Thursday, December 31, 2020

কুরআন-সুন্নায় মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনদর্শন https://ift.tt/eA8V8J

মাওলানা মুহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ
(১১ তম পর্ব)…
জাহালাত বা অজ্ঞতা সম্বন্ধে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দৃষ্টিভঙ্গি ও তাঁর দর্শন: আরবী ভাষা বিজ্ঞানের শব্দ তত্ত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে জাহা-লাতুন শব্দটি মাসদার বা ক্রিয়ামূল।আরবী শব্দ বিজ্ঞানে যেটি ইসমে ফায়িল বা বিশেষ্য পদ হিসাবে পরিচিত। জাহা-লাতুন শব্দটি ক্রিয়ামূল যার বিশেষ্য পদ হলো জা-হিলুন।বাংলায় যার প্রতিশব্দ হলো-অজ্ঞ, মূর্খ, নির্বুদ্ধি, নির্বোদ, বোকামি ইত্যাদি। জা-হিলুন শব্দের বিপরীত শব্দ হলো: আ-লিমুন। আ-লিমুন শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হলো-জ্ঞানী, বিদ্যান, পন্ডিত, শিক্ষিত, বিজ্ঞানী ইত্যাদি।

সুত্র: মুজামুল ওয়াফী (আরবী ভাষার অভিধান), ড. ফজলুর রহমান। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর গোটা জীবনের সার্বিক কর্মকান্ড ও দর্শন আল কুরআন ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত সুন্নাহ কেন্দ্রিক পরিচালিত। আল কুরআন ও আস সুন্নাহ এই দুই এর বিপরীতে মানব রচিত যতো দর্শন আছে, যেগুলো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো গ্রহণ করেননি এবং তাঁর হাতে গড়া দ্বীন ও ইসলামের মহান খাদিমগণ যারা সাহাবী হিসেবে পরিচিত, তারাও কখনো কুরআন-সুন্নাহর বিপরীত কোনো দর্শন পোষণ করেননি এবং তাদের জীবনে লালন করেননি।ঈমান গ্রহন করে ইসলামের গন্ডির মধ্যে প্রবেশ করার পর একজন মুমিন ও নব-মুসলিম হিসেবে প্রথম দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহর বিধিকে পরিপূর্ণরুপে অনুসরণ ও অনুকরণ করে চলবে। আর মহাসত্যের দূত ও বার্তাবাহক হিসেবে আল্লাহ তায়ালার প্রেরিত সর্বশেষ রাসুল বা প্রতিনিধি হিসেবে একজন মুমিন সর্বদা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দেখানো পথ ও জীবন পদ্ধতিকে অনুসরণ করবে এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স¦ীকৃত সুন্নাহর মানদন্ডে যারা তাঁদের জীবনকে রঙ্গীন করেছিল তাঁর সাহাবী বর্গকে অনুসরণ করে চলবে। এটিই প্রত্যেক মুমিনের মূল আকিদা হওয়া উচিত। কিন্তু বিশ্বনবী, রাহমাতুল্লীল আলামিন, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এর জীবন চরিত ও তাঁর কুরআনিক দর্শনকে বাদ দিয়ে এবং আসহাব বর্গের জীবনে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ ও কুরআনুল কারীমের যে বাস্তব অনুশীলন হয়েছিল। সেই আসহাব বর্গের জান্নাতী জীবন চরিতকে বাদ দিয়ে মানব রচিত দর্শন কখনো মুমিনের জীবন পরিচালনার পথ ও পাথেয় হতে পারেনা। আল কুরআন ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহকে বাদ রেখে যদি কেউ নিজেকে মুমিন-মুসলিম হিসেবে দাবি করে তার এই দাবি তেমন মিথ্যা হবে যেমন যদি কেউ নিজেকে নবুওয়াতের দাবি করে। অর্থাৎ ঐ ব্যক্তির দাবি ডাহা ও মহামিথ্যা হিসেবে সাব্যস্ত হবে। এক কথায় মুমিনের জীবনের চলার মাপকাটি হবে আল কুরআন ও আস সুন্নাহ রুপরেখার আদলে। আমরা এখন প্রাসঙ্গিক গবেষণালব্দ নিবন্ধে জাহালাত বা অজ্ঞতার বিষয়ে আল কুরআন ও আস সুন্নাহ যে দুটি বিষয় মূলত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন দর্শনের মুল মানদন্ড, তার আলোকে নি¤েœ কিছু দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করবো।আহকাম গত দৃষ্টিকোণ থেকে: আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসুলের দেওয়া বিধান,নির্দেশ বা হুকুমকে না মেনে বরং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দেখানো পথ ও জীবন পদ্ধতির কোনো বিষয়কে ভুল ব্যাখ্যা কিংবা বিতর্কিত জায়গায় স্থাপন করাকে সবচেয়ে বড় জাহালাত বা অজ্ঞতা বলে। যেমন আল কুরআনের সুরাহ বাকারায় মুসা আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মতের অজ্ঞতার একটি চিত্র ফুটিয়ে তুলা হয়েছে ঠিক এভাবে-‘মুসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর স্বীয় সম্প্রদায়কে বললো: আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে একটি গরু জবাই করার আদেশ করেছেন। (মুসা আ. এর উম্মতগণ: আল্লাহ তায়ালার আদেশকে না মেনে বরং বিতর্কিত করলো) তারা বলল, তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছো ? মুসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: অজ্ঞ বা মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। সুত্র: আল বাকারা, আয়াত নং-৬৭।মুসা আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মতের চরম মূর্খতা ও অজ্ঞতার দৃষ্টান্ত আল্লাহ তায়ালা কেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর নাজিল করলেন ? প্রশ্নটির অতি সহজ উত্তর হলো, আল কুরআন ও মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহর হুকুম কে যারা আজও না মেনে বরং ভুল ব্যাখ্যা করে জনমনে বিতর্ক সৃষ্টি করবে তারা উম্মাতে মুহাম্মাদি হলেও অবশ্যই জাহিল তথা অজ্ঞ বা মূর্খ হিসাবে সাব্যস্ত হবে। আজও যারা আল কুরআনের বিধানের সাথে নাফারমানি করবে তাদের এই কর্মকান্ডের জন্য বলতে হবে-‘আ-উযুবিল্লাহী আন আকুনা মিনাজ জ্বাহিলীন-বাকারা: ৬৭’ এটি একটি কুরআনিক দু’আ যা আল্লাহর পয়গম্বর মুসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেছিলেন। সেই দু’আ সম্বলিত আয়াতে কারেমাটি আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপরও নাজিল করেছেন।অতএব যদি কেউ আল্লাহর আদেশের সাথে নাফারমানি করে ,তাহলে সেই জাহিলদের অজ্ঞতার কারণে আমরাও উপরোক্ত কুরআনিক দু’আ খানা আমল করবো।অজ্ঞতার পরিচয় প্রদানে আল্লাহ তায়ালা সুরাহ আরাফের মধ্যে ইরশাদ করেছেন- ‘বস্তুত আমি সাগর পার করে দিয়েছি বনী-ইসরাঈলদিগকে।তখন তারা এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে গিয়ে পৌছালো, যারা স্বহস্ত-নির্মিত মূর্তিপুজায় নিয়োজিত ছিল।তারা বলতে লাগলো,হে মূসা; আমাদের উপসনার জন্যও তাদের মূর্তির মতই একটি মূর্তি নির্মান করেদিন।মুসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম বল্লেন তোমাদের মধ্যে বড়ই অজ্ঞতা রয়েছে।’

