এম জিললুর রহমান: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ১নং কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কেএম মোশাররফ হোসেন হত্যা মামলার স্বাক্ষী শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার স্বাক্ষীর তৃতীয় দিন হিসেবে চার্জশীটভুক্ত ২জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য আদালতে উপস্থাপন করেছেন রাষ্ট্রপক্ষ। স্বাক্ষ্যদানকারিরা হলেন প্রদীপ অধিকারী ও আমিনুল ইসলাম। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিজ্ঞ বিচারক বিশ^নাথ মন্ডল এই স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এর আগে আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর এই মামলার দুই দিনে আরো ৩জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে প্রথমদিন মামলার বাদী নিহতের কন্যা সাফিয়া পারভীন ও দ্বিতীয় দিন শাহিনুর রহমান এবং আসাদুজ্জামান স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত অভিযোগ গঠনের পর ৭কার্য দিবসে আরো ২জনসহ এ মামলার চার্জশীটভুক্ত ৫জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য আদালতে উপস্থাপন করেছেন রাষ্ট্রপক্ষ।
মামলার বাদীনি ও আদালতের দায়িত্বশীল সূত্র জানান, বিগত ২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের তৎকালিন চেয়ারম্যান কেএম মোশাররফ হোসেন বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাশর্^বর্তী বালিয়াডাঙ্গা বাজারের যুবলীগ অফিসের সামনে প্রতিদিনের ন্যায় লোকজন নিয়ে বসে কথাবার্তা বলছিলেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আসামী আব্দুল জলিল গাইন এর নেতৃত্বে অসংখ্য সন্ত্রাসী এলাকার ত্রাস ও চাঁদাবাজসহ খুনিরা আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্রে শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিতভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা নিশ্চিত করে বোমা ফাটিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে পালিয়ে যায়। এসময় সন্ত্রাসীদের তান্ডবে চেয়ারম্যানের আসপাশে থাকা লোকজন ভয়ে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে। তাৎক্ষণিকভাবে খরব পেয়ে নিহতের পরিবারসহ স্থানীয় লোকজন আহত মোশাররফকে উদ্ধার করে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর শুধু কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন নয়, পুরো কালিগঞ্জ উপজেলা জুড়ে মোশাররফ হত্যাকান্ডে জড়িতদের বিচারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠে সাধারণ মানুষ।
পরদিন ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে নিহতের কন্যা সাফিয়া পারভীন বাদী হয়ে খুনি আব্দুল জলিলকে প্রধান করে কালিগঞ্জ থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত ১৫-২০জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তভার পান কালিগঞ্জ থানার তৎকালিন ওসি (তদন্ত) রাজিব হোসেন। এদিকে চাঞ্চল্যকর মোশাররফ হত্যাকান্ডের এক সপ্তাহ পর মামলার ১নং আসামী আব্দুল জলিল জনরোসে পড়ে গণপিটুনিতে মারা যান। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা রাজিব হোসেন দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২৪জনকে স্বাক্ষী করে এবং প্রধান আসামী গণপিটুনিতে নিহত আব্দুল জলিলকে বাদ দিয়ে ২১জনকে অভিযুক্ত করে ১২ মে ২০১৯ তারিখে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। চলতি বছরের শুরুতে আলোচিত এই মামলাটির অভিযোগ গঠনের পর ২মার্চ স্বাক্ষীর জন্য দিন ধার্য হয়। বর্তমানে অভিযোগ গঠনের ৭কার্য দিবসে মঙ্গলবার ২জনসহ এপর্যন্ত ৫জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে উপস্থাপন করেছেন।
এ মামলার বিষয়ে রাতে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এড. আব্দুল লতিফ জানান, প্রতিটি ধার্যদিনে স্বাক্ষ্য উপস্থাপনপূর্বক দ্রুতই মামলাটির বিচারকার্য শেষ করার প্রচেষ্টা তিনি অব্যাহত রাখবেন।
অপরদিকে নিহতের কন্যা ও মামলার বাদীনি সাফিয়া পারভীন রাতে গণমাধ্যমকে জানান, যেহেতু তার বাবাকে দুস্কৃতিকারিরা রানিং চেয়ারম্যান হিসেবে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। তাই তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে চলতি ইউপি নির্বাচনে তিনি কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন থেকে এবার চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচিত হলে জনস্বার্থে তিনি তার বাবার অসাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
The post কালিগঞ্জের মোশাররফ হত্যা মামলায় ৭ কার্যদিবসে ২জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3bxQkI7
No comments:
Post a Comment