Monday, August 30, 2021

দু:সহ স্মৃতিতে বিভীষিকার আগস্ট https://ift.tt/eA8V8J

সুভাষ চৌধুরী
জাতীয় জীবনে আগস্ট আমাদের বুকে নানা ক্ষত সৃষ্টি করেছে। এই ক্ষত থেকে যেন বের হওয়াই যাচ্ছে না। এমন আগস্টের কথা মনে পড়লেই তো আতংক বেড়ে যায়। সেদিনের সেই আগস্ট আর চাই না। এমন আগস্ট যেনো আর বাঙালির জীবনে না আসে। এমন আগস্ট আসুক যেদিন থাকবে রৌদ্র করোজ্জ্বল অথবা বৃষ্টি¯œাত প্রকৃতির চিরায়ত রূপ রস গন্ধ নিয়ে। এমন মন হারানো দৃশ্য যেন বাংলাদেশকে আলোকিত করে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই ভয়াবহ দিনগুলির কথা জাতি কোনদিনও ভুলে যাবে না। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৫ই আগস্ট ভোরে একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের উপর্যুপরি গুলির ঝাঁঝরায় সপরিবারে নিহত হন। সদ্য স্বাধীন হওয়া বাঙ্গালি জাতির জনকের মরদেহ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে তার বাড়ির সিঁড়িতে। বাঙালি জাতি এ দৃশ্য দেখে আতংকে কেঁপে ওঠে। সমগ্র বিশ^ও স্তম্ভিত হয়ে যায়। যে জাতির জন্ম দিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে তাঁরই সরকারের কয়েকজন সেনাসদস্য হত্যা করে হাত রঞ্জিত করলো।এমন ঘৃণিত দিনটি আর কোনদিন না আসুক।

৭৫ এর এই কালরাতে ঘাতকদের বুলেটের মুখ থেকে প্রাণে রক্ষা পেয়ে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। তারা দেশের বাইরে থাকায় তাদের জীবন রক্ষা পায়। এটা তাদের সৌভাগ্য। জন্মদাতা পিতামাতা এবং ভাই ও আত্মীয় স্বজন সহ পরিবারের সব সদস্যকে হারিয়ে তারাও হয়ে পড়েন দিশেহারা। এই কলংক থেকে মুক্তি পেতে জাতিকে বহুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। ঘাতকদের বিচার হয়েছে। তাদের ফাঁসির আদেশ হয়েছে। কয়েক ঘাতকের ফাঁসি কার্যকরও হয়েছে। পলাতক ঘাতকদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করার অপেক্ষায় রয়েছে জাতি।
২০০২ সালের ২৬ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ার হিজলদিতে মুক্তিযোদ্ধা শেখ আতিয়ার রহমানের পতœী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগনেত্রী মাহফুজা খাতুন কয়েক দুর্বৃত্তের গণধর্ষণের শিকার হন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে তিনি কাতরাতে থাকলে গ্রামবাসী গভীর রাতে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন।কলোরোয়ায় মুক্তিযোদ্ধাপতœী আওওয়ামী লীগ নেত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়ে সাতক্ষীরায় চিকিৎসা গ্রহন করছেন ৩০ আগস্ট এমন খবর পেয়ে খুলনা সফররত বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত চলে আসেন সাতক্ষীরায়।

 

