’সাতক্ষীরা পৌরসভাকে একটি জবাবদিহিতামূলক ও জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই। এজন্য নিয়মিত জনগণের মুখোমুখি হয়ে পৌরসভার আয়-ব্যয়সহ যাবতীয় পরিকল্পনা জন সাধারণের সামনে তুলে ধরতে চাই। আমি সমালোচনাকে সাদরে গ্রহণ করি, কিন্তু সে সমালোচনা হতে হবে তথ্য ও যুক্তি নির্ভর’, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), সাতক্ষীরার সাথে আজ এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র মো: তাজকিন আহম্মেদ। তিনি বলেন, আমাদের স্বপ্ন অনেক। আমরা সাতক্ষীরা পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশন হিসেবে দেখতে চাই, তবে তার জন্য কাজ করতে হবে।
সনাক সভাপতি পবিত্র মোহন দাশের সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় সনাকের পক্ষ থেকে করোনাকালীন সচেতনতা ও সাহায্য সহযোগিতায় পৌর উদ্যোগ এবং কে এফ ডব্লিউ এর অর্থায়নে সাতক্ষীরা পৌরসভায় বাস্তবায়নাধীন ক্রিম প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। এ বিষয়ে পৌর মেয়র জানান, করোনা আক্রমণের শুরু থেকেই পৌরসভা নগরের নি¤œ আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাড়িয়েছে। এ পর্যন্ত সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের পাশাপাশি পৌরসভার নিজ তহবিল থেকে প্রায় ১৫০০ ব্যক্তিকে নগদ অর্থ সাহায্য দেওয়া হয়েছে। টাকার অংকে যা ২০ লাখের মতা। এর বাইরে পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রচুর মাস্ক, হ্যান্ড সেনিটাইজার বিতরণের পাশাপাশি মাইকিং করে জন সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা চালানো হয়েছে।
ক্রিম প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনার শুর”তেই তিনি টিআইবি, বিশেষ করে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এই প্রকল্পের অর্থ ছাড় অনেক দিন থেকে করোনাসহ বিভিন্ন কারণে আটকে ছিল। টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক উদ্যোগী হয়ে এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে অর্থায়ণকারী সংস্থাকে চিঠি লিখলে, তাঁরা দ্র”ত পদক্ষেপ নেয়। এবং ইতিমধ্যে ৫ হাজারটি পানির মিটার বসানোর জন্য ৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ছাড় দিয়েছে। এগুলো বসানো গেলে পানি বিতরণের ক্ষেত্রে যে সিস্টেম লস রয়েছে তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এ কাজের জন্য টেন্ডার দেওয়া হবে। এছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় পানির লাইন বসানো, ড্রেইনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ডাস্টবিন নির্মাণ, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের আওতায় ৫টি সাব ট্রান্সফার স্টেশন তৈরি, রাস্তা মেরামত ও কেষ্ট ময়রার ব্রিজ পুন: নির্মাণসহ বেশ কিছু উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এসব উন্নয়ণ কর্মকান্ড বাস্তব রূপ লাভ করবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে নগরের প্রায় ৭০% ভাগ পরিবার পৌর সাপ্লাইয়ের পানির আওতাভুক্ত রয়েছে। আরো দুটি প্লান্ট তৈরি করা গেলে নগরীর শতভাগ পরিবার এই সুবিধার আওতায় আসবে। এর জন্য ব্যয় হবে ২৮ কোটি টাকা। অনেক সময় অনেক এলাকায় পানি পাওয়া যায় না বলে যে অভিযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে তিনি নিজের ঘাড়ে দায় নিয়ে বলেন, মূলত পাম্প স্টেশনের দায়িত্বে যারা রয়েছে, তাদের গাফিলতির কারণেই এই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এদেরকে দায়বদ্ধতার মধ্যে আনতে পানি বিভাগের সুপারকে নিয়মিত স্টেশনগুলো ঘুরে দেখতে হবে।
সবশেষে তিনি পৌরসভার সবক্ষেত্রে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য পৌরসভার পরবর্তী সভায় সনাকের ২ জন করে সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করার পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান। তিনি সনাক ও টিআইবিকে সভায় গৃহিত সিদ্ধান্তের আলোকে নিয়মিত ফলোআপ করার আহ্বান জানান। যে সিদ্ধান্তগুলো গৃহিত হয়, সেগুলো নিয়ে কাজ করতে বলেন।
সবশেষে সনাক সভাপতি মেয়র মহোদয়সহ উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান।
প্রাণবন্ত এ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: কায়সারুজ্জামান হিমেল, ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মারুফ আহম্মেদ, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর অনিমা রানী মন্ডল, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমূল করিম, বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মো: জিয়াউর রহমান, স্বাস্থ্য সহকারী সুজিত কুমার নাথ, সনাক সহ-সভাপতি মো: তৈয়েব হাসান বাবু, সনাক সদস্য এম এ হামিদ, ড. দিলারা বেগম, পল্টু বাসার ও ইয়েস দলনেতা হুমায়রা ফারজানা। সভাটি পরিচালনা করেন টিআইবি’র এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মো. রবিউল ইসলাম।
The post সনাক সাতক্ষীরার সাথে পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে মতবিনিময় appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3tZOtV6
No comments:
Post a Comment