Wednesday, September 22, 2021

খলিশাখালি সহস্রাধিক বিঘা জমি দখলের ঘটনায় সরেজমিনে মামলার তদন্তে পিবিআই https://ift.tt/eA8V8J

দেবহাটা ব্যুরো: দেবহাটায় ভূমিহীন জনগোষ্ঠীর ব্যানারে সহ¯্রাধিক বিঘা বিলান জমি ও মৎস্য ঘের বিস্তৃত গোটা খলিশাখালি এলাকা রাতের আঁধারে জবরদখল, হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার সত্যতা অনুসন্ধানে সরেজমিনে তদন্ত করেছেন জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে মামলার তদন্তভার প্রাপ্ত জেলা পিবিআই’র উপ-পরিদর্শক হাবিবুর রহমান হাবিবের নেতৃত্বে ৫/৬ জনের একটি প্রতিনিধি দল সরেজমিনে গিয়ে মামলার তদন্ত করেন। স্থানীয়রা জানান, তদন্তকালে খলিশাখালিতে বর্তমানে অবস্থানরত এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বিষয়টি নিয়ে শোনাবোঝা ও বিস্তীর্ণ মৎস্যঘেরগুলোর ছবি ও ভিডিও ধারন করেন তদন্তকারীরা।

জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সেখানে অবস্থানরতরা নিজেদেরকে ভূমিহীন এবং খলিশাখালির ওই বিস্তীর্ণ সম্পত্তি আইনানুযায়ী সরকারের প্রাপ্য বলে দাবী করেন। মূলত সেই দাবী থেকেই তারা খলিশাখালির দখল নিয়েছেন বলে পিবিআই কর্মকর্তাদের জানান। তারা তদন্তকারী কর্মকর্তাদের বলেন, জমিদার চন্ডীচরণ ঘোষ ১৯২৭ সালে ডিএস রেকর্ডে ওই সম্পত্তি তার চারজন প্রজা তাহের সানা, নবীন বিশ্বাস, গনেশ চন্দ্র স্বর্ণকার ও সহাদেব সরদারকে দিয়ে যান। অথচ জালিয়াতি করে সেই জমি পরবর্তীতে দখলচ্যুত প্রভাবশালীরা নিজেদের নামে এসএ রেকর্ড করিয়ে ভোগদখল করে আসছিল।

সেজন্য প্রকৃত মালিক নির্ধারণে উভয়পক্ষের কাগজপত্র যাচাইয়ের উদ্যোগ নিতে জেলা প্রশাসকের প্রতি অনুরোধ জানান তারা। কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে যদি মালিকানা দাবিকারী দখলচ্যুতরা বৈধ হন, তাহলে স্বেচ্ছায় ভূমিহীনরা খলিশাখালির দখল ছেড়ে দেবেন বলেও পিবিআইকে সাফ জানিয়ে দেন তারা। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তারা মামলার বাদী পক্ষের সাথে স্বাক্ষাৎ করার উদ্দেশ্যে খলিশাখালি ত্যাগ করেন।

এদিকে বিনিময় সূত্রের বুনিয়াদে সিএস থেকে এসএ রেকর্ড এবং পর্যায়ক্রমে বিএস ও প্রিন্ট পর্চায় গেজেটভুক্ত ওই সম্পত্তির প্রায় ৩শ’ মালিকের পক্ষে শিমুলিয়ার কাজী সুরুজ ওয়ারেশ বলেন, খলিশাখালি নামীয় ৪৩৯.২০ একর (১৩শ’ ২০ বিঘা) জমির মালিক ছিলেন চন্ডীচরণ ঘোষ। সেখান থেকে বিভিন্ন কোবলা দলিল, পাট্টা দলিল ও কোর্টের রায় মোতাবেক কলিকাতা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের বিনিময় দলিল মূলে দেবহাটার তেজেন্দ্রনাথ চৌধুরীর পুত্র সুরেন্দ্রনাথ চৌধুরীর সাথে বিনিময় করেন। এসএ রেকর্ড পরবর্তী উক্ত বিনিময় দলিলের গ্রহীতা ছিলেন আমার দাদা কাজী আব্দুল মালেক। সে মোতাবেক আমিসহ আমার দাদার অন্যান্য ওয়ারেশগণ এবং ক্রমিক হস্তান্তর সূত্রে অপরাপর মালিকগণ বর্তমানে ওই সম্পত্তির বিএস রেকর্ড প্রাপ্ত হলে বর্তমান মালিকদের নামে প্রিন্ট পর্চাসহ সমুদয় সম্পত্তির গেজেট প্রকাশিত হয়। আমরা মালিকপক্ষ দীর্ঘকাল ধরে ওই সম্পত্তি ভোগদখল ও সেখানে মৎস্য ঘের করে আসছিলাম।

গত ১১ সেপ্টেম্বর ভোররাতে স্থানীয় কিছু ভূমিহীন নামধারী এবং জেলা ও জেলার বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ৭ শতাধিক ব্যক্তি অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে লীজগ্রহীতা ও মৎস্য ঘেরের কর্মচারীদের মারধর করে জোরপূর্বক সমূদয় সম্পত্তি জবরদখলে নেয় এবং লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ লুট এবং ঘেরের বাসাবাড়িগুলো ভাংচুর করে। সুরুজ ওয়ারেশ আরও বলেন, খলিশাখালির সম্পত্তির মালিকানার স্বপক্ষে যাবতীয় কাগজপত্র আমাদের রয়েছে। আমরা সেসব কাগজপত্র আদালতে এবং তদন্তকারী পিবিআই কর্মকর্তাদের কাছে উপস্থাপন করেছি। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আশা করি তদন্তকারী পিবিআই কর্মকর্তার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবেন এবং আদালতের রায়ে জবরদখলকারীরা উচ্ছেদ হবে ও আমরা প্রকৃত মালিক হিসেবে আমাদের জমি ফিরে পাবো।

এব্যাপারে বিস্তারিত জানতে মামলার তদন্তকারী পিবিআই’র উপ-পরিদর্শক হাবিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইলে এ সংক্রান্ত কোন কথা বলবেন না উল্লেখ করে তথ্য নিতে হলে সংবাদ কর্মীদের সাতক্ষীরার পিবিআই কার্যালয়ে যাওয়ার কথা বলেন।
উল্লেখ্য, খলিশাখালি দখলের ঘটনার পরদিন মালিকপক্ষের তরফ থেকে সখিপুরের আনছার আলী বাদী হয়ে সাতক্ষীরার আদালতে সহ¯্রাধিক বিঘা জমি ও মৎস্য ঘের জবরদখল এবং লুটপাটের ঘটনায় একটি মামলা (নং-১৩২/২১) দায়ের করলে আদালত পিবিআইকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। যার প্রেক্ষিতে বুধবার পিবিআই কর্মকর্তারা সরেজমিনে গিয়ে মামলাটির তদন্ত করেন।

The post খলিশাখালি সহস্রাধিক বিঘা জমি দখলের ঘটনায় সরেজমিনে মামলার তদন্তে পিবিআই appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3nZPafV

No comments:

Post a Comment