তিনি মাহফুজার চিকিৎসা গ্রহনে সন্তোষ প্রকাশ না করে তাকে ধৈর্য ধরার আহবান জানিয়ে শেখ হাসিনা বাইরে হাসপাতাল গেটের মুখে অবস্থানরত ট্রাকে তৈরি অস্থায়ী মঞ্চে দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্ত ভাষণে বলেন, ‘এই সরকার খুন আর ধর্ষণের সরকার। তাদের ক্যাডাররা দেশ জুড়ে এমন কান্ড একের পর এক ঘটিয়ে চলেছে। অবিলম্বে এই সরকারকে বিতাড়ন করার জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান শেখ হাসিনা। দুপুর ১২ টার দিকে শেখ হাসিনা তার গাড়িবহর নিয়ে কলারোয়া হয়ে যশোর অভিমুখে রওনা হন। এর আগে তার পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয় প্রটোকল। রওনার মূহুর্তে খবর আসে যে তাকে কলারোয়ায় পৌছাতে দেওয়া হবেনা হুংকার দিয়ে ক্ষমতাসীনরা রাস্তায় কাঠের গুড়ি ও বেঞ্চ ফেলে ব্যারিকেড দিয়েছে। এ খবর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানানো হলে তারা বলেন ব্যারিকেড তুলে দেওয়া হয়েছে।শেখ হাসিনা কলারোয়ায় যেতে পারেন। দুপুর ১২টার দিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে নিজ গাড়িবহরে রওনা দেন কলারোয়া হয়ে যশোরের উদ্দেশ্যে। কলারোয়া পৌঁছাতেই তার প্রণনাশের লক্ষ্যে শুরু হয় গুলি ও বোমা। বঙ্গবন্ধুর সাহসী কন্যা নিজ গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে জানতে চান কি চাও তোমরা।এসময় তারা জুতা স্যান্ডেল ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা তাকে দ্রুত গাড়ির মধ্যে বসিয়ে দেন। এরই মধ্যে তার গাড়ির পতাকার স্ট্যান্ড ভেঙ্গে ফেলে হামলাকারীরা।

 

শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে অক্ষত থাকলেও আহত হন তার সফরসঙ্গীদের কয়েকজন। তাদের দেহ হয়ে ওঠে রক্তাক্ত। তাদের পোশাক টেনে ছিঁড়ে ফেলে হামলাকারী দৃর্বৃত্তরা। হামলার সময় তার গাড়িবহর অনুসরনকারী সাতক্ষীরার এই প্রতিবেদক প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল সাংবাদিক আক্রান্ত হন। তারা জীবন রক্ষায় দ্রুত নিরাপত্তার লক্ষ্যে দৌঁড়ে চলে আসেন কাছেই কলারোয়া থানার মধ্যে। অপরদিকে বিরোধী দলীয় নেতাকে নিয়ে তার গাড়িবহর দ্রুতবেগে চলে যায় যশোর বিমানবন্দর অভিমুখে।থানায় এসে নিরাপত্তা চাইলেও পুলিশ তা নিয়ে গড়িমসি করতে থাকে। সাংবাদিকরা সে সময়কার ওসি গোলাম কিবরিয়ার সাথে তার কক্ষে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সময়ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে ক্ষমতাসীন দলের একদল ক্যাডার। এর আগে তাদের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে তিনজন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করে হামলাকারীরা। থানায় প্রায় দুই ঘন্টা বসে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকা সাতক্ষীরার সাংবাদিকদের পক্ষে এই প্রতিবেদক একটি মামলা দায়ের করেন। এতে কোনো হামলাকারী আসামির নাম উল্লেখ না করলেও ওসির নাম সরাসরি লিখে বলা হয় ‘বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার পরই আমরা আক্রান্ত হই। এমনকি থানার মধ্যে আপনার (ওসি)কক্ষে এসে আপনার সামনেই দুর্বৃত্তরা সাংবাদিকদের ফের মারপিট করেছে। তাদেরকে এখান থেকে বের হতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দিয়েছে। কিন্তু পুলিশ এই মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তা ফেরত দিতে চায়। থানায় প্রায় দুই ঘন্টা জিম্মি হয়ে থাকার পর মামলার বাদি তা ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সাংবাদিকদের নিয়ে সাতক্ষীরা সার্কেলের এএসপির নিরাপত্তায় ফিরে আসেন সাতক্ষীরায়। পরে সাংবাদিকদের চাপের মুখে খুলনার ডিআইজি লুৎফুল কবির জানান সাংবাদিকদের দেওয়া অভিযোগটি একটি পূর্নাঙ্গ মামলা হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছে। এর একদিন পর কলারোয়ার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. মেসলেমউদ্দিন ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় আরও একটি মামলা করেন। ৩১ আগস্ট আওয়ামী লীগ এই হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদ জানিয়ে অর্ধ দিবস হরতাল পালন করে। পর দিন ১ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সারা দেশে হরতাল পালন করে। ্এদিকে কলারোয়ার এই ঘটনা দু:খজনক উল্লেখ করে ঘটনার রাতেই সাতক্ষীরা পৌছে জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বরকতুল্লাহ বুলু, তালা কলারোয়া আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে বলেন, ‘আমরা এজন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো’। তারা এ সময় ক্ষমাপ্রার্থী হন। পরদিন ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে দলের মহাসচিব প্রয়াত আবদুল মান্নান ভুঁঁইয়া ঢাকায় বলেন, ‘যারা এজন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে একই দিনে তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দাবি করেন কলারোয়ার ঘটনা আওয়ামী লীগের সাজানো ঘটনা। এ কথার পর দৃশ্যপট পাল্টে যায়।

