কুশল ভৌমিক
তেইশ বছর বয়সে সংসার নামক এক সুরম্য বোতলে ঢুকে
আর বের হতে পারেননি আমার মা।
মাকে চাঁদ বলে ডাকতেন আমার বাবা।
মা ছিলেন স্নিগ্ধ,কোমল, নরম এবং হালকা
বাসন মাজতে মাজতে
মাছের ঝোল রান্না করতে করতে
সন্তানদের সুখ বিলি করতে করতে
তিনি হারিয়েছেন চুলের রঙ
যৌবনের আলো
আর প্রজাপতি হবার সম্ভাবনা।
যেখানেই গিয়েছেন পোষা বিড়ালের মতো
তার পিছু নিয়েছে রান্নাঘর, পিছু নিয়েছে সংসার।
বাবা ছিলেন ডাকসাইটে
বাবা ছিলেন রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে প্রাতভ্রমণ শেষে
আয়েশি ভঙিতে পত্রিকা পড়ে,জল খাবার খেয়ে
তিনি রোদ কুড়োতে বের হতেন
রোদ কুড়োতে কুড়োতে তিনি চা বিরতিতে যেতেন
রফিকের স্টলে, রাজনীতির মাঠে, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে
গানের জলসায়, কল ব্রিজ বা টুয়েন্টি নাইনের আসরে।
মায়ের প্রাপ্তি কেবল দিন শেষের চাঁদ ডাক
আর বাবার হাতের ব্যাগভর্তি রোদ।
ভাগ-বাঁটোয়ারা করতে করতে সেই রোদের উত্তাপ
কতটুকু নিজের গায়ে মাখাতেন আমাদের মা
আমরা কেউ তা জানি না
শুধু জানি একই কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে
নিজের পরিচয়টুকু হারিয়ে
বাবার থেকে আলো ধার করতে করতে
মা হয়ে উঠেছিলেন সত্যিকারের চাঁদ
যার নিজস্ব কোনো আলোই ছিল না আর।
The post চাঁদ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/332X5OL
No comments:
Post a Comment