Thursday, September 3, 2020

চাইনিজদের জীবনযাপন ও আমার অভিজ্ঞতা https://ift.tt/eA8V8J

চাইনিজরা কখনো বুড়ো হয়না অর্থাৎ এরা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কর্মক্ষম থাকে এমন একটা উপাধি এদের দিলে ভুল হবেনা। যখন দেখা যায় একজন সত্তর ঊর্ধ্ব ব্যক্তি সেটা পুরুষ বা মহিলা যেই হোক না কেন শারীরিক কোন অসুস্থতা ছাড়া নির্দ্বিধায় মনের ফুর্তিতে দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা করছে তখন তাদের শারীরিক ফিটনেস নিয়ে সত্যিই কিছুটা হলেও আমরা বিস্মিত হই। আজ চাইনিজদের দৈনন্দিন খাদ্যভ্যাস, চলাফেরা, বিনোদন এগুলো শেয়ার করব।

চাইনিজদের প্রতিদিনকার খাদ্যভ্যাস এবং চলাফেরা: চাইনিজদের সাথে আমাদের সবথেকে বড় পার্থক্য লাঞ্চ এবং ডিনার টাইমের। সকালের নাস্তা অনেক ভোরেই সেরে ফেলে, বলতে গেলে ভোর ৬ টা থেকে ৭ টার ভিতর। বেশির ভাগ অফিসের কর্ম ঘন্টা শুরু হয় সকাল আটটা থেকে। তাই ভোরে নাস্তা সেরে কর্মক্ষেত্রে রওনা দেওয়া লাগে। এদের লাঞ্চ টাইম সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত। সকাল ১১ টা বাজলেই দুপুরের খাবারের জন্য সবার চোখ মুখে অধীর অপেক্ষার ছাপ দেখা যায় এবং মোটামুটি ১১.৩০ এর ভিতরেই সবাই দুপুরের খাবার খেয়ে কর্মস্থলে ফিরে আসে।

লাঞ্চের পরে এক থেকে দেড় ঘন্টা ঘুমায়। নিজেদের কর্মস্থলেই এই ঘুমের ব্যবস্থা আছে। ঘুমের সময় সবাই লাইট অফ করে, রুমের পর্দা টেনে কর্মস্থলকে ঘুমানোর উপযোগী করে তবেই ঘুমাতে যায়। সে সময়ে তারা পুরো অফিসে নিরবতা বজায় রেখে সবাইকে পরিপূর্ণ বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ করে দেয়। তখন অফিসের সমস্ত সার্ভিস বন্ধ থাকে। নির্দিষ্ট সময় ঘুমের পরে আবার নতুন উদ্দ্যামে কাজ শুরু করে।

ছবি ১: চাইনিজদের দুপুরের খাবারের একটি নমুনা।
ডিনার বিকাল ৫.৩০ থেকে সন্ধ্যা ৭ টার ভিতরেই সেরে ফেলে এবং সবাই ডিনারের পরে অনেক হাটে। সেটা একঘন্টা থেকে শুরু করে আরও বেশি হতে পারে। শরীরকে ফিট রাখার জন্য রাতের খাবার সন্ধ্যা ৭ টার ভিতর খেয়ে এবং খাওয়ার পরে একটু হাঁটাহাঁটি করায় যথেষ্ট বলে মনে করে এরা। এদের খাবারের প্লেটগুলো খুবই ছোট, চপস্টিক (খাবারের জন্য ব্যবহৃত দুটো কাঠি) ব্যবহারে ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে সবাই খুবই পারদর্শী। খাবারে হাতের স্পর্শ এবং চামচ ছাড়া সবরকমের খাবার এই দুই কাঠির সাহায্যে দক্ষতার সাথে খেয়ে ফেলে।