বছর দু’য়েক পর মামলা দু’টি আদালতে খারিজ হয়ে যায়। বাদিপক্ষের আইনজীবী সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু ঘোষনা দেন যে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এলে এ মামলা পুনরুজ্জীবীত হবে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দ্বিতীয় দফায় সরকার গঠনের পর এ মামলা পুনরুজ্জীবিত হলে তাও উচ্চ আদালতের নির্দেশে ফের খারিজ হয়ে যায়। পরে আরও এক দফায় মামলাটির পুনরুজ্জীবন ঘটে। পুলিশ ৫১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেয়। গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলার বিচারে আদালত সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেন। গণধর্ষণের শিকার মুক্তিযোদ্ধাপতœী মাহফুজা খাতুনের মামলাটিও আদালতে খারিজ হয়ে যায়। এর আগে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ডাক্তাররা তাকে বলেছিলেন ‘তোমার কিছুই হয়নি, তুমি বাড়ি যেতে পারো’। আদালতের রায় শুনে চোখের জলে ভিজে ওঠা ক্ষুব্ধ নারী বলেন, ‘জজ ঠিক বিচার করেনি। আমি আল্লাহর কাছে বিচার ছেড়ে দিলাম’। এমন আগস্ট সাতক্ষীরার মানুষ আর দেখতে চায়না।

শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার মাত্র কয়েকদিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরায় চলমান ঐতিহাসিক গুড়পুকুর মেলায় বোমা হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। তারা এদিন সন্ধ্যায় লক্ষ মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠা জমজমাট মেলার মধ্যে শহরের রক্সি সিনেমা হল ও স্টেডিয়ামে সার্কাস প্যান্ডেলের মধ্যে মাত্র দশ মিনিটের ব্যবধানে পর পর দু’টি করে বোমা হামলা চালায়। এতে তিনজন নিহত ও বিপুল সংখ্যক বিনোদনপিপাসু মানুষ আহত হন।
এদিকে ২০০৪ এর ২১ আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। মানববর্ম দিয়ে তাঁর নেতাকর্মীরা নেত্রীকে রক্ষা করতে পারলেও এই গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের পতœী আইভি রহমানসহ অন্তত: ২৪ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী। উল্লেখ করা যেতে পারে, এর বছর চারেক পর ২০০৮ সালে ঢাকায় গ্রেপ্তার হয় জঙ্গি নড়াইলের মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে মাসুমবিল্লাহ ওরফে আবু জান্দাল। র‌্যাব তাকে গ্রেপ্তারের পর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আবু জান্দালকে নিয়ে আসে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামে। ২০০৮ এর ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে আবু জান্দালের দেখিয়ে দেওয়া ওই গ্রামের আফগানিস্তানে ৬ বছর ধরে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আরেক জঙ্গি নজরুল ঘরামীর বাড়ির কাছে একটি পুকুরপাড়ে পলিথিনে মোড়ানো ৪১টি আর্জেস গ্রেনেড উদ্ধার করে র‌্যাব। এসময় আবু জান্দাল ও নজরুল ঘরামীকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব জানতে পারে ২০০৪ এর ২১ আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর জনসভায় হামলার ঘটনায় ব্যবহৃত গ্রেনেডের একাংশ এই ৪১টি গ্রেনেড। শিমুলিয়ার জঙ্গি নজরুল ঘরামীর শ্যালক আবু জান্দালের তেজগাঁও টেকনিক্যাল কলেজের সহপাঠী কালিগঞ্জের বসন্তপুরের জামাল উদ্দিনের মাধ্যমে এই গ্রেনেডগুলি নজরুল ঘরামীর বাড়িতে সরিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হয়। নজরুল ঘরামী ও আবু জান্দাল তা পুকুরপাড়ে মাটির নিচে পুঁতে রাখে। নজরুল ও জান্দাল এখন কারাগারে দন্ড ভোগ করছেন। এমন আগস্ট তো বাঙালি জাতি আর চাইতে পারে না।

