ানো কেশ।ফিনফিনে কাপড়ের এখানে সেখানে স্পষ্ট জ্যোৎস্নার ছোপ। মিতুর মনে পড়ে, কিছুক্ষণ আগেই তার ঋতুচক্র শুরু হয়ে গ্যাছে। আবার মনে পড়ে, শ্বেতফুলের ঝরে যাওয়া, সে আগে কখনো দ্যাখে নি।
রাতের দ্বিতীয় প্রহরের শেষভাগে নীলম দেখতে পায় মাটির ওপর দিয়ে জ্যোৎস্নার কাপড় পরা পরীটি উড়ে যাচ্ছে। সঙ্গে কিন্নর। অপূর্ব মমতায় কিন্নর আর পরী পরস্পরকে ধরে রেখেছে আলিঙ্গনে। নিশি না পরী এই ধন্দ কাটে রঘুরামের বাড়ির ‘নেলির’ ডাকে। শহর থেকে রঘুরামের ছেলে জয়রাম, একটা সাদা তুলো তুলো কুত্তা নিয়ে এসেছে। আদর করে নাম রেখেছে ‘নেলি’। সারাদিন-রাতের বেশিরভাগ সময়ই আলসেমিতে কাটে তার।বাদ, ওই পূর্ণিমার রাতগুলো। চন্দ্রালোক যতো বাড়ে, ততো তার কুঁই কুঁই কান্নার সঙ্গে পাড়ার সমস্ত সারমেয় পুঙ্গবরা ‘হুঁউউউউ’ ‘ঘ্রাঁ আ আ আ উ’, ‘ঘৌ ঘৌ’ ইত্যাদি যতোরকম ভাষায় সম্ভব, তাকে আশ্বাস দিতে থাকে। গত দুমাস ধরে এইরকম রাতগুলোয় নীলমের নৈশ অভিসার শুরু হয়েছে। রামলীলা ময়দানে, রাবণ পোড়ানোর দিন, বুকে ব্যাজ এঁটে মানুষের ভীড় সামলাচ্ছিল ‘সে’৷ । ‘তার’ হাতের ইশারামতো জায়গাতেই দাঁড়িয়েছিল নীলমদের পুরো পরিবার। রাবণ-পোড়ার র সময় একটা উঁচু আতসবাজি ‘হুইশ’ করে রাবণের বুক ছুঁতেই তুমুল উল্লাসের মধ্যে নীলমের কানে আসে

‘ইস্ বার জরুর হো জায়েগা’
‘ক্যায়া?’ বলে ঘাড় ফেরাতেই নীলম দ্যাখে বুকে ব্যাজ আঁটা সে-ই ভলাণ্টিয়ার।
‘আরে কুছ্ নহীঁ ছোড়ো ক্যায়া তুম্ রওশনি হো?’
‘নহীঁ নীলম কিঁউ?’ চটে উঠে মুখ ঘুরিয়ে নেয় নীলম
‘এ্যায়সে হি ম্যাঁয় হুঁ শশাঙ্ক শশাঙ্ক মতলব জানতি হো? চন্দা’
বলেই গুনগুনিয়ে গেয়ে ওঠে,

‘নীলে নীলে অম্বর পর
চান্দ যব আয়ে

বাঃ বেশ গায় তো! অতো আলো, বাজির আওয়াজ, মানুষের উল্লাসের মধ্যেও মনে হয় নীলমের।
তারপরের কোজাগর পূর্ণিমার সন্ধেয় ঘরের বাইরে আলপনা দিতে গিয়ে থমকে দাঁড়িয়েছিল নীলম। বাড়ির উল্টোদিকের পোস্টের লাইটটা কেটে গ্যাছে পুজোর আগেই। তার পিছনের ‘ছত্তিস নাম্বার’ খালি প্লটের ঝুঁঝকো অন্ধকারে দাঁড়িয়ে ছেলেটা। বাইকে হেলান দিয়ে তার দিকেই তাকিয়ে হাসছে আর আকাশের চাঁদ আটকে আছে তার শার্টের পকেটে। নীলম দাঁড়িয়ে পড়তেই বাইক ছেড়ে এগিয়ে এলো শশাঙ্ক্। পকেট থেকে চাঁদটা খুলে নীলমের আলপনার ওপর গড়িয়ে দিলো। পায়ের নীচটা আলো হয়ে উঠতে উঠতে নীলম শুনলো শশাঙ্ক গাইছে