প্রত্যেক বার খাবারের সাথে বিভিন্ন রকমের স্যুপ খায়। হালকা লবন মিশিয়ে মাছ বা মাংস বা ডিম বা সবজিকে জলে সিদ্ধ করে সেটাকে স্যুপ হিসেবে খায়। মনকে সবসময় দুশ্চিন্তামুক্ত আর প্রশান্তিময় রাখার ব্যাপারে এদের অনেক বিনোদনের ব্যবস্থা আছে। তাই সন্ধ্যায় ডিনারের পরপরই মধ্য বয়সী পুরুষ বা মহিলারা একসাথে সাউন্ড বক্সে গান ছেড়ে দিয়ে মনের উৎফুল্লে নাচে। এই নাচের দৃশ্য খুবই মনোমুগ্ধকর, সব টিমে একজন দলনেতা থাকে, তাকে বাকী সবাই অনুসরণ করে। প্রতিটা কমিউনিটিতে পর্যাপ্ত জায়গা আছে এই নাচের টিমদের জন্য। কমিউনিটি কর্তৃপক্ষ প্রতিরাতে বড় পর্দায় বিভিন্ন মুভি দেখায় এবং সেখানে সবাই সমবেত হয়ে সেটা উপভোগ করে।

রাতের এক্সারসাইজ সেরে বাসায় ফিরে উষ্ণ গরম জলে গোসল সেরে ঘুমাতে যায় এবং সবাই রাত ১১ টার ভিতর ঘুমানোর চেষ্টা করে। প্রতিটা কমিউনিটিতে সুইমিং পুল, এক্সারসাইজের বিভিন্ন ইন্সট্রুমেন্ট, বাস্কেটবল, ব্যাডমিন্টন খেলার ব্যবস্থাসহ বাচ্চাদের বিনোদন এবং খেলার জন্য অত্যাধুনিক খেলার রাইড আছে। চাইনিজদের জনপ্রিয় খেলার ভিতর বাস্কেট বল, ভলিভল, ব্যাডমিন্টন, গলফ, টেবিল টেনিস ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। কিছু কিছু জায়গায় ফুটবল খেলতেও দেখা যায় কিন্তু ক্রিকেট এরা একেবারেই বোঝেনা বা খেলেনা।

ছবি ২: কমিউনিটির ভিতরে ব্যায়াম করার সরঞ্জামাদি।
চাইনিজরা সবকিছুই খায় এবং সবকিছুর ফ্রেশ স্বাদ নিতে পছন্দ করে। এজন্য বিভিন্ন মাংস বা মাছ হালকা সিদ্ধ (কোন কোন এলাকায় একেবারে কাঁচা খাওয়ারও রেওয়াজ আছে) করেই খেয়ে নেয়। শাক সবজি দুপুরে বাগান থেকে তুলে বিকেলে বাজারে বিক্রি করতে দেখা যায়। মাছ মাংসের দাম সবজির দামের থেকে কম। একবার এক চাইনিজের কাছে শুনেছিলাম সাপ খেয়েছে কিনা? সে বলে সাপের বার-বি-কিউ নাকি অনেক টেস্টি। উনি আরও বলে “চাইনিজরা সবকিছুর অরিজিনাল টেস্ট নিতে পছন্দ করে”।

অরিজিনাল মানে বলতে পারেন একেবারে কাঁচা। সেজন্য এরা সবকিছুই হাই হিটে খুব অল্প সময়ের জন্য রান্না করে। যেটার নাকি অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। আমাদের রান্নায় আমরা প্রচুর মসলা ব্যবহার করি কিন্তু এরা মসলা খুব কম খায়। আমাদের যেখানে একটা আইটেম রান্না করতে ৩০-৪০ মিনিট সময় লাগে সেখানে এরা ৫ টা আইটেম রান্না করে। রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাবারের মেন্যু অর্ডার করলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার সামনেই রান্না করে টেবিলে সব মেন্যু চলে আসবে। রেস্টুরেন্টে গিয়ে একুরিয়ামে জীবিত মাছ, চিংড়ী, কাঁকড়া এগুলো অর্ডার করলে আপনাকে সাথে সাথেই প্রসেস করে রান্না করে দেবে।

