Tuesday, March 2, 2021

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের প্রধান অন্তরায় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ, দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা আর দূর্যোগ https://ift.tt/eA8V8J

আহসান হাবিব: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রধান অন্তরায় নদীর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ও জলবায়ু পরিবর্তনে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা আর দুর্যোগ। জেলা শহরের সাথে সংযোগ মরিচ্চাপ, বঙ্গপোসাগর আর সুন্দরবনের সংযোগ নদী খোলপেটুয়া, পার্শ্ববর্তী উপজেলার সাথে সংযোগ নদী গলঘেসিয়া, জেলার উত্তরাঞ্চলের সাথে সংযোগ বেতনা নদী ও কপোতাক্ষ নদ, এক সময়ের পার্শ্ববর্তী কালিগঞ্জ, দেবহাটাসহ সরাসরি ভারতের ইছামতি নদীর সাথে সংযোগ গুতিয়াখালি নদীসহ ডজনাধিক ছোট বড় নদী দ্বারা বেষ্টিত ছিল আশাশুনি উপজেলা। এ উপজেলার ১, ২, ৪, ৬-৮ ও ৭/২ পোল্ডারের আওতার্ভূক্ত ১১টি ইউনিয়নের বেশির ভাগ অংশই নদী আর আবাদি জমি বেষ্টিত।
৫০ দশক পর্যন্ত এ এলাকার মানুষদের নদীর জোয়ার-ভাটার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হতো। ৬০ দশকে এলাকায় স্বাভাবিকভাবে ফসল ফলানোর নিমিত্তে সরকার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) প্রতিষ্ঠা করে নদীর পানি রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করেন। নদীর পানি রক্ষা বাঁধ নির্মাণ হলেও প্রতিনিয়ত নদী ভাঙন এ এলাকার জন্য নিত্যনৈমিত্তিক অভিশাপে পরিণত হয়। ফলে প্রতি বছর নদীর বাঁধ ভেঙে উপকূলীয় এ অঞ্চল প্লাবিত হয়, আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষের ফসলী জমি, বসতবাড়ি, সহায় সম্পদ ও গবাদি পশু। খাদ্য সংকট, পানি বাহিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা ও যাতয়াত ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। ফলে প্লাবিত এলাকার বানভাষী মানুষ এলাকা ছেড়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায়, পাউবো’র বাঁধ বা ৫/৭ বছর পূর্বে তৈরী করা অল্প সংখ্যক সাইক্লোন শেল্টার কাম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয়। এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নসহ চাষাবাদ বাঁধাগ্রস্ত ও ভেঙ্গে পড়ে। বাঁধ নির্মানের পর থেকে এ এলাকায় মানুষ ধান চাষসহ বিভিন্ন প্রকার ফসল ফলিয়ে জীবিকা নির্বাহ ও ফসলাদি রপ্তানী করতে শুরু করে। এলাকাবাসি চিৎকার চেচামেচি করলে সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময় সরকারিভাবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পাউবো’র টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিলেও অজ্ঞাত কারণে তা পূরণ করেননি। ফলে প্লাবিত এলাকার অধিকাংশ নারী-পুরুষ বসবাস ও জীবিকার তাড়নায় এলাকা ছেড়ে অন্যত্র সাগরে, ইটের ভাটা, শহরাঞ্চলে রিক্সা-ভ্যান চালানোসহ দূরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় কাজের সন্ধানে চলে যেতে বাধ্য হয়। অর্ধাহার-অনাহারে এসব পরিবারগুলো কোন রকমে দিন অতিবাহিত করে আসছে। এমনকি বহু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ রাতারাতি অধিক কম মূল্যে ধর্ণাঢ্য ব্যক্তিদের কাছে মূল্যবান জিনিষপত্রসহ সম্পত্তি বিক্রি করে ভারতে পাড়ি জমাচ্ছে। উপকূলীয় বাঁধ সুরক্ষা ছাড়া অন্য কোনভাবেই এলাকার মানুষ ও জনপদকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না এবং জনবান্ধব সরকারের কোন উন্নয়ন কর্মকান্ডই এই এলাকায় টেকসই ও ফলপ্রসূ করা কঠিন হয়ে পড়বে।
