Saturday, December 26, 2020

সফলতা এবং ব্যর্থতার ফিরে দেখা একটি বছর https://ift.tt/eA8V8J

২০২০ শুরুটা হয়েছিল বেশ। পহেলা জানুয়ারি সুদূর প্রবাসে বসেই খবর পেয়েছিলাম চাকুরীতে ৯ম গ্রেড হতে পদোন্নতি পেয়ে ৬ষ্ঠ গ্রেডে উন্নীত হয়েছি। বছরের শুরুতে এমন খবর নিঃসন্দেহে আনন্দ দায়ক। তাই ভেবেছিলাম প্রথমদিন যেখানে এত ভালো দিয়ে শুরু হল তাহলে পুরো বছর সহ শেষটাও হয়ত ভালোই যাবে। আজকের লেখনীতে ২০২০ এর সালতামামী তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সহজে ব্যাখ্যার জন্য বছরের পুরো সময়কে ৪ টি ভাগে ভাগ করে বর্ণনা করলাম।

জানুয়ারি থেকে মার্চঃপহেলা জানুয়ারির প্রমোশনের খবরটা মনে যথেষ্ট আনন্দের খোরাক হয়েছিল। সামনেই ছিল আমার মেয়ে ‘অন্তু’র জন্মদিন। তাই আশাছিল অন্তুর জন্মদিনে সবাই মিলে বেশ আনন্দ করব। সবাই বলতে কিছু দেশী লোকজন, চাইনিজ, ইন্ডিয়ান, নেপালি এবং পাকিস্তানি বন্ধুবান্ধব। চীনা বন্ধুবান্ধব সহ বাকি সবাই এখানে পড়ালেখার জন্য অবস্থান করছিল। কেউ পিএইচডি, কেউ এমবিবিএস, কেউ আন্ডার গ্রাজুয়েট স্তরে।

জীবনে কখনো নিজের জন্মদিন ঘটা করে পালন করা হইনি। কেননা নিজের মা বাবার কখনো জন্ম সালের দিন ক্ষন খেয়াল রাখেননি। কখন আসে কখন চলে যায় সেটা যেমন আমার মনে থাকেনা তেমন মা বাবার ও মনে থাকার কথা না।বিষয়টা খুবই স্বাভাবিক। ঘটাকরে জন্মদিন পালন যে আমাদের মত ফ্যামিলির মানুষদের মানায়না। কিন্তু অন্তুর জন্মদিন সেই প্রথম থেকেই ছোট খাট আয়োজন করে ঘরোয়া পরিবেশে পালন করে আসার চেষ্টা করি। গেল বছর আমি দেশে না থাকলেও বাড়ীতে অন্তুর জন্মদিন পালন করা হয়েছিল। কিন্তু এবারের আয়োজন একটু ভিন্ন। অনেক দেশের আঙ্কেল আন্টদের সাথে অন্তুর প্রথম জন্মদিন পালন। সাথে ছিল অন্তুর সমবয়সী বেশ কয়েকজন চীনা বন্ধু। একটু হলেও অন্য বারের থেকে এ বছরের জন্মদিনটা অন্তুর জন্য একটা বিশেষ দিন ছিল। তবে দিনটা শুধু অন্তুর জন্য বিশেষ বললে ভুল হবে। যারা অন্তুর জন্মদিনে অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছিল তাদের সহ আমাদের সবার একটা বিশেষ দিন ছিল। কেননা তারপর থেকে আমাদের আর একসাথে সমবেত হওয়া হয়ে ওঠেনি। জানিনা আদৌ আর হবে কিনা।

