মাওলানা মো: ওবায়দুল্লাহ
(১০ম রমজান)
পবিত্র রমজানের জরুরী মাসায়েল: রাহমাতে সরোআরে আলম হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূত পবিত্র জবানীতে ঘোষিত হয়েছে-“যে ব্যক্তি ঈমান (অর্থাৎ অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকৃতি ও বাস্তব আমলের প্রতিফলন ঘটানোর মাধ্যমে) ও ইহতিসাব অর্থাৎ আত্ম-সমালোচনা, দৃঢ় পর্যবেক্ষণ ও হিসাব-নিকেশ করে এবং সাওয়াবের আশায় রোজা রাখবে সে ব্যক্তির পিছনের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।” বুখারী: ৩৮, মুসলিম: ৭৬০। এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, রমজানের রোজা রাখতে হবে অত্যন্ত হিসাব করে অর্থাৎ জরুরী মাসায়েল গুলো প্রত্যেক মুসলিমকে আবশ্যিকভাবে জানা একান্ত কর্তব্য।
রোজার মাস’আলা-১: কেউ সাহরী শেষে পান মুখে দিয়ে চিবাতে চিবাতে ঘুমিয়ে গেলে এবং মুখে পান থাকা অবস্থায় প্রভাত হলে রোজা শুদ্ধ হবে না; কিন্তু সে এ রোজা ভাঙতেও পারবে না। অবশ্য পরে এর পরিবর্তে একটি কাযা রোজা রাখতে হবে। তবে কাফ্্ফারা ওয়াজীব হবে না। সুত্র: দুররুল মুখতার/ফতো’আয়ে শামী: ২/১১০।
মাস’আলা-০২: কুলি করার সময় অসতর্কবশত রোজার কথা স্মরণ থাকা সত্ত্বেও গলার ভেতর পানি চলে গেলে। অথবা ডুব দিয়ে গোসল করার সময় হটাৎ নাক বা মুখ দিয়ে গলার ভেতর পানি চলে গেলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। কিন্তু সে ব্যক্তি পানাহার করতে পারবে না। এ রোজার কাযা আদায় করা ওয়াজীব হবে তবে কাফ্্ফারা আদায় করা ওয়াজীব হবে না। সুত্র: ফতো’আয়ে আলমগীরী: ১/২০২; ফতো’আয়ে শামী/দুররুল মুখতার: ২/১১০।
মাস’আলা-৩: রোজাদারের অনিচ্ছায় এমনিতেই বমি হয়ে গেলে, বেশি হোক বা কম হোক এতে রোজা নষ্ট হয় না। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে মুখভরে বমি করলে এতে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। সুত্র: হিদায়া: ১/২১৮, দুররুল মুখতার: ২/১২০।
মাস’আলা-৪: যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে সামান্য বমি বের হয়ে আবার অনিচ্ছাকৃতভাবে গলার ভেতরে চলে যায় তবে রোজা নষ্ট হয় না। অবশ্য ইচ্ছাকৃতভাবে সামান্য বমি গিলে ফেললে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। (অথবা মুখভর্তি পরিমাণ বমি বের হয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে গলার ভেতরে চলে গেলেও রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু পানাহার না করে সে ব্যক্তি সারাদিন অতিবাহিত করবে; পরে সেই রোজার কাযা করবে)। সুত্র: ফতো’আয়ে আলমগীরী: ১/২০৩-২০৪, দুররুল মুখতার: ২/১২১। মাস’আলা-৫: কেউ যদি কংকর, লোহা বা সীসার গুটি বা পয়সা গিলে ফেলে অথবা এমন যেকোনো জিনিস যা মানুষ সাধারণত খাদ্যরুপে খায় না, ওষুধরুপেও সেবন করে না। সে ব্যক্তি এর পরিবর্তে একটি রোজা কাযা করবে। আর মানুষ যা খাদ্য ও পানীয়রুপে যা পান করে এবং ওষুধরুপে যা সেবন করে এমন কিছু খেয়ে ফেললে তাকে রোজার কাযা ও কাফ্্ফারা দুটিই আদায় করতে হবে। সুত্র: হিদায়া: আল্লামা বুরহানুদ্দীন: ১/২১৯; ফতো’আয়ে আলমগীরী: ১/২০২।
মাস’আলা-৬: রোজা রেখে দিনের বেলায় স্ত্রী সহবাস করলে এবং পুরুষের খাতনা স্থান স্ত্রীর যোনীদ্বারে প্রবেশ করলে, বীর্যপাত হোক বা না হোক, স্বামী-স্ত্রী উভয়ের রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। তখন তাদের রোজার কাযা কাফ্্ফারা উভয়টি ওয়াজীব হয়ে যাবে। সংকলক: ইসলামী গবেষক ও প্রাবন্ধিক
The post পবিত্র রমজানে সাওমের জরুরী মাসায়েল appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3dIeUbj
No comments:
Post a Comment