Tuesday, April 7, 2020

লঘু অপরাধে সাজাভোগকারী ৩৭০০ আসামিকে মুক্তির প্রস্তাব https://ift.tt/eA8V8J

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকির কারণে লঘু অপরাধে দণ্ডিত আসামিদের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কারাগারের বন্দীদের দেওয়ার একটি প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করলে তিনি এ নির্দেশ দেন।

কারা কর্তৃপক্ষ লঘু অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত সর্বোচ্চ এক মাস থেকে এক বছর সাজা ভোগ করেছেন, এমন প্রায় ৩ হাজার ৭০০ জনের তালিকা মুক্তির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকেই যাচাই–বাছাই করে আসামিদের মুক্তি দেওয়া হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ বিষয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শুধু লঘু অপরাধে দণ্ডিত আসামিদের মুক্তির বিষয়ে বলেছেন। ছোট অপরাধ, অসুস্থ কিংবা ভালো ব্যবহার বা কাজ করেছেন, এমন বন্দীদের সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে। ধর্ষণ বা হত্যা মামলার কোনো আসামিকে মুক্তি দেওয়া হবে না। কতজন মুক্তি পেতে পারেন, সেটা বিবেচনা করা হবে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত ও প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরের পর।

প্রসঙ্গগত, করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, এমনকি ভারতেও কিছু বন্দীকে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। ইরানে বহু বন্দীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ব্রিটেন সরকারও এই মহামারির কারণে জেল থেকে কিছু বন্দীকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও কারাবন্দীদের মধ্যে যাঁরা বয়স্ক এবং যাঁদের নানা ধরনের স্বাস্থ্যসমস্যা আছে, তাঁদের ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে কারা কর্তৃপক্ষ চাইছে, লঘু অপরাধের আসামিদের পাশাপাশি ৫৬৯ ধারা অনুসারে যাঁরা ২০ বছর সাজাভোগ ইতিমধ্যে শেষ করেছেন, তাঁদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হোক। এ ধারায় হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ ১ হাজার ৪২০ জনের নাম রয়েছে।

কারাগারের তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কারাবিধির ৫৬৯ ধারা অনুসারে কোনো বন্দী তাঁর সাজার মেয়াদের দুই-তৃতীয়াংশ খাটলে, সেই বন্দীর বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ না থাকে, তবে সরকার চাইলে বিশেষ সুবিধায় তাঁকে মুক্তি দিতে পারে। এ জন্য রাষ্ট্রপতির কোনো অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না। এই সুবিধায় মুক্তি দেওয়ার জন্য গত কয়েক বছর বছর দেশের সব কারাগার থেকে বন্দীর তালিকা তৈরি করা হয়। বন্দীদের বয়স, সাজার ধরন, মেয়াদ, শারীরিক অবস্থা এবং কারাগারে তাঁরা কোনো অপরাধ করেছেন কি না, তা বিবেচনায় নিয়ে নাম চূড়ান্ত করা হয়। সেই তালিকা খতিয়ে দেখার জন্য (ভেটিং) আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর তা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলে যেকোনো সময় বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়।

কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, যাঁরা ২০ বছর সাজা খেটেছেন, সেই বন্দীদের যেই তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে, তা বিবেচনা না করা হলে কারা বিদ্রোহ হতে পারে। তাই বিষয়টি বিবেচনার জন্য তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের কাছে গত ডিসেম্বরে একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এসব করোনা সংক্রামককে সামনে রেখে নয়। এসব তালিকা তাঁরা নিয়মিত পাঠান। তাঁরা বলেন, ‘ওই তালিকা ধরে আমরা মাদক ও খুনের মামলা বাদ দিয়ে হয়তো বড়জোর তিন শ–জনের একটি তালিকা করতে পারি। তা–ও যাচাই–বাছাই করে সিদ্ধান্তে হবে।’

কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, কারা অধিদপ্তর থেকে ৫৯৪ বিধিতেও ২১ জন অচল–অক্ষম, অন্ধ, পঙ্গু ও দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত বন্দীর মুক্তির প্রস্তাব জেলা কমিটি হয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এর আগে ৩ হাজার ৯২ জন হাজতির জামিনযোগ্য ধারায় বিজ্ঞ আদালত চাইলে মুক্তি দিতে পারেন, এই তালিকা কারা অধিদপ্তর পাঠিয়েছে। তবে কিছু নির্ভর করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর।

এর আগে ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এক হাজারের বেশি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বন্দী মুক্তি পেয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দী থাকা বৃদ্ধ, নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ—এই পাঁচ শ্রেণির এক হাজার বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

The post লঘু অপরাধে সাজাভোগকারী ৩৭০০ আসামিকে মুক্তির প্রস্তাব appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2yEenoF

No comments:

Post a Comment