 

সুত্র: প্রাগুক্ত, আয়াত নং-১৩৮। মুমিনদের জন্য এখানে গভীর শিক্ষা নিহিত আছে। অত্যাচারী শাসক ফেরাউনের হাত থেকে আল্লাহ তায়ালা হযরত মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মাতকে রক্ষা করে সাগর পার করে একটি নিরাপদ নগরী দান করেছিলেন। এই নিরাপদ নগরী দানের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র তারা আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তাগুতকে বর্জন করবে। সুরাহ বাইয়্যিনাতে মধ্যে ইরশাদ আছে-আল্লাহ তায়ালা খাঁটি মনে একানিষ্ঠভাবে শুধুমাত্র তাঁর ইবাদত করার জন্যই আদেশ করেছেন।আল্লাহর ইবাদাতের মধ্যে কোনো শিরক করবে না অর্থাৎ ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে তৃতীয় কোনো সত্ত্বাকে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মতের মধ্যে তাঁর আনীত সত্য দ্বীনকে যারা কবুল করবে না তারা জাহিল হিসাবে অজ্ঞদের দলভুক্ত হবে।যেমন নূহ (আ.) এর পুত্র কেনান তাঁর দ্বীনকে কবুল করেননি তাই সে জাহিল তথা অজ্ঞদের অন্তভুক্ত হয়েছিল।এ প্রসঙ্গে আল কুরআনের সুরাহ হুদের মধ্যে স্ববিস্তারে বর্ণিত হয়েছে ঠিক এভাবে-‘আল্লাহ তায়ালা বললেন,হে নূহ! নিশ্চয়ই সে (কেনান) আপনার পরিবার ভুক্ত নয়। নিশ্চয়ই সে (কেনান) দুরাচার, পাপিষ্ঠ। সুতরাং আমার কাছে এমন দরখাস্ত করবেন তা,যার খবর আপনি জানেন না। আমি (আল্লাহ তায়ালা) আপনাকে উপদেশ দিচ্ছি যে, আপনি অজ্ঞদের দলভূক্ত হবেন না।’ সুত্র: প্রাগুক্ত, আয়াত নং-৪৬। এই আয়াত দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমানিত হলো যে, যারা আল্লাহর দেওয়া বিধানকে উপেক্ষা করে পাপাচার ও দুরাচারে লিপ্ত হয় তাদের আশ্রয় দিলে, আশ্রয়দাতা সে ব্যক্তিও জাহিল তথা অজ্ঞ হিসাবে সনাক্ত হবেন। এখানে, আল্লাহ তায়ালা নুহ আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অজ্ঞ, মূর্খদের দলভুক্ত হতে নিষেধ করেছেন। যেমনিভাবে আল্লাহর হুকুমে নুহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ছেলেকে প্লাবণের গজবের সময়ে নৌকায় আশ্রয় দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন। শুধুতাই নয় ইউসুফ আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভায়েরা তাঁর সাথে যে মূর্খতাপূর্ণ আচরণ করেছিল সেই উদ্ধতপূর্ণ আচরণের স্পষ্টবিবরণ আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আল কুরআনের সুরাহ ইউসুফের মধ্যে বর্ণনা করেছেন। আল্লাহর পয়গম্বর ইউসুফ ভ্রাতৃগণ অত্যন্ত নির্মম ও নিষ্ঠুর ভাবে হযরত ইউসুফ আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অন্ধকার কুফের মধ্যে এক অজানা গন্তব্যের দিকে নিক্ষেপ করে মানবতার নির্দয় ও পাশবিকতার এক চরম অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছিল। আল্লাহ তায়ালা তাঁর নাবীকে রক্ষা করে মিশরের সিংহাসন দান করেছিলেন। ইউসুফ আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিশরের সিংহাসনের রাষ্ট্রক্ষমতার সর্বোচ্ছ মর্যাদার আসনে সমাসীন ঠিক এমন সময় তাঁর ভ্রাতৃগণ তাঁর কাছে এসে উপস্থিত।