Thursday, October 29, 2020

সুন্দরবনকে ঘিরে গড়ে উঠেছে অবৈধ শুঁটকির ডিপো শুকানো হয় বিষ মারা মাছ পোড়ানো হয় বনের কাঠ https://ift.tt/eA8V8J

বিলাল হোসেন, মুন্সিগঞ্জ (শ্যামনগর): শুকানো হয় বিষ প্রয়োগ করা মাছ, জ্বালানো হয় সুন্দরবনের কাঠ, ক্ষতি হয় সুন্দরবন রক্ষিত গাছপালা ও পরিবেশের। নদীর চর দখল করে সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে অবৈধভাবে গড়ে উঠছে শুটকির (খঁটি) ডিপো। অবৈধভাবে গড়ে উঠা খঁটির কারণে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বিষ প্রয়োগকারির সংখ্যা। সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীনালা থেকে বিষ প্রয়োগ করে মারা চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছগুলোও নিয়ে রাতারাতি খঁটিতে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
জেলার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১৬টির মতো খঁটি রয়েছে। যেখানে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয় সুন্দরবনের কাঠ।
প্রশাসন এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব খঁটি গড়ে উঠেছে। সুন্দরবনের পাশে পরিবেশ নষ্ট করে কাঠ পুড়িয়ে মাছ শুকানো বিধি নিষেধ থাকলেও তা না মেনে প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাচ্ছে শুটকির কাজ।

শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন কলবাড়ী ৩টা, মুন্সিগঞ্জ ১টা, হরিনগর ২টা, টেংরাখালী ৩টা, মহিন্দ্যসিলে ৫টা, কাশিমাড়ী ২টা এলাকায় ১৬টা অবৈধ শুটকির ডিপো গড়ে উঠেছে। চালু থাকা এসব খটিতে চিংড়ি এবং সাদা মাছ শুকিয়ে প্রস্তুত করা হয়। সারা বছর ধরে চলে এ কাজ।
বন বিভাগের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগে মাছ ধরার ওপর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরপরও এসব খঁটি মালিকরা রাতের আঁধারে চড়া দাদন দিয়ে জেলেদের মাধ্যমে মৎস্য আহরণ করাচ্ছে। এসব খটিতে শুটকির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পোড়ানো হচ্ছে শত শত মণ বিভিন্ন প্রজাতির সুন্দরবনের কাঠ। আর এ কাজের নেপথ্যে রয়েছে এলাকার কিছু সংখ্যক অসাধু লোক।
এসব খটি সচল হয় রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথে। রাত এবং দিনে চলে মাছ শুকানোর প্রক্রিয়া। ঘরের মধ্যে উপরে মাচা করে নিয়ে কাঠ জ্বালানো হয়। আগুনের তাপে চলে শুটকি প্রক্রিয়া।
স্থানীয় জেলেদের দাবি, বিষ দেয়া মাছ পাইকারি আড়তে বিক্রি হয় না। খটি ডিপো মালিকরা তা কিনে নিয়ে শুঁটকি করে। এলাকার সচেতন মহল সুন্দরবন সংলগ্ন এই এলাকার শুঁটকি ডিপো বন্ধ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পাউবোর বেড়িবাঁধের উপরে সুন্দরবনের পাশে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ১৬টি মাছ শুকানো শুঁটকি ডিপো। এই ডিপোগুলোতে অবাধে মাছ শুকাতে ব্যবহার করা হচ্ছে সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ। কৌশলে ডিপো মালিকদের নিজস্ব শ্রমিক দিয়ে সুন্দরবন থেকে রাতের আঁধারে কাঠ কেটে নিয়ে এসে ওই সকল ডিপোতে খুবই গোপনীয়তার সাথে রাখে। ব্যবসায়ীরা লোক দেখানোর মত কিছু সংখ্যক দেশি কাঠ সংগ্রহ করে তা না পুড়িয়ে রাতের আঁধারে সুন্দরবনের কাঠ পুড়িয়ে থাকে। মাঝে মধ্যে বন বিভাগ অভিযান পরিচালনা করলেও তারা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
এ বিষয়ে ডিপো মালিকরা বলেন, ‘বিষ দিয়ে মারা কোনো মাছ শুটকি করা ও সুন্দরবনের কাঠ পোড়ানো হয় না।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, সম্প্রতি সুন্দরবনে বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তার একমাত্র কারণ রাতের আঁধারে বিষ দিয়ে ধরা মাছের ঐ সকল শুঁটকি ডিপোতে চাহিদা বেশি।
বেসরকারি এনজিও সংস্থা লিডার্সের পরিচালক মোহন কুমার বলেন, সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠা অবৈধ শুঁটকির যেখানে সুন্দরবনের কাঠ পুড়িয়ে বিষ দেওয়া মাছ শুকানো হয়। যে কারণে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সুন্দরবনের বিষ প্রয়োগকারীর সংখ্যা। ক্ষতি হচ্ছে সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র ও গাছ পালার পরিবেশ।
সাতক্ষীরা রেঞ্জ সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এম এ হাসান বলেন, শুটকির ডিপো গুলা কথায় আছে তালিকা দিলে আমরা তাড়াতাড়ি বন্ধ করার ব্যবস্থা নেব।

The post সুন্দরবনকে ঘিরে গড়ে উঠেছে অবৈধ শুঁটকির ডিপো শুকানো হয় বিষ মারা মাছ পোড়ানো হয় বনের কাঠ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/31Wn4GC

No comments:

Post a Comment