সব খাবারে বিভিন্ন ধরনের কুকিং ওয়াইন, ভিনেগার এবং কুকিং সস (সয়া সস, ফিস সস, ভেজিটেবল সস, চিলি সস) ব্যবহার করে যেগুলোর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। এদের খাবারে ভাতের পরিমান খুবই কম থাকে, কম মানে সব মিলিয়ে ৫০ গ্রাম চাল ফুটালে যতটুকু ভাত হয়, কেউ কেউ একেবারেই ভাত খায়না। বিভিন্ন রকম নুডুলসের খুব আধিক্য দেখা যায় এখানে, প্রায় সবরকম নুডুলস কোন প্রকার মসলা ছাড়া অনেক জলের ভিতর হালকা সবজিসহ সিদ্ধ করে হাপুস হুপুস করে খেতে দেখা যায়। ভাতের পরিবর্তে অনেকে নুডুলস খায় কিন্তু সেটাও পরিমানে খুব অল্প। তবে এরা প্রচুর শাক সবজি খায় এবং অনেক স্বাস্থ্য সচেতন তাই শরীরে কোন রোগ নেই। ভুড়ি মোটা চাইনিজ খুজে পেতে হিমশিম খেতে হয়।

ছবি ৩: কমিউনিটির ভিতরে বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন রাইড।
মাছের ব্যপারে একটু না বললেই নয়। চাইনিজরা জীবিত মাছ খায় (কিছু সামুদ্রিক মাছ ছাড়া)। তাই খোলা বাজার থেকে শুরু করে শপিং মলে একুরিয়ামে সব মাছ রাখা থাকে। সেটা তেলাপুয়ে, সরপুটি, রুই থেকে শুরু করে চিংড়ী মাছ পর্যন্ত। যখন যে যেমনটা চাচ্ছে সেখান থেকে সে তেমনটা তুলে নিচ্ছে। একুরিয়ামে রাখা মাছ মারা যাওয়ার সেটাকে সাথে সাথে উঠিয়ে আলাদা করে অর্ধেকেরও কম দামে বিক্রি হতে দেখা যায়। মাংসের ব্যাপারেও একটু অন্যরকম।

যেকোন ধরনের মাংস যদি মুরগির কথা বলি তবে দেখা যায় মুরগির সব পার্ট পার্ট আলাদা বিক্রি হয় এবং দামও সব অংশের আলাদা আলাদা। একটা মজার ব্যাপার হল এখানে সবকিছুর দামই ৫০০ গ্রাম এ হিসাব করে, আমাদের মত কেজিতে না। সুপার মল, খোলা বাজার সবখানেই দামের ওই একই চিত্র, মানে আমাদের মত কেজিতে হিসাব করতে গেলে দুই দিয়ে গুন করে হিসাব করে নিতে হয়। খাবারে কেউ যে ভেজাল মেশাতে পারে এরা কখনো সেই জিনিসটা মাথায় আনতে পারেনা।

ছবি ৪: কমিউনিটির ভিতরে সুইমিং পুলের একাংশ।
মিষ্টি এরা পছন্দ করেনা এজন্য কোথাও মিষ্টির দোকান আলাদা করে খুজে পাওয়া যাবেনা, তবে খুবই হালকা মিষ্টি (আমাদের মত চিনির সিরাতে চুবানো না) জাতীয় কিছু খাবার পাওয়া যায়। ভাজা পোড়া খুবই কম খায়, যেহেতু ভাজা পোড়া মুখোরোচক সেহেতু তারা পছন্দ করে কিন্তু সেটা সকালের নাস্তার সাথে কিছু কিছু মানুষ খায়। স্টিমে ভাপানো ব্রেড (ডামপ্লিং, মম) খুবই পছন্দের খাবার চাইনিজদের।

কোনরকম লবন বা মশলা ছাড়া মিষ্টি আলু সিদ্ধ, কলমি শাক সিদ্ধ, বিভিন্ন সবজি সিদ্ধ তাদের খুবই প্রিয়। তবে বাসায় খাওয়ার চেয়ে বাহিরেই বেশি খায়, সেজন্য এদের জীবন অনেক ঝামেলা মুক্ত। নেই বাজার করার চিন্তা, কি রান্না করবে সেই চিন্তা। তবে মাঝেমধ্যে তারা কিচেনেও সময় দেয়।

