Saturday, October 2, 2021

হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা থেকে অব্যহতি চান সাতক্ষীরার সাংবাদিক আমিনুর রশীদ সুজন https://ift.tt/eA8V8J

প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে আবেদন
পত্রদূত রিপোর্ট: সাতক্ষীরা জেলা পারিষদের দাবিকৃত হারানো চেক ব্যবহার করে নিয়ম বহির্ভুতভাবে সোনালী ব্যাংক থেকে ছয় লাখ টাকা উত্তোলনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ ও প্রতিকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে। ডেইলি সান’র সাতক্ষীরা প্রতিনিধি এবং দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি আমিনুর রশীদ সুজন শনিবার এ আবেদন করেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বুলারাটি গ্রামের শেখ সৈয়েদুল আলমের ছেলে শেখ আমিনুর রশিদ সুজন তার আবেদনপত্রে উল্লেখে করেছেন, ২০১০ সালে থেকে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার সাতক্ষীরার বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি এবং ইংরেজি দ্যা ডেইলি সান’র প্রতিনিধি কাম বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি হিসেবে অতি সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। গত ২৪ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পত্রিকা সংক্রান্ত কাজে গিয়েছিলেন তিনি। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমান ও তার চাচাতো শ্যালক হিসাব রক্ষক আবু হুরাইরাসহ দুই ব্যাংক কর্মকর্তার ইঙ্গিতে তাকে গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা তাকে অফিসে ডেকে বসান। এ সময় তার কয়েকটি স্থির চিত্র নেওয়া হয়। আশরাফ হোসেন ও আবুল হোসেন দু’টি নাম বার বার লিখতে বলা হয়। পরে গোয়েন্দা পুলিশ গিয়ে তার বাড়িতে ব্যাপক তল্লাশী করে। বাড়ি থেকে ১০ বছর পুরাতন একটি ডায়েরি, কালের কণ্ঠ ও ডেইলি সান পত্রিকার জেলার বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠানের এন্টি রেজিস্ট্রার, জাতীয় পরিচয়পত্র, মোবাইল ফোন, ক্যামেরা, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাগিজ ও জিনিসপত্র নিয়ে আসে পুলিশ। পরদিন তাকে জেলা পরিষদের দাবিকৃত হারানো তিনটি চেক থেকে একটি চেকের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখা থেকে তোলা ছয় লাখ টাকা উত্তোলন সংক্রান্ত গত বছরের ২৯ আগস্ট জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমানের দায়েরকৃত জিআর-৬৩৩/২০ নং মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। পুলিশের দাবি সোনালী ব্যাংকের সিসি টিভির ফুটেজ থেকে পাওয়া এক ব্যক্তির ছবির সঙ্গে তার (সুজন) পিছনের দিকের শারীরিক গঠনের বেশ মিল রয়েছে। ৩১ আগস্ট মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম তাকেকে আদালতের মাধ্যমে দু’দিনের রিমান্ডে নেন। রিমান্ড চলাকালে তদন্তকারি কর্মকর্তা তার বিভিন্ন ধরণের স্থিরচিত্র ও ভিডিও চিত্র গ্রহণ করেন। গত ৭ সেপ্টেম্বর আদালত তার নমুনা স্বাক্ষর গ্রহণ করার পর আদালতের অনুমতি ছাড়াই তদন্তকারি কর্মকর্তা আবারো তার বিভিন্ন ধরণের ছবি গ্রহণ করে। ২১ সেপ্টেম্বর তিনি আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। এর ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও জব্দ তালিকা বহির্ভুত গোয়েন্দা পুলিশের নিয়ে আসা তার জাতীয় পরিচয়পত্র, অফিস আইডি, খাতা, ক্যামেরা, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ম্যানিব্যাগ, টাকা, কালের কণ্ঠ ও ডেইলি সান পত্রিকার বিজ্ঞাপনের রিসিভসহ অফিসিয়াল বিভিন্ন কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় নমুনা তিনি বুঝে পাননি।

আমিনুর রশীদ সুজন আরো উল্লেখে করেছেন, একটি প্রতিষ্ঠান থেকে তিনটি চেক চুরি হলো। স্বাক্ষর যাচাই না করে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা বহির্ভুতভাবে একাউন্ট পে ছাড়া ব্যাংক থেকে কিভাবে ৬ লক্ষ টাকা ক্যাশ উত্তোলন হল ? যেখানে জেলা পরিষদের ৫ হাজার টাকার উর্দ্ধে কোন একাউন্ট পে চেক চেয়ারম্যান, প্রধান নির্বাহী ও ক্যাশিয়ারের স্বাক্ষরিত এডভাইস ছাড়া দেওয়া হয় না সেখানে ছয় লাখ টাকা কিভাবে ক্যাশ দিলো ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ও সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জড়িত না থাকলে আদৌ কি এটি সম্ভব ? প্রকৃতপক্ষে জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা জেলা পরিষদের খেয়াঘাটের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের দায়েরকৃত প্রতারণা মামলার আসামী খলিলুর রহমান ও ক্যাশিয়ার চাচাত শ্যালক আবু হুরাইয়রাসহ ব্যাংকের কাশিয়ারের ওই চেক জালিয়াতির সাথে জড়িত থাকার কথা কি অস্বীকার করার সুযোগ আছে? তাছাড়া জেলা পরিষদের চেকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সংরক্ষণকারি ১০ বছরের কোষাধ্যক্ষ মাসিক ২৫ হাজার টাকা বেতনের কর্মচারি আবু হুরাইরা সাতক্ষীরা শহরের টিএন্ডটি মোড়ে বিলাসবহুল বাড়ির মালিক ও মাটিয়াডাঙা গ্রামের নিজের বোনদের ১২ বিঘা জমি কেনাসহ বর্তমানে সাত কোটিরও বেশি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মালিক হলেন কিভাবে ? জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামও চেক জালিয়াতির ঘটনাটিতে তার অফিসের কেউ না কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করেন সেখানে প্রশাসন কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাকেই (সুজন) বলির পাঠা করলো?

আমিনুর রশীদ সুজন তার আবেদনে এক মানবিক বিষয় তুলে ধরে বলেন, তার তিন বছরের ছেলে বর্তমানে থ্যালাসামিয়া ও শিরা সংক্রান্ত জটিল রোগে আক্রান্ত। বিজ্ঞাপনের কাজ করে তিনি নিজের সংসার চালানোর পাশপাশি ছেলের ঔষধ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। এমতাবস্থায় জেলা পরিষদ ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিজেদের বাঁচাতে তাকে ফাঁসাতে মিশন নিয়ে নেমেছে। জেলা পরিষদের চেক জালিয়াতির ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রভাবমুক্ত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে তিনি নির্দোষ বলে প্রমাণিত হবেন। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে হয়রানির হাত থেকে বাঁচাতে ও তার থ্যালাসামিয়া আক্রান্ত ছেলের জীবন রক্ষায় প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখবেন বলে তিনি আশাবাদী।

The post হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা থেকে অব্যহতি চান সাতক্ষীরার সাংবাদিক আমিনুর রশীদ সুজন appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2WAzViv

No comments:

Post a Comment