১৭ আগস্ট ২০০৫ তারিখে বাংলাদেশের ৬৩ টি জেলা এক যোগে কেঁপে উঠলো ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলায়। সাতক্ষীরা তার মধ্যে অন্যতম। এদিন জেলা শহরের পাঁচটি স্থানে ৮টি বোমা নিক্ষেপ করে জামায়াতুল মুজাহিদিনের জঙ্গিরা। বাংলা ও আরবী ভাষায় লিখিত লিফলেট ছড়িয়ে বাংলাদেশে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েমের দাবি জানিয়েছিল তারা। সেই সাথে তারা ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠায় ক্বিতাল পদ্ধতির হুমকি দিয়েছিল। সাতক্ষীরায় এই হামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিষয়টি সংবাদকর্মী ও গোয়েন্দা বিভাগকে জানালে কিছু সময়ের মধ্যে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার হয় হুজি জঙ্গি বাঁকাল ইসলামপুর চরের নাসিরুদ্দিন দফাদার। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাতক্ষীরায় আবিস্কৃত হয় জঙ্গি ঘাঁটি। একের পর এক গ্রেফতার হয় সিরিজ বোমায় অংশ গ্রহনকারী বোমাবাজ জঙ্গিরা। ২০২১ এর ১০ ফেব্রুয়ারি বিচারে আদালত তাদের সর্বোচ্চ ১৩ বছর ও সর্বনি¤œ তিন বছর কারাদন্ড দেন। এই ভয়াবহ হামলার কিছুদিন আগে সাতক্ষীরায় এসেছিল জঙ্গি প্রধান শায়খ রহমান ও মুফতি আবদুল হান্নান। একথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছিল প্রথম দিনেই গ্রেফতার হওয়া জঙ্গি শহরতলির বাঁকাল ইসলামপুর চরের মো. নাসিরউদ্দিন দফাদার। এ ঘটনার পর থেকে আরও কয়েকটি জঙ্গি বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে সাতক্ষীরায়। এমনকি কালিগঞ্জের একাধিক মাদ্রাসায় ৬ জন জঙ্গি শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গোপনে প্রশিক্ষণ গ্রহন করছে বলে বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগ ভারতীয় গণমাধ্যম থেকে অবহিত হয়। গোয়েন্দা বিভাগের তৎপরতার মুখে শেষ পর্যন্ত এই গোপন প্রশিক্ষন বন্ধ হয়ে যায়। এর পরপরই লস্কর-ই-তৈয়বার আবদুল মালেক ও মওলানা ওবায়দুল্লাহসহ দুই জঙ্গি গ্রেফতার হয় সাতক্ষীরায়। এরপরই সাতক্ষীরার কয়েকজন সংবাদকর্মী, জেলা প্রশাসক ও কয়েকজন আইনজীবীকে বোমা মেরে হত্যার হুমকি দেয় জঙ্গিরা। এর আগে ১৯৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এই আগস্ট মাসে পাক হানাদার বাহিনী তাদের নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। নির্বিচার গণহত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা, নারী ধর্ষণ, বাংলাদেশের সম্পদে অগ্নিসংযোগ ও লুন্ঠন তৎপরতা বাড়িয়ে দেয়। এমন অবস্থায় তারা বাংলাদেশকে একরকম জনশুন্য করে তোলে। সাম্প্রতিক কালে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের অসভ্য সেনাবাহিনীর অত্যাচার নিপীড়ন ও গুলিবর্ষনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী। সূতরাং এমন আগস্ট আমাদের জাতীয় জীবনের অভিশাপ। আমরা আর দেখতে চাইনা এই আগস্ট।
১৯৭৫ থেকে এ পর্যন্ত এই আগস্টে এমন অনেক অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা বাঙালি জাতিকে বারবার ক্ষত বিক্ষত করেছে। বাঙালি জাতি এমন আগস্ট আর চায় না। লেখক: সাবেক সভাপতি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব

The post দু:সহ স্মৃতিতে বিভীষিকার আগস্ট appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3gLoYl2

No comments:

Post a Comment