গ্রিন টি এদের খুবই জনপ্রিয় পানীয়। তাই ছোট থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ সবার কাছে গ্রিন টি এর বেশ বড় বড় পট থাকে। সেটাতে বিভিন্ন ধরনের গ্রিন টি, ফ্লাওয়ার টি (বিভিন্ন ফুল শুখানো) ভরে সারাদিন একটু একটু করে গলা ভিজাতে থাকে। নরমাল তাপমাত্রার জল এরা পান করে খুবই কম, সব ট্যাবে ৪০ ডিগ্রী এবং ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পানীয় জলের ব্যবাস্থা থাকে।

এত রকমের ফল যে পৃথিবীতে আছে সেটা এখানে না আসলে হয়ত আমার জানা হত না। সারাবছরে কিছু কমন ফল ছাড়াও বিভিন্ন সিজনে বিভিন্ন ফল পাওয়া যায়, সব রকমের ফল এখানে অনেক সস্তা এবং ফ্রেশ। সেজন্য দিনমজুর থেকে শুরু করে সবারই ফল খাওয়ার সামর্থ্য আছে। আমার কাছে মনে হয় চাইনিজরা ডিনার বা লাঞ্চে যতটুকু খাবার খায় তার থেকে প্রতিদিনের ফল খাওয়ার পরিমানটা বেশিই হবে। তবে হ্যাঁ ফল একটু বাসি হলে কেউ সেটা কেনে না, সবাই ফ্রেশ জিনিসের প্রতি অনেক বেশি ঝোঁকে।

ইয়ং জেনারেশনের ফাস্টফুডের প্রতি ঝোঁক আছে তবে সেটা বিশেষ (বার্থডে, ম্যারেজ অ্যানিভারসারি) দিনগুলোতে। এছাড়াও মাঝেমধ্যে দোকানগুলোতে বড় ডিস কাউন্ট অফার করে এজন্য ম্যাকডোনাল্ড, কেএফসি, পিজ্জা হাঁট সহ আরও কিছু নামকরা ফাস্ট ফুডের দোকান গুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন ব্রান্ডের ওয়াইন, বিয়ার খুব সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায় সেজন্য এদের প্রচুর ড্রিঙ্কস করতে দেখা যায়, কিন্তু ড্রাঙ্ক অবস্থায় ড্রাইভিং বা লোকাল প্লেসে ঘোরাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

ছবি ৫: বিকালে ডিনারের পরে সবার দলবদ্ধ ভাবে নৃত্য করার দৃশ্য।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতি: যেহেতু এরা শারীরিক ভাবে খুবই ফিট সেহেতু ডাক্তারের কাছে কমই যাওয়া লাগে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রের খুব বেশি প্রচলন এখানে। হাসপাতালের বড় বড় ডিগ্রী ধারী ডাক্তাররাও প্রথমে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা দিয়ে ট্রিটমেন্ট শুরু করেন তাই সেটা যত কঠিন রোগই হোক না কেন। ডাক্তার প্রেসক্রিপশন করার পরে বিভিন্ন গাছ গাছড়ার ভেষজ ঔষুধ ডিসপেনসারিতে কিনতে পাওয়া যায়।

