সুনামগঞ্জের শাল্লায় ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতনে জড়িদের দ্রুত গ্রেফতারসহ কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছে Research and Empowerment Organization-REO এবং Human Rights Allaince Bangladesh । তারা সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের অভিজ্ঞতার আলোকে এগার দফা সুপারিশে উত্থাপন করেছেন এবং তা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ বুধবার রাত ৮টায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে এই আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন Research and Empowerment Organization-REOর চেয়ারম্যান প্রফেসর চন্দন সরকার তিনি সহ গত ২৫ মার্চ ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন Human Rights Allaince Bangladeshর প্রেসিডেন্ট, মাহবুব হক, রাজেশ নাহা- জেনারেল সেক্রেটারী রিও, বিমান তালুকদার-গায়ক এবং সাধারন সম্পাদক, মুক্তচিন্তা, সিলেট এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত সুপারিশে বলা হয়,
১। জাতিগত সংখ্যালঘু ও হিন্দু গ্রাম আক্রমণ ও লুটপাটের মূল হোতাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। ওই ঘটনা রুখতে ব্যর্থ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তপূর্বক আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
২। সব ধর্ম অবমাননা বন্ধ করতে হবে সাথে সাথে ধর্ম নামে নিরাপরাধ মানুষের উপর হামলা বন্ধ এবং হেফাজতের হামলা্য ও নির্যাতনের পর নোয়াগাঁও সহ জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিশ্বাস ও আস্থায় চিড় ধরেছে, তাদের সেই বিশ্বাস ও মনোবল ফিরিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩।ঝুমন দাশ আপনের মা নিভারানী দাশের মায়ের মামলাটি থানায় এজাহার ভুক্ত না করায় তার উপর মানবাধীকার লংঘন করা হয়েছে বলে প্রতিয়মান হয়, এই ধরণের মানবাধিকার লংঘনে জড়িত উক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে আইনের ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ জানাচ্ছি।
৫। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপকরন প্রদান এবং নগদ আর্থিক সহায়িতা প্রদান সহ নারী ও শিশুদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৬। যে সকল নারী ও শিশুরা এখনও ট্রমার মধ্যে আছে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সাইকোলজিক্যাল counseling এর ব্যবস্থা করতে হবে।
৭। আক্রান্তদের যথাযথ ক্ষতি নিরূপন করে সেই মোতাবেক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং যে সকল বাড়ীঘর আক্রান্ত হয়েছে তা পুন:নির্মান করে দিতে হবে এবং দূর্গম ওই এলাকায় একটি স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করতে হবে।
৯। জলমহল নিয়ে ২০২০ সালে ২২শে অক্টোবর জুম্মন দাসেরা যে প্রশাসনের সর্বস্তরে চেষ্টা করার পরেও জলমহল নিয়ে কোন সুরাহা না হওয়ায়, স্থানীয় মেম্বার আধিপ্রস্থ বিস্তার করে এবং দীর্ঘস্থায়ী আধিপ্রস্থ বিস্তার করার সার্থে ফেসবুক প্রপাগান্ডা নাটক সাজানো হয়। এই জলমহলের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে স্থানীয় ধর্মীয় জাতিগ জমিগত সাংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান রেখে হাওররের ঐতিহ্য রক্ষা করে হাওর ব্যবস্থাপনা প্রতিস্থা করতে হবে।
১০। নামবিহীন কেসের কি কোন সুরাহা হবে? নামবিহীন কেস দিয়ে হয়রানী বন্ধ করতে হবে।
১১। ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং জীবন ধারনের জন্য কাজ করতে বাধা সহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো তদন্ত সাপেক্ষ্যে ঝুম্মন দাসকে মুক্তি দিয়ে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং ময়ানবাধিকার চর্চার ক্ষেত্র প্রসারিত করতে হবে।
মূল বক্তব্যে বলা হয়, ফেসবুকে মিথ্যা স্ট্যাটাস দিয়ে ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে সংখ্যালঘুদের বাড়ী ঘরে হামলা ও আগুন লাগানোসহ সংখ্যালঘু নির্যাতনের একটি পরিচিত কৌশল যা শুরু হয়েছে ২০১২ সালে রামুর মাধ্যমে, তখন যদি ব্যবস্থা নিত তাহলে এত অত্যাচার দেখতে হতো না।
পূর্বে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনার ধারাবাহিকতায় শাল্লায় সংখ্যালঘু নির্যাতন, হয়রানি ও মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন চাইলেই এ ঘটনা রদ করা যেত। কারণ ঘটনার আগের দিন স্থানীয়ভাবে তারা মিটিং মিছিল করেছে। পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন তা জানতো কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ধর্মীয় উম্মাদনা ছড়িয়ে এক শ্রেণীর মানুষ আপামর মানুষের অন্তরে সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
রাজনৈতিক দলের মদদ ছাড়া এই সাম্প্রদায়িক শক্তির বেড়ে ওঠা সম্ভব নয় দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সকল রাজনৈতিক দল ও সরকারের মধ্যে কিছু কিছু লোক যারা মদদ দেয় তাদের এই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মদদ দেওয়া বন্ধ করতে হবে, মানবিক ও অসাম্প্রদায়িক প্রশাসন গড়ে তুলতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত রাখার জন্য সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক সেলিম সামাদ, ব্যরিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া, ব্যরিস্টার তাপস কান্তি বল, শ্রী শ্রী জন্মাস্টমী উদযাপন পরিষদের প্রেসিডেন্ট গৌরাজ্ঞ দে, অরুনাংশ দত্ত, ডাঃ দেব প্রসাদ পাল, ভিকটিম ঝুম্মনের ভাই নুপুর দাস, কপিল কৃষ্ণ বাবু, অ্যাডভোকেট দেবাশু দাস, রামানুজ দাস, বিজীত পাল, গৌতম ভট্টাচার্য, রাজেশ নাহা, সুবোধ, রাছেল, GHRDর চেয়ারম্যান Sradhanand Sital এবং সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা। তারা সবাই অনতি বিলম্বে দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির বিধানের কথা বলেছেন।
The post সুনামগঞ্জের শাল্লায় সংখ্যালঘু নির্যাতনে জড়িদের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2QeA8Vr
No comments:
Post a Comment