জলবায়ু পরিবর্তন আর ফারাক্কা ব্যারেজের কারনে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ কমে যেয়ে অধিকাংশ ছোট নদীর তলা পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে বা যাচ্ছে। আবাদী জমি ছাড়া নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে উচু হয়ে পড়েছে। ফলে পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে মানুষের জীবন মান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গুতিয়াখালী নদী ৬০ দশকের আগেই ভরাট হয়ে যাওয়ায় বাড়িঘর ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নির্মাণ হয়েছে। শুধুমাত্র মরিচ্চাপ, গলঘেসিয়া, বেতনা ও কপোতাক্ষ নদের যতসামান্য প্রবাহ চলমান এবং খোলপেটুয়া নদীর প্রবাহ কিছুটা চলমান থাকলেও ক্রমান্বয়ে ভরাট হতে শুরু হয়েছে। উপজলার উত্তরাঞ্চল দরগাহপুর, কাদাকাটি ও বড়দলের উপর দিয়ে প্রবাহিত নদী কপোতাক্ষ নদ ভরাট হয়ে একটি ড্রেনের ন্যয় রয়েছে। ফলে ্ এ ৩ ইউনিয়নে পয়:নিষ্কাশন ভেঙে পড়ে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এখন শুধু ওই এলাকায় কপোতাক্ষ নদ কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেতনা নদীর উত্তরাংশে ভরাট হয়ে কুল্যা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম জলাবদ্ধতা শুরু হয়েছে। মরিচ্চাপ নদীর পশ্চিমাঞ্চল ভরাট হওয়ায় শোভনালী ও বুধহাটা এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে আবাদী জমিতে সকল প্রকার চাষাবাদ বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। সুতরাং বলা যেতেই পারে, প্রতিনিয়ত বাঁধ ভাঙ্গন, দীর্ঘ মেয়াদী জলাবদ্ধতা আর প্রাকৃতিক ও মানুষ ঘটিত দুর্যোগের কারণে সাতক্ষীরা জেলার সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হয়ে দাঁড়িয়েছে আশাশুনি উপজেলা। উপজেলার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব অংশের খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদের পাউবো’র টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায় ঝুকিপূর্ণ বাঁধভাঙা প্লাবনের আশংকায় দীর্ঘ মেয়াদী জলাবদ্ধতায় জর্জরিত আশাশুনি সদর, শ্রীউলা, প্রতাপনগর, আনুলিয়া ও খাজরা ইউনিয়নবাসি। ওই এলাকার মানুষ এখন চরম বিপদে ও হতাশাগ্রস্থ। তবে মরিচ্চাপ নদীর জেলা সদরের প্রান সায়ের খালের সন্মুখ থেকে আশাশুনি সদরের মানিখালী পর্যন্ত নদী সরকারিভাবে খনন করার প্রস্তুতি চলছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। প্রতি বছর বাঁধ ভাঙন, প্রাকৃতিক ও মানুষ ঘটিত দুর্যোগে পতিত মানুষ কর্মহীন ও সর্বশান্ত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। বিপদাপন্ন মানুষদের রক্ষায় এলাকাবাসী সুদূর প্রসারী ব্যবস্থা গ্রহনে প্রধানমন্ত্রীসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিগত ৮০-৯০ দশক থেকে কৃষি ফসল ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় কৃষি ও আবাদী জমিতে অধিক মুনাফার আশায় সাদা সোনা ক্ষ্যাত রপ্তানী যোগ্য চিংড়ি চাষ করতে পর্যায়ক্রমে মৎস্য ঘের শুরু করে। উপজেলার বড়দল ইউনিয়ন বাদে বাকী ১০ ইউনিয়নে মৎস্য চাষ করার নিমিত্তে গোপনে নদীর লোনা পানি সরবরাহে অধিকাংশ পাউবো’র বেড়িবাঁধ সরকারের বিনানুমতিতে অপরিকল্পিতভাবে ছিদ্র করে ছোট বড় পাইপ বসান শুরু করে। এতে মৎস্য অধিদপ্তর, পাউবো কর্তৃপক্ষসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় অধিকাংশ মৎস্য ঘের এলাকার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। তাছাড়া অপরিকল্পিতভাবে মৎস্য ঘের করতে কৃষিজমিতে ও জমির ভেতর দিয়ে