ব্যক্তি স্বাধীনতা: এরা সবাই খুবই স্বাধীনচেতা। স্বামী স্ত্রী সবাই যে যার মত স্বাধীনতা ভোগ করে এবং কেউ কারও পার্সোনাল লাইফে হস্তক্ষেপ করতে পছন্দ করেনা। ছেলেমেয়েদেরও ছোট থেকে সেভাবেই স্বাধীনতা দিয়ে বড় করে। সবাই সেলফ ডিপেন্ডেন্ট অর্থাৎ স্বামী স্ত্রী কেউ কারো আয় ইনকামের উপর নির্ভরশীল নয়। পারিবারিক জীবনও অনেক সুখের। সবাই উইকেন্ডে কাছে বা দূরে ফ্যামিলির সাথে ঘুরতে যায়। প্রতিমাসের আয় থেকে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ রেখে দেয় ঘোরার জন্য। লাইফকে যতভাবে এনজয় করা যায় তার সবগুলো পন্থাই চাইনিজরা অনুসরণ করে। সামার, উইন্টার বা অন্যান্য ভ্যাকেশনে সব স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস একসাথে ছুটি শুরু এবং শেষ হয়। যাতে করে ফ্যামিলির সবাই দূর প্রবাস কিংবা দেশের ভিতরের দর্শনীয় স্থান ঘুরে আসতে পারে। যাতায়াতের জন্য অত্যধুনিক সব ব্যবস্থা থাকায় এই সময় গুলোতে একটু ভিড় হলেও কাউকে শোনা যায়নি কালোবাজারি করে টিকিট বুকিং বা টিকিট না পেয়ে কেউ তাদের গন্তব্যে যেতে পারেনি।
মানুষ হিসেবে চাইনিজরা: চাইনিজরা অনেক বেশি শৃঙ্খলিত এবং ছন্দময় জীবন বেশি পছন্দের। গায়ের রঙ সবার সাদা। পোশাক পরিচ্ছদ (কে কি পরল) নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই, সবাই খুবই সিম্পল পোশাক পরতে পছন্দ করে। এরা অনেক হেল্পফুল এবং অনেক কাজে নিজ থেকে এগিয়ে আসে। ফরেনারদের ব্যাপারে এরা অনেক পজেটিভ মাইন্ডের।

ইংরেজি কম পারে ঠিকই কিন্তু ফরেনার দেখলে নিজেরা আগ বাড়িয়ে কথা বলতে আসে, উপকার করতে আসে। এদের কোন ধর্ম নেই। প্রকাশ্যে ধর্ম পালন এখানে আগে থেকেই নিষিদ্ধ। কে কোন ধর্মের সেটা এরা নিজেরাই জানেনা। তাই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় মানুষ মরতে শোনা যায়না। সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে বিজি থাকে, সেটা রাস্তা পারাপার, গাড়ি চালানো, খাওয়া যে কোন সময় হতে পারে।

পাঠকদের কাছে সবিনয়ে ক্ষমা প্রার্থনা পূর্বক আবেদন, আমার লেখায় ভুল ত্রুটি থাকতে পারে সেটা মার্জনীয়। আমি আমার দেখা ফুজিয়ান প্রদেশের ফুজো সিটির মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপন সম্পর্কে এখানে আলোকপাত করেছি। চীন বিশ্বের সর্বাধিক জনসংখ্যা বেষ্টিত অন্যতম বৃহৎ একটা রাষ্ট্র। স্থান কাল ভেদে সবার কালচার, খাদ্যভ্যাস ভিন্ন থেকে ভিন্নতর হবে সেটাই স্বাভাবিক। স্বাভবিক ভাবেই পাঠকদের মধ্যে কেউ কেউ আমার থেকে অনেক বেশি অভিজ্ঞ ব্যক্তি থাকতে পারেন। অন্যান্য প্রদেশের সাথে আমার লেখা নাও মিশতে পারে।

আমার লেখনীর মাধ্যমে চাইনিজ কালচার, চাইনিজদের চলাফেরা, খাদ্যভ্যাস সহ বেশ কিছু জিনিস শেয়ার করেছি। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ খুব অল্প বয়স থেকে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়েবেটিস, হার্টের রোগ সহ নানান জটিলতায় ভোগে। সামান্য একটু সচেতনতা, জীবনযাত্রার মান এবং খাদ্যভ্যাস পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে এগুলোকে খুব সহজেই জয় করা যায়। আমার লেখা পড়ে যদি অন্তত একজন মানুষ ও উপকৃত হয় তবেই আমার সার্থকতা। সকলের সুস্বাস্থ্য কামনায়, ভালো থাকবেন সবাই।
লেখক: অজয় কান্তি মন্ডল, পিএইচডি গবেষক, ফুজিয়ান এগ্রিকালচার এন্ড ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি, ফুজিয়ান, চীন।

Email: ajoymondal325@yahoo.com

The post চাইনিজদের জীবনযাপন ও আমার অভিজ্ঞতা appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2Z4w37j

No comments:

Post a Comment