এই ‘জানিনা আর কখনো তাদের সাথে দেখা হবে কিনা’ কথাটা বলতে একটু কষ্ট হয়। দেশের শুরুতেই উহান ভাইরাসের মহামারিতে চীন স্থবির হয়ে গিয়েছিল। জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে শুরু হল আতঙ্ক আর আতঙ্ক। জীবনে কখনো আমরা ওই রকম আতঙ্কের সম্মুখীন হইনি। দেশের আত্মীয় স্বজন, পরিবার পরিজন সবাই আমাদের নিয়ে খুবই কান্নাকাটি করত। আমরাও তাদের বোঝানোর মত শক্তিটুকুও মাঝেমধ্যে হারিয়ে ফেলতাম। খুব আতঙ্কের ভিতর দিয়ে পার করেছি তখনকার প্রতিটি মুহূর্ত। সেসময়ে ভাইরাস শুধুমাত্র চীনের ভিতর সীমাবদ্ধ ছিল, তাই দেশের কাউকে নিয়ে আমরা তেমন দুঃশ্চিন্তা করতাম না। পার্শ্ববর্তী যারা পরিচিত দেশীয় ছিল সবাই সুযোগ বুঝে নিজ দেশে চলে গেল। সাথে অন্যান্য দেশের বন্ধুবান্ধবরা ও এক এক করে সবাই যার যার দেশে চলে গেল। খুব অসহায় লাগতে শুরু করল নিজেদের। কেননা আপন মানুষের সংখ্যা দিনকে দিন কমে যেতে লাগল। মনে শক্তি নিয়ে একরকম দম ধরে পড়ে থাকলাম আমরা। ঘর থেকে না বের হয়ে, বাচ্চার সাথে খেলা করে সময় পার করতে লাগলাম। খাবার ব্যবহারে বেশ মিতব্যয়ী হতে লাগলাম। আধপেটা খেয়ে সময় পার করে দিলাম। সাহস যোগানোর মত কেউ ছিলনা। সবাই বলত দেশে ফিরে যেতে। ভেবেছিলাম আমাদের হয়তা আর বেঁচে দেশে ফেরা হবেনা। সবাইকে সবসময় বোঝাতে চেষ্টা করতাম আমরা এখানে অনেক ভাল আছি।শ্বশুর মহাশয় মাঝেমধ্যে বেশ সাহস দিতেন। সবসময় ভাবতাম দেশে একবার এই ভাইরাস ছড়িয়ে গেলে খুবই খারাপ অবস্থা হবে। কিছুদিনের ভিতর তাই হয়েছিল। আমাদের নিয়ে যারা চিন্তা করত আমরা তখন তাদের নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু করলাম।

ওই দুঃসময়ে আমার একের পর এক তিনটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ হয়েছিল। শত হতাশা আর জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে অফিসের প্রমোশন এবং গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ একটু হলেও জীবনকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য মাঝেমধ্যে স্বপ্ন দেখতাম।

এপ্রিল থেকে জুনঃএপ্রিল মাসে থাকে আমাদের বিবাহ বার্ষিকী। প্রতিবছর সামান্য কিছু আয়োজনের ভিতর দিয়ে দিনটা উদযাপনের চেষ্টা করি। কিন্তু এ বছরের পর থেকে আগামী কোন বছরেই ওই বিবাহ বার্ষিকী আর উদযাপন হবেনা বলেই ধরে নিয়েছি। কেননা গেল এপ্রিলে হারিয়েছি সেই মানুষটাকে, যে সর্বক্ষণ প্রতিটা পদক্ষেপে আমাদেরকে সাহস যুগিয়ে এসেছে। আমার শ্বশুর মহাশয়। মৃত্যুর আগের দিন ও আমাদের এখানে করোনা ভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে পরের দিন কথা বলতে গিয়ে অপর প্রান্ত হতেওনার মোবাইলের কল রিসিভ করার জন্য কেউ ছিলনা। অ্যাজমার রোগি ছিলেন উনি। করোনা ভাইরাসের কারনে ডাক্তারির নিয়মিত চেক আপে যেতে পারেননি। কেননা দেশে এপ্রিল মাসে চলছিল করোনার পিক টাইম। ডাক্তার, হাসপাতাল সবকিছুই খুবই দুরহ ছিল। হারালাম শক্তি সাহস যোগানো মাথার উপর সবসময় ছায়া দেওয়া বটবৃক্ষকে। অনেক সময় লেগেছে ওই বিয়োগান্তক ব্যথা পূরণে। হীরা (আমার স্ত্রী) এখনো পর্যন্ত নিজেকে সামলাতে পারেনা। বাবার স্মৃতি মন্থনে প্রায়শই ডুকরে ডুকরে কেঁদে ওঠে। পিতৃ হারানোর বেদনা ওকে দেখে অনুভব করে নিজেকেও সামলাতে হিমশিম খেয়ে যাই।