তারা তাদের পরিবার বর্গের দু:খ-কষ্টের কথা ইউসুফ আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে কোমল কন্ঠে প্রকাশ করলো। ইউসুফ ভ্রাতৃগণ ছিলেন চরম অজ্ঞ ও মূর্খ যা আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে ঠিক এভাবে-‘ (ইউসুফ আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: তোমাদের কি জানা আছে ? যা তোমরা ইউসুফ ও তাঁর ভাই (বনী আমিনের) সাথে করেছিলে। যখন তোমরা ছিলে পুরাপুরি জাহিল বা অজ্ঞ।’ সুত্র: সুরাহ ইউসুফ, আয়াত নং-৮৯। উপরের তথ্যনির্ভর বিশদ আলোচনা থেকে আমরা জানলাম যে, অজ্ঞতা এক মারাত্মক ব্যধি যা একমাত্র ঈমানের নুর দিয়ে নিভানো সম্ভব। কিন্তু জাহিল বা অজ্ঞরা যদি কুরআন-সুন্নাহর নুর থেকে আলো গ্রহণ করতে না চাই বরং তাদের মূর্খতাপূর্ণ আচরণকে ইসলামের উপর চাপিয়ে দিতে চাই।

 

এমন পরিস্থিতিতে রহমানের খাঁটি বান্দাগুলোর করণীয় কি হবে? এ বিষয়ে আল কুরআনের সুরাহ আল ফুরকানে ইরশাদ হয়েছে-‘রহমানের খাঁটি বান্দাতো কেবলমাত্র তারাই, যারা পৃথিবীতে ন¤্র-ভদ্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন অজ্ঞ-মূর্খরা কথা বলে (ইসলামকে বিতর্কিত করতে) থাকে, তখন তারা (রহমানের খাঁটি বান্দাগণ) বলে, সালাম তথা শান্তির বার্তা।’ সুত্র: সুরাহ ফুরকান, আয়াত নং-৬৩। বুখারি ও মুসলিম শরিফের একটি হাদিসে বর্ণিত আছে-‘খাদিমুর রাসুল হযরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, কিয়ামতের কিছু আলামত হলো: ইলম হ্রাস পাবে, অজ্ঞতা প্রসারতা লাভ করবে, মদপানের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং যিনা ব্যভিচার বিস্তার লাভ করবে।’ সুত্র: বুখারি, হা. নং-৮০, মুসলিম, হা. নং-২৬৭১। কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞান থেকে মানুষ যখন দুরে সরে যাবে এবং তদস্থলে শুধুমাত্র মানব রচিত অপূর্ণ জ্ঞান চর্চা করবে। ঠিক এমন সময়ে আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আলিমদেরকে উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে ইলমকে উঠিয়ে নিভেন যা সুস্পষ্ট কিয়ামতের একটি আলামত। জাহিলের বিপরীত একজন আলিমের মর্যদার সার্টিফিকেট স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাই দান করেছেন।যেমন আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-‘হে নাবী! আপনি বলুন, যারা (কুরআন-সুন্নাহ) জানে আর যারা (কুরআন-সুন্নাহ) জানে না সকলে কি সমান হতে পারে? কেবলমাত্র (কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞানে) বোধশক্তি সম্পন্নেরা শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।’ সুত্র: সুরাহ ঝুমার, আয়াত নং: ০৯। আল কুরআনের অন্যত্রে ইরশাদ হয়েছে-‘অনুরুপভাবে বিভিন্ন বর্ণের মানুষ, জন্তু, চতুস্পদ প্রাণী রয়েছে। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে উলামাগণ তথা কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞানে জ্ঞানীরাই কেবলমাত্র তাঁকে ভয় করে।’ সুত্র: সুরাহ ফাতির, আয়াত নং-২৮। আলিমদের বিপরীত জাহিলদের জন্য পরকালে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা থাকবে এবং জাহিলরা জাহান্নামের কঠিন ভয়াবহ শাস্তি ভোগ করতে থাকবে।