প্রবাহিত সরকারি ও রেকর্ডিও ছোট ছোট খাল বা নালা ঘিরে বাঁধ ও নেট-পাটা দেয়ায় পয়:নিষ্কাশন কঠিনভাবে বাঁধাগ্রস্ত হয়ে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়া পাউবো কর্তৃপক্ষ ঝুকিপূর্ণ এলাকায় সঠিক সময়ে বাঁধ সংস্কার বা টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মান তো দূরের কথা, বরং ঝুঁকিপূর্ণ নয় এমন এলাকায় অজ্ঞাত কারণে ভাল বাঁধে বরাদ্ধ দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ ঠেকাদারী প্রতিষ্ঠান লাভবান হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
আইলা, সিডর, বুলবুল, সুনামী ও সর্বশেষ গত ২০ মে-২০২০ এলাকায় সুপার সাইক্লোন আম্ফানের মতো বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছ্বাসে পাউবো’র বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয় উপজেলা সদরসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা। উপজেলার ৭/২ নং পোল্ডারের প্রতাপনগর ইউনিয়নের কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর হরিশখালী, চাকলা, কুড়িকাহুনিয়া ও সনাতনকাটি, শ্রীউলা ইউনিয়নের সাথে সংযোগ কোলা ও হিজলীয়া এবং ৪ নং পোল্ডারের শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখালী, কোলা, কলিমাখালী, থানাঘাটা, বকচর, মাড়িয়ালায় বাঁধ ভেঙ্গে শ্রীউলা এবং আশাশুনি সদর ইউনিয়নের জেলেখালী-দয়ারঘাট এলাকায় দু’টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে আশাশুনি সদর ইউনিয়নের আংশিক এবং প্রতাপনগর ইউনিয়নের পুরোটাই প্লাবিত হয়। সরকারি হিসেবে বাঁধ ভাঙনে ৩ ইউনিয়নের ৮ সহ¯্রাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত এবং ভিটে মাটি ত্যাগ করে স্থায়ী-অস্থায়ী বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে ৬ শতাধিক পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছে। ৭/১, ৭/২, ৪ ও ৬-৮ পোল্ডারের অন্তর্ভূক্ত বাঁধের ১৪ টি স্থান অতি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোন সময় এসব স্থানের বাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জলব্য়াু পরিবর্তন, মানুষ ঘটিক ও ঘূর্ণিঝড় সৃষ্ট সর্বনাশা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বাঁধ ভেঙে প্লাবন ও জলাবদ্ধতার তীব্রতায় উপজেলার প্রায় ৩ লক্ষ অধিবাসী বিগত ২০-২৫ বছর দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নি¤œ মধ্যবৃত্ত, দরিদ্র, হতদরিদ্র ও অসহায় জনগোষ্ঠী এখন সর্বশান্ত ও নি:স্ব অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। এছাড়া মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ ফসলী জমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আশানুরূপ ফসল ফলানো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা না পারছে বলতে, না পারছে মুজুরি খাটতে, নিয়মের মারপ্যাচে আর না পাচ্ছে সরকারি-বেসরকারি ত্রান ও অন্যান্য সহায়তা। বাস্তচ্যুতির মতো ঘটনা এলাকায় ব্যাপক হারে বেড়ে চলেছে। উপজেলার বেশ কিছু গ্রাম, সমতল, চাষাবাদি ও চিংড়ি ঘেরসহ একটি বড় অংশ ভাঙ্গন এলাকায় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে মানচিত্র পরিবর্তন হয়েছে। এ এলাকায় ভবিষ্যতে বসবাস উপযোগী হবে কিনা এবং জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব হবে কিনা, ক্রমাগত বাস্তব এ পরিস্থিতি জনমনে নানান প্রশ্নের উদ্ভব ঘটিয়েছে।