খুবই খারাপ সময় গেছে ওই তিন মাস। দেশ থেকে আসার সময় সৃষ্টিকর্তাকে বার বার ডেকেছিলাম। বলেছিলাম সবাইকে যেভাবে দেখে যাচ্ছি সেভাবেই যেন পাই। কিন্তু বছর পেরোতে না পেরোতেই এমন খবর চলার পথকে বেশ পিচ্ছিল করে দিল। তাইতো হীরাকে মাঝেমধ্যে বুঝ দেওয়ার শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলতাম। পিতার মৃত্যু শয্যায় পাশে থাকতে পারেনি। সাথে পিতার প্রতি সন্তানের শেষকৃত্যটুকুও আজ পর্যন্ত সে করতে পারিনি।

সাথে যুক্ত হয় দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ব্যপক উদ্বেগ। কেননা দিনকে দিন চীন এই পরিস্থিতি সামলে উঠলেও বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ চলে যাচ্ছিল খারাপের দিকে। যার ধারাবাহিকতা এখনো দৃশ্যমান। সবার জন্য দুশ্চিন্তা ক্রমাগত বাড়তে থাকল। এদিকে চীন ভালো হওয়ায় আমরা দীর্ঘদিন পরে স্বাভাবিক জীবনের দিকে যেতে লাগলাম। দীর্ঘ চার মাস পরে পরিবার নিয়ে প্রথম দরজার বাইরে পা রাখলাম। খুব হাপিয়ে উঠেছিল অন্তু। কিন্তু কোন কিছু করার ছিলনা। আমার ল্যাব সহ সার্বিক কাজ বন্ধ থাকায় অন্তুকে বাসায় বেশ সময় দিতাম ওই সময়টা। যেটা ওর একাকিত্বকে অনেকটা দূরে সরিয়ে দিত। সাথে হীরাকে ও। কেননা সদ্য পিতৃ হারানোর শোক ওর একার পক্ষে সামাল দেওয়া কষ্টকর ছিল।

মে মাসের দিকে নোটিশ আসল ক্যাম্পাস খুলবে। ক্যাম্পাসে আসা শুরু করলাম। দীর্ঘ চার মাস পরে ক্যাম্পাসে আসতে কেন জানি খুবই বেমানান লাগত। একটু আলসেমি ও কাজ করত। কেননা গেল চার মাস ইচ্ছামত ঘুমিয়েছি, বেলা করেই ঘুম থেকে উঠেছি। কিন্তু ক্যাম্পাস খোলার পরে আর সেটা হয়ে ওঠেনি। ক্যাম্পাস খোলার খবরে অন্তু ও বেশ অখুশি ছিল। তবে তখন একটু আধটু বাইরে বের হওয়া যেত। অন্তু বিকেলে তার বন্ধু বান্ধুবীদের পেয়ে খুশি থাকত। আস্তে আস্তে জীবনে আবার গতি ফিরে এল। কিছুদিনের ভিতর পুরোদমে জীবন চলতে লাগল। ফুজো শহর খুবই অল্প দিনের ভিতর আবার আগের জায়গায় চলে গেল।

জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরঃদিনকে দিন চীন করোনা ভাইরাস থেকে উত্তোরনে পুরোপুরি সফলতা দেখালেও অন্যান্য দেশ সামাল দিতে হিমশিম হয়ে উঠছিল। ভারী হতে থাকল আক্রান্ত এবং মৃত্যুর পাল্লা। আমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করলেও আত্মীয় পরিজন নিয়ে উদ্বিগ্নতা বেড়েই চলল। অনেক কষ্টে বুঝিয়ে মা বাবা সহ স্বজনদের বাড়ী থেকে খুব বেশি বের হতে দেইনি। শুধু আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে । মা বাবা দুজনেই উচ্চ রক্তচাপের রুগি। সাথে আছে মায়ের উচ্চ মাত্রার ডায়েবেটিস। প্রায় শুনতাম শরীর দুর্বল। অনেক বোঝাতাম। এটা খেয়োনা, এটা বেশি করে খাও। সব ঠিক হয়ে যাবে। কিছুদিন এভাবে যেতেই বলা শুরু করল চোখে কম দেখতে শুরু করেছে। বাম চোখে একেবারে দেখতে পাচ্ছেনা ডান চোখ ও বেশ ঝাপসা দেখছে। বাবাকেবললাম মাকে ডাক্তারের কাছে নেওয়ার জন্য। তম্মধ্যে বেশ কিছুদিন দেরি হয়ে গেছে। ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানাল চোখে রক্তক্ষরণ হয়েছে। যার চিকিৎসা কেবলমাত্র ঢাকাতে সম্ভব। আর বাম চোখের কোন ভরসা নেই। ডান চোখটা যাতে একটু ভাল রাখা যায় সেটার ব্যাপারে ট্রিটমেন্ট নিতে হবে। খুবই নিরুপায় হয়ে পড়লাম। আমরা এখানে। দেশে থাকলে মাকে ঢাকায় এনে ট্রিটমেন্ট দেওয়া সম্ভব ছিল। খাঁচার ভিতর হাত পা বাঁধা বন্দি পাখির মত মনে হত লাগল। মা বাবার দুর্দিনে নিজেকে তাদের পাশে থেকে সাহায্য না করতে পারাতে খুবই অপরাধী মনে হত। তার উপরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ভয় তো আছেই। আবার নিরুপায় হয়ে পড়লাম। মাঝে মধ্যে এমনটা মনে হত যদি সুযোগ থাকত দেশে গিয়ে মায়ের চিকিৎসা শেষে আবার ফিরে আসব তাহলে তাই করতাম।

তবে ওই দুর্দিনে ও বরাবরের মত আমার নিজের ভাইয়ের থেকেও আরও আপন জনের পরিচয় দিল উজ্জ্বল দাদা (আমার স্ত্রীর দাদা)। একটু ভরসার জায়গা আমার এই উজ্জ্বল দাদা। বিয়ের পর থেকে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু দুর্দিনে সবসময় পাশে পেয়েছি দাদাকে। দাদার পরিচিত চোখের ডাক্তার দিয়ে খুলনায় মাকে রেখে ট্রিটমেন্ট দেয়া শুরু করল। বেশ লম্বা ট্রিটমেন্ট। মাসে মাসে একটা করে ইনজেকশন নিতে হবে চোখের ভিতরেই। প্রথমে শুনেই শরীর আতকে উঠত। তিনমাস পরে চোখের ছানি অপারেশন হল। তারপর লেন্স বসাতে হবে। ডাক্তার শুধুমাত্র ডান চোখের অপারেশন করবে।তারপরেও নিশ্চিত নয় চোখ ভালো হবে কিনা। বাম চোখের আশা আপাতত বাদ। অনেক কষ্ট লাগে মায়ের জন্য। বার বার ফোনে কথা বলার সময় মা আমার কেঁদে কেঁদে বলে হয়ত আমাদের আর চোখ মেলে দেখতে পারবেনা। অন্তুর বেশ কিছু ডাক্তারি সরঞ্জামাদি (খেলনা) আছে। ভিডিও কলে কথা বলার সময় অন্তু তার ঠাম্মির চোখে ট্রিটমেন্ট করে দেয়। প্রতিদিন ঠাম্মির চোখে ট্রিটমেন্ট করে অন্তু শুধুমাত্র চোখ ভালো হওয়ার আশায়। যেন অন্তু দেশে ফেরার পরে ঠাম্মি অন্তুকে ভালভাবে দেখতে পায়।

শ্বশুর মহাশয়ের মৃত্যুশোক কাটিয়ে ওঠার আগেই মায়ের চোখ নিয়ে অনেক দুঃশ্চিন্তা এবং হতাশার ভিতর দিয়েই গেছে সেই সময়কাল।ওই সময়কার প্রাপ্তি ছিল আমার গবেষণার একটি অংশ চীনের জিয়াংসু প্রদেশের তিয়ানজিন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত সেমিনারে উপস্থাপন এবং প্রথম পুরস্কার অর্জন। শত বাঁধা বিপত্তির মধ্যেও সেদিনের সামান্য ওই প্রাপ্তির অনুভুতিটা ও অনেক আনন্দ দিয়েছিল।

অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরঃগেলতিনমাস ও মায়ের চোখের ট্রিটমেন্টের খবরটায় আমাদের কাছে বেশ ভাবিয়ে তোলে।চোখের ছানির অপারেশন হয়েছে এখন ডাক্তার বলেছে লেন্স বসাতে হবে। ডাক্তার অপারেশন ভালো হয়েছে বললেও মায়ের কাছে চোখের দৃষ্টি শক্তির উন্নতির ব্যাপারে তেমন কোন কিছু অনুভব করতে পারেননা। আগামী মাসে লেন্স দেওয়ার পরেই পরের টুকু বোঝা যাবে। জানিনা সৃষ্টিকর্তা এক্ষেত্রেও কপালে কি লিখেছেন। মহাবিপদেনিমজ্জিতহয়েপ্রতিটি দিন, প্রতিটি ক্ষন বুঝতেপারিপৃথিবী, জীবনওপ্রিয়জনদেরমূল্য।

এই সময়কালে আমার চতুর্থ গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। যেটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে নিজের একধাপ উন্নীত হিসেবে ভেবেছি। ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের রিকোয়ারমেন্ট হিসেবে একটি গবেষণা পত্রই যথেষ্ট। সেজন্য ২০২০ সালের একের পর এক প্রকাশিত চারটি গবেষণা পত্র একটু হলেও সব কষ্টকে ভুলিয়ে মাঝেমধ্যে আনন্দের খোরাক হয়ে দাঁড়ায়।

আবার অন্তুর জন্মদিন আসন্ন। এবার ও তার জন্মদিন পালন নিয়ে সে খুবই আনন্দিত। কিন্তু এবার নেই গতবারের মত দেশী, বিদেশী আঙ্কেল আন্টরা। সেজন্য ধরে নেয়া যায়, এবারের জন্মদিন চাইলেও খুব বেশি জাঁকজমক হবেনা। বিষয়টাআমরা বুঝলেও অন্তুকেবলে ওর ছোট্ট মনে কষ্ট দিতে চাইনা।

২০২০ এর পুরোটা সময় কেটেছে করোনা আতঙ্কে। মৃত্যুর ভয় পিছু ছাড়েনি। পৃথিবীতে কোনকিছুই চিরস্থায়ী নয়। ক্ষনিকের জন্য সবার এখানে বিচরন। এরপর একে একে বিদায় নিতে হবে সবাইকে। তারপরেও কারও অনাকাঙ্ক্ষিত বিয়োগাত্মক ঘটনা অনেক পীড়া দেয়। এখন অনেকটা কাটিয়ে উঠলেও শ্বশুর মহাশয়ের অনাকাঙ্ক্ষিত চলে যাওয়াটা ২০২০ সালের মধ্যে সবচেয়ে হৃদয় বিদারক ঘটনার মধ্যে অন্যতম। ভালমন্দ মিলিয়েই মানব জীবন। ওই জিনিসটা মনে ধরে আগামী দিনের পথচলা। খারাপ না থাকলে যেমন ভালোর আনন্দটা মলিন তেমনি দুঃসময় কেটে গিয়েই সুসময় আসে। সেই সুসময়ের আশাতেই বুক বেঁধে বলতে চাই সবার জীবনে ভালো কাটুক আগামী বছর। করোনা আতঙ্ক কেটে গিয়ে সবার মাঝে শুভ্রতা ছড়াক নির্মল বায়ু। সবার জীবনে আগামী বছরের প্রতিটা ক্ষন হোক সফলতায় ভরা, সেই শুভ কামনায় সকলকে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার-২০২১’।

লেখকঃ অজয় কান্তি মন্ডল, গবেষক, ফুজিয়ান এগ্রিকালচার এন্ড ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি, ফুজো, ফুজিয়ান, চীন।

 

The post সফলতা এবং ব্যর্থতার ফিরে দেখা একটি বছর appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/37QUz0r

No comments:

Post a Comment