পত্রদূত ডেস্ক: দৈনিক পত্রদূত সম্পাদক, বীরমুক্তিযোদ্ধা স ম আলাউদ্দীন হত্যার পর সাতক্ষীরার সর্বস্তরের মানুষ ফুসে উঠেছিল। ঘাতকদের শাস্তির দাবি উঠেছিল জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে। জেলার আশাশুনি উপজেলা থেকেও ঘাতকেদের শাস্তির দাবিতে মিছিল-সমাবেশ, আন্দোলন-সংগ্রাম করা হয়। স ম আলাউদ্দীন হত্যার বিচার ও খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে লিখেছিলেন বরেণ্য রাজনীতিক ও সমাজসেবক ডা: সুশীল চন্দ্র মন্ডল।
১৯ জুন ছিল বীরমুক্তিযোদ্ধা স ম আলাউদ্দীনের শাহাদত বার্ষিকী। এই দিনে বীরমুক্তিযোদ্ধা দৈনিক পত্রদূত সম্পাদক, সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি, ভোমরা স্থল বন্দর প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তা, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের পুরোধা এবং সর্বোপরি সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের বিশিষ্ট নেতা স ম আলাউদ্দীন শহীদ হন। ১৯৯৬ সালের অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৯ জুন কয়েকটি কেন্দ্রে পুণ:ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন রাতে টিভিতে ওই ভোটের বুলেটিন প্রকাশ হচ্ছিল।
সাতক্ষীরা থানা সংলগ্ন তখনকার পত্রদূত অফিসে বসে তিনি টিভিতে ইংরেজি সংবাদ বুলেটিন দেখছিলেন। ঠিক যখন ঘড়ির কাঁটা রাত ১০টা ২৩ মিনিট তখন সাতক্ষীরার কয়েকজন গডফাদারের নির্দেশে এবং তাদের আর্থিক আনুকূল্যে কয়েক দুস্কৃতিকারী তাকে গুলি করে। সাথে সাথে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার এই হত্যাকান্ড ছিল ওই সময়ের সর্বাধিক আলোচিত ঘটনা। সাতক্ষীরাবাসি এই হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে জেলার সর্বস্তরের মানুষ। চলতে থাকে মিটিং মিছিল সমাবেশ। চিহ্নিত করা হয় হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সেই সব গডফাদার এবং তাদের আজ্ঞাবহ সন্ত্রাসী গ্রæপকে, যারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে স ম আলাউদ্দীনকে হত্যা করে। হত্যা মামলার তদন্তের ভার দেওয়া হয় সিআইডি’কে। তারা তদন্ত শেষে হত্যাকান্ডের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত অধিকাংশ গডফাদারদের চিহ্নিত করেন। তাদের বিরুদ্ধে চার্জশীটও প্রদান করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও চাঞ্চলকর এই হত্যা মামলার বিচার আজও হয়নি। আর বিচার কবে হবে, আদৌ হবে কীনা তা ভবিষ্যত-ই ভালো বলতে পারে।
গডফাদার আসামীরা হাইকোর্ট থেকে মামলাটিকে কোয়াশমেন্ট করেছিল। এতোদিন কালো টাকা ও রাজনৈতিক প্রভাব এই মামলার স্বাভাবিক কার্যক্রমকে শুধু বাঁধাগ্রস্তই করেনি এটিকে ভিন্ন পথেও পরিচালিত করেছে। আর খুনীচক্র প্রকাশ্যে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়। নিজেদেরকে সাতক্ষীরার কর্ণধর হিসেবে মনে করে। তবে আশার কথা বর্তমান সরকার সাতক্ষীরায় যে মামলাগুলো দ্রæত বিচার আইনে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করেছে এই মামলাটিকে এর অন্ত:ভুক্ত করেছে। তাই আমাদের প্রত্যাশা-বর্তমান সরকার বীরমুক্তিযোদ্ধা স ম আলাউদ্দীন হত্যার বিচার দ্রæত সম্পন্ন করে খুনেিদর দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবেন। স ম আলাউদ্দীন বিচার হবে কিন্তু কিছুই হয়নি আজও। বিচারের বাণী নিরবে-নির্ভতে কাঁদে। অতি আপন আর সাধারণ মানুষের হৃদয়ের পাশে ছিলো স ম আলাউদ্দীনের স্থান। কোন সঙ্কোচ নেই মাঝে মাঝে আলাউদ্দীনের রাত কাটতো গ্রামের কোন সাধারণ মানুষের গৃহে। কেউ কখনো বিরক্ত হয়নি, সাদরে গ্রহণ করেছে আলাউদ্দীনকে। সেই জনদরদি মানুষটিকে জবিন দিতে হলো ঘাতকের বুলেটে। কী কারণে তাকে হত্যা করা হলো তা-ও অজানা নয় করো। বীর মুক্তিযোদ্ধা স ম আলাউদ্দীন হত্যার বিচার হবে এবং খুনীরা সর্বোচ্চ শাস্তি পাবে-তা দেখার অপেক্ষায় সাতক্ষীরার সর্বস্তরের মানুষ।
The post হত্যাকারীদের বিচার চাই appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3xLMT9M
No comments:
Post a Comment