অজ্ঞতা থেকে বাঁচার প্রতিষেদক: এই সমন্ধে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গুরুত্বপূর্ণ হাদিস বর্ণিত হয়েছে যা ইমাম আবু দাউদ (রহ.) তার স্বীয় সংকলন কিতাব আবু দাউদ শরীফে রিওয়ায়াত করেছেন।যেমন-হযরত আত্বা ইবনু আবি রাবাহ (রহ.) থেকে বর্ণিত:তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) কে বলতে শুনেছেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে এক ব্যক্তি আহত হয়। ঐ অবস্থায় তাঁর স্বপ্নদোষ হলে তাকে গোসল করার নির্দেশ দেওয়া হয়। অত:পর সে গোসল করলে তাঁর মৃত্যু হয়। এ সংবাদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকটে পৌঁছালে তিনি বলেন: এরা লোকটিকে হত্যা করেছে। আল্লাহ যেনো তাদেরকেও হত্যার (সাদৃশ্য কোনকিছু দিয়ে ধ্বংস) করেন। সর্বশেষ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বললেন:অজ্ঞতার প্রতিষেদক জিজ্ঞেস করা নয় কি?। সুত্র:আবু দাউদ, হা. নং: ৩৩৭। পরিবার জীবন থেকে শুরু করে জাতীয় জীবনের সকল স্তরে যেকোনো সমস্যায় পতিত হলে একজন মুমিন-মুসলমান হিসাবে তার সমাধান অন্বেষণ করতে হবে আল কুরআন ও আস সুন্নাহ থেকে।আর গ্রহণযোগ্য এই দুটি মাপকাটিকে বাদ দিয়ে মানব রচিত ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করলে হাদিসে বর্ণিত ধ্বংস প্রাপ্তদের মধ্যে শামিল হতে হবে। আহলুজ জিকর তথা কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞানে যারা জ্ঞানী এবং তারাই কেবল মাত্র আল্লাহকে অধিক মাত্রায় স¥রণ করে থাকে। যাদেরকে আল কুরআনের সুরাহ ফাতিরের ২৮নং আয়াতে উলামা হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে।আর যেকোনো সমস্যায় পতিত হলে আলিমদের কাছে তার সমাধান জিজ্ঞেস করে জেনে নেওয়ার জন্য স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাই আল কুরআনে নির্দেশ করেছেন।

ইরশাদ হচ্ছে-‘তোমরা (যে সমস্যায় পতিত হয়েছো) সে সম্পর্কে তোমরা যদি (সঠিক সমাধান) না জানো,তাহলে (কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞানে) জ্ঞানী সম্প্রদায়কে জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও।’ সুত্র: সুরাহ নাহল: ৪৩, সুরাহ আম্বিয়া: ০৭ নং আয়াত। অত্র গবেষণা নিবন্ধে জাহালাত তথা অজ্ঞতা সম্পর্কে কুরআন-সুন্নাহ থেকে সবিস্তার আলোচনার পরিসমাপ্তি কলমে বলতে চাই যে, হে আল্লাহ! জাহিলদের ভ্রান্তপথ, দর্শন ও আকীদা থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং তোমার নেয়ামত প্রাপ্ত সত্যবাদী উলামা সম্প্রদায়ের কুরআন-সুন্নাহর আদলে প্রতিষ্ঠিত পবিত্র সোহবাত বা অন্তরঙ্গ সম্পর্ক কামনা করছি, (আমিন)। লেখক: ইসলামী গবেষক, খতিব-লাবসা দপ্তারিপাড়া বায়তুন নূর জামে মাসজিদ, সাতক্ষীরা

The post কুরআন-সুন্নায় মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনদর্শন appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2WW1peU

No comments:

Post a Comment