শাহজাহান কবীর
যখন সময় থমকে দাঁড়ায়, নিরাশার পাখি দু’হাত বাড়ায়। খুঁজে নিয়ে মন নির্জন কোণ, কী আর করে তখন, স্বপ্ন… স্বপ্ন…স্বপ্ন…দেখে মন…।
সোমবার অশুভ শক্তি বিনাশের প্রার্থনায় বিষাদময় পরিবেশে দুর্গতি নাশিনী দেবী দুর্গার বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে পালিত হলো বিজয় দশমী। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা ইউনিয়নের ৫টি মন্ডপে এবার দুর্গোৎসব করা হয়। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারির কারণে এবার সম্পূর্ণ আলাদা রূপে পালিত হলো বাঙালির চিরায়ত এই সম্প্রীতির উৎসব। গত ঢাক-ঢোল, ঝাঝর, কাসর, বাঁশি বাজিয়ে উলুর ধ্বনীতে মুখরিত করে ধুপ আর ধনূর ধোয়ায় দেবীর আরতি করে ৫দিন যাবৎ চললো পূজা। কিন্তু দর্শণার্থীর সংখ্যা ছিল খুবই কম। কোন রকম দায়সারাভাবে দেবীর পূজা ও বিসর্জন হলো এবার। হলো না সেই মিলনমেলা। করোনায় জমলো না বাঙালির এ শারদ আয়োজন। ছোট ছোট শিশুরা পেলোনা মেলার দেখা। তাদের হাতে উঠলো না কোন খেলনা। জন্মস্থান এ জনপদে হওয়ায়, ছোটকাল থেকে দেখে আসছি দুর্গাপূজা মানে বাঁধভাঙা আনন্দ-উচ্ছ্বাস। পূজা আসলেই যাত্রাপালা, কবিগান, সার্কাস আরও কত কী! পূজার শুরুতেই নানা রকম পণ্যের পশরা সাজিয়ে বসতো মেলা। মেলায় মনোহরি, মিষ্টি, আঁখ, লেবু আর নানা ধরণের মন্ডা মিঠাইয়ের দোকান বসতো রাস্তার দু’ধার জুড়ে। আরতির প্রসাদ খাওয়ার ধুম পড়ে যেতো মন্ডপে মন্ডপে। ঢুলির ঢাকের তালে তালে চলতো আরতি। সে এক অন্য রকম আনন্দ, অন্য রকম অনুভূতি।
আর চায়ের দোকানে স্থানীয় লোকজন হিন্দু-মুসলমান মিলে বসে পার করতো এক ব্যস্ত সময়। প্রত্যেকের বাড়ি জড়ো হতো আত্মীয় স্বজন। জমিয়ে খাওয়া দাওয়ার মজার আসর বসতো বাড়ি বাড়ি। মা-বোনদের মধ্যে হতো শঙ্খ বাজানো, উলুধ্বনী, ধুপ প্রজ্জ্বলনসহ নানা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হতো। গানের তালে তালে নাচতো শিশুরা। সিঁদুর খেলা ছিলো অন্য রকম আনন্দের। বড়দের প্রনামে মিলতো কড়ি। কিন্তু মহামারি করোনা এবার সব ম্লান করে দিয়েছে। শক্তির দেবী দুর্গার কাছে করোনা থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে প্রত্যেক মন্ডপে। আসলে সময় থমকে দাঁড়ালে কী আর করার থাকে। তখন আমাদের মন শুধু স্বপ্নই দেখে।
The post মন স্বপ্নই দেখে appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3osNjy1
No comments:
Post a Comment