অন্যদিকে, পোল্ডারের বাঁধগুলোর বয়স ৫০/৬০ বছর হওয়ায় এবং দীর্ঘকাল ধরে বাঁধগুলো সুষ্ঠুভাবে সংস্কার না করা ও অপরিকল্পিত লোনা পানি উত্তোলন করে চিংড়ী চাষ করাসহ নানা কারণে বাঁধগুলো হয়ে পড়েছে ভীষণভাবে দুর্বল ও ভঙ্গুর। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, উঁচ্চ জোয়ার এবং বিশাল উজান অঞ্চলের বর্ষার পানির চাপ, মানুষ আর প্রাকৃতিক দূর্যোগ সহ্য করার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে শুরু করেছে। ফলে বাঁধ ভেঙ্গে বা উপচিয়ে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে প্রতিবছর। বাঁধ ভাঙ্গা প্লাবন এবং জলাবদ্ধতার প্রকটতায় এলাকার প্রধান ফসল ধান ও মাছ চাষে অচলাবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে এবং বসতি এলাকা প্লাবিত হওয়ার কারণে এলাকায় বসবাস করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। শেষ ভরসাস্থল খোলপেটুয়া নদীও দ্রুত গতিতে মৃত্যুর দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং নিচের সুন্দরবনের নদীগুলোও দ্রুত পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এসব নদীর অকাল মৃত্যুর কারণে নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পাওয়ায় বাঁধগুলোর উপর অত্যাধিক পানির চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
ভাঙ্গন এলাকার মধ্যে ইতোমধ্যে প্রতাপনগন ইউনিয়নের কুড়িকাহনিয়া পয়েন্টে বেড়িবাঁধ বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে ক্লোজার আটকানো সম্ভব হয়েছে। ফলে কুড়িকাহনিয়া, সনাতনকাটি, নাকনা, গোয়ালকাটি, শিরশা ও প্রতাপনগর গ্রামে আপাতত জোয়ার-ভাটা বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু, বসতবাড়ী, ফসলী জমি আর যাতায়তের রাস্তাঘাটসহ ওই এলাকার গ্রামীণ অবকাঠামো একবারেই বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। এখন ভাঙ্গনকৃত চাকলা বাঁধ সেনা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে কাজ চললেও ক্লোজার আটকানো সম্ভব না হওয়ায় চাকলা, সুভদ্রাকাটি ও রুইয়ারবিল নদীর পানি জোয়া-ভাটা চলা একটি নিয়মে পরিনত হয়েছে। এসব এলাকায় দ্রুত টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মাণ, দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসন, প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ, ফ্রি চিকিৎসা সেবা, সর্বোপরি মানব ঘটিত দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আনুপাতিক হারে সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা, ভরাট হওয়া নদী ও খাল খনন করে পানির প্রবাহ সঠিক রাখার ব্যবস্থা করা এখন বানভাষী এলাকার মানুষের সময়ের দাবী হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী ঝড়-জলোচ্ছ্বাস মৌসুমে আবারও নতুন নতুন এলাকায় প্লাবনের আশঙ্কায় আতঙ্কিত ও হতাশাগ্রস্ত। এ এলাকার মানুষের রাতের ঘুম যেন হারাম হয়ে গেছে।
বিপন্ন উপকূলীয় সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার মানুষকে বাঁচাতে, প্রাকৃতিক ও মানুষ ঘটিত দূর্যোগ, বানভাষী ও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত জনপদকে রক্ষা করতে এবং উপকূলীয় এ উপজেলার ঝুকিপূর্ণ বাঁধগুলি সংস্কার করাসহ চলমান উন্নয়নের মান ধরে রাখতে দ্রুততার সাথে পদক্ষেপ গ্রহনে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভূক্তভোগী ও এলাকার সচেতন মহল।

The post দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের প্রধান অন্তরায় ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ, দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা আর দূর্যোগ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3sFKF9y

No comments:

Post a Comment