‘তেরে হোঠোঁ পে হ্যায়/ হুস্ন কী বিজলিয়াঁ
তেরে গালোঁ পে হ্যায়/ জুলফ কী বদলিয়াঁ

আশপাশের বাড়ি থেকে সেদিন যারা নীলমকে দেখেছিলো তারা প্রত্যেকে বলেছিলো কোজাগরের আলোস্নান ক’রে সপসপে নীলম নাকি উজ্জ্বল গ্রিক গডেস ভেনাসের মতো হয়ে উঠেছিল। কিন্তু শশাঙ্কের কথা কেউই কিছু বলে নি। তারপর থেকে প্রতি পূর্ণিমার রাতে নীলম, চাঁদনীর সিঁড়ি বেয়ে শশাঙ্কের সঙ্গে অভিসারে বেরোয়। তখন তাকে দেখতে পায় শুধুমাত্র জয়রামের সাদা কুকুর নেলি আর কুঁতিয়ে কুঁতিয়ে কাঁদে।

সেদিন ছিল অঘ্রাণ মাসের পূর্ণিমা। গুরু নানক দেবের মর্ত্যে পদার্পণ তিথিটি। মধ্যরাতে, আলোয়-আতসবাজিতে ভেসে উঠছিলো জসপ্রীত-জসলীনদের বাড়িটা। ভিকি-সোনুর কচি কচি গলা কানে আসছিলো অঘ্রাণের হিম কুয়াশার তাঁবু পেরিয়ে। নিঃসঙ্গতা কাটিয়ে গুরুদ্বার থেকে প্রবাহিত কীর্তন ছড়িয়ে পড়ছিল শান্ত শীতালু চরাচরে। এক প্রশান্ত নির্লিপ্তির আবেশ যেন। চাঁদ, সে রাতে দেরি করে উঠেছলো Í না, রাস্তা পার ক’রে ঢুকে পড়েছিল ‘তাম্রলিপ্ত সিটি’-র চব্বিশতলা অর্ধ-সমাপ্ত টাওয়ারগুলোয়, তা আর খেয়াল করে নি কেউ। শুধু রাতের খানা শেষ ক’রে কম্বলে সেঁধোবার আগে ‘তা¤্রলিপ্ত সিটির’ সিকিউরিটি সুপারভাইজার মকবুল, চাঁদকে নাকি দিল্লি-মেরঠ এক্সপ্রেসওয়ে ধ’রে তীরবেগে ছুটে যেতে দ্যাখে। তার রূপোলি চুন্নি থেকে বাষ্পর ধোঁয়া উঠছিলো। আর, বাষ্প থেকে আকাশে উড়ছিলো অগুনতি সাদা কাক। মকবুলের বিশ্বাস, কাকগুলো সব বোবা ছিল। কারণ, সে সাইট থেকে তাদের দিকে এলোপাথাড়ি ইঁট ছুঁড়লেও তারা কোনরকম শব্দ করে নি।তারপরেই শুরু হয় নেলির কুঁতিয়ে কুঁতিয়ে ভয়ার্ত কান্না। চলতেই থাকে অনন্তের পথ ধরে। নেলির গোঙানি কখন থেমেছিলো, শীতের ওমভরা বিছানা থেকে খেয়াল করে নি কেউ।

তার পরদিন যা ঘটেছিলো তার জন্য প্রস্তুত ছিলো না রাস্তার এপারে থাকা চান্দেরিয়া,বরখাপুর, মুনারগাঁও, ঝিঙ্গোলা, খেরি-বাওলি বস্তির মানুষজন। এক অশৈলি ঘটনার সাক্ষী হয়ে তারা ভয়ে কুঁকড়ে উঠেছিল। অন্যান্য দিনের মতোই সেদিনও ভোরবেলাতে শুরু হয়েছিল গ্রামের জীবন। বরখাপুরের নীলম আর খেরি-বাওলির মিতু, ঘুম থেকে উঠলে সবিস্ময়ে তাদের বাড়ির লোকজন দ্যাখে, তাদের দীর্ঘ বিনুনি মাঝখান থেকে কেউ শাণিত কাঁচি দিয়ে কেটে নিয়েছে। কর্তিত অংশটার কোন চিহ্ন কোথাও নেই। খুব দ্রুত এ খবর ছড়িয়ে পড়েছিল নিস্তরঙ্গ গ্রাম গুলোয়। আর, চান্দেরিয়া গ্রাম থেকে জয়রাম, লখন, মহেশরা সকালেই বেরিয়েছিল নেলির খোঁজে। ভোর থেকেই নেলিকে দ্যাখে নি কেউ। অবশষে দিল্লি-মেরঠ এক্সপ্রেসওয়ের ওপর নেলির প্রাণহীন দেহটা খুঁজে পায় তারা। নেলির কানের পিছনে, কষের দু পাশে ছিল শুকিয়ে যাওয়া রক্তধারা।

কিছুদিন আলোড়িত হলেও এই ঘটনা শুধু শহরের প্রান্তে থাকা ওই গ্রামগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়। তারপর, সংবাদমাধ্যম, শান্তি কমিটি, প্রশাসনিক ফাইল আর মানুষের ফিসফাস থেকে দূরে এক শুকনো জ্যোৎস্নার ওপর সময়ের ধুলোর পর্দা নেমে আসে ধীরে।

The post জোছনার বালিয়াড়ি appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3lffDFe