এসএম বাচ্চু
বাংলাদেশ নামক সবুজ শ্যামলা রাষ্ট্রের দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা। বৃহত্তম এই উপজেলার আয়তন ৩৪৪ বর্গ কিলোমিটার। স্থাপনা করা হয়েছে ১৯৮৩ সালে। এই উপজেলাটি ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এবং জনসংখ্যার দিক দিয়ে ৪ লাখের বেশি।
১২ টি ইউনিয়নের মধ্য প্রাণকেন্দ্র তালা সদর ইউনিয়নে ৪৬ হাজারের উর্দ্ধে জনসংখ্যার বসবাস এবং ভোটার সংখ্যা সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ২৬ হাজার ৩২৫। জনসংখ্যার দিক দিয়ে এগিয়ে থাকলেও পৌরসভার সুবিধা থেকে বঞ্চিত তালা সদর ইউনিয়নবাসী।
পাশর্^বর্তী কলারোয়া উপজেলা সদরে অবস্থিত কলরোয়া পৌরসভার ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ২৮০ জন এবং কেশবপুর পৌরসভার ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৭৭৫ জন। তাদের থেকে জনসংখ্যা দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও তালাকে পৌরসভা করার বাধ্যবাধকতা কোথায়? প্রশ্ন সাধারণ জনমনে।
তালাকে পৌরসভা করতে ইতোপূর্বে অনেক আন্দোলন করেছেন তালাবাসী। এসকল আন্দোলনে তালা উপজেলার সর্বস্তরের জনগন স্বতস্ফুর্ত্বভাবে অংশগ্রহন করলেও হয়নি তালা পৌরসভা। সরকারি বিধি অনুযায়ী সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও তদারকি আর গাফিলতির কারনে সেটি বাস্তবায়ন করার জন্য সঠিক নেতৃত্ব অভাবে আজও আমরা ধোয়াশার মধ্য বসবাস করছি।
তথ্য হিসেবে জানাযায়, ১৯৮৩ সালে সাবেক রাষ্ট্রপ্রতি পল্লীবন্ধু এরশাদ ও সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখ্ত উপজেলা ৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একদিনে সরকারী করন করেছেন। করেছেন তালাকে উপজেলা রুপান্তর। পরবর্তিতে উপজেলার ভূখন্ডে পাটকেলঘাটা থানার প্রতিষ্ঠা করান সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম।তার পর হতে আন্দোলন সংগ্রাম করেও কোন হচ্ছে না পৌরসভা প্রতিষ্ঠার কার্যক্রমের গতি।
এদিকে পৌরসভা ঘোষণার সরকারি বিধি অনুযায়ী : জনসংখ্যা, জনসংখ্যার ঘনত্ব, স্থানীয় আয়ের উৎস, অকৃষি পেশার শতকরা হার, এবং এলাকার অর্থনৈতিক গুরুত্বসহ সংশি¬ষ্ট অন্যান্য তথ্য বিশে¬ষণ করে পর সরকারি গেজেটে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে যে কোন পল্লী এলাকাকে পৌরসভায় রুপান্তর করে ডিজিটাল সেবা কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া যাবে আরেক ধাপ। তার সকল কিছুই ঠিক থাকলেও অদৃশ্য কারনে আটকে আছে তালা পৌরসভা ।
তালা সদর ইউনিয়ন বাসী জানান, উপ-শহরে রয়েছে অনেক অকৃষি জমি। আয়ের উৎস্য তালা একটি ব্যবসাবান্ধব উৎপাদনশীল উপজেলা। যেখানে দেশের বিখ্যাত আম, মাছ এবং সবজি উৎপাদন হয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হয়। আর তার থেকে সরকার পেয়ে থাকে ট্যাক্সের টাকা। কিন্তু সরকারকে ট্যাক্স দিয়েও তালাবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া তালাকে পৌরসভা ঘোষনা করা কিন্তু আজও তা বাস্তবায়ন হচ্ছেনা।সেটা বড় আক্ষেপের বিষয়। আমরা তো তালাকে পৌরসভা দেখে যেতে পারলাম না আমাদের উত্তরসূরীরা দেখতে পাবে কিনা সেটা ধুব্রজ¦ালে আটকে আছে।
সর্বশেষ পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য তালায় সফরে আসার পরে সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া আফরিন মাসিক সমন্বয় মিটিং এর মাধ্যমে পাটকেলঘাটাকে উপজেলা এবং তালাকে পৌরসভা করার প্রস্তাবনা রেখে বেশ কিছু কাগজপত্র তৈরি করেছিলেন। কিন্তু তিনি বদলী হওয়ার পরে ঐ বিষয়টি নিয়ে কেউ আর কোনদিন ভাবনায় আনেননি।
তালা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাংবাদিক এসএম নজরুল ইসলাম জানান, তালাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি তালাকে পৌরসভা করা। যার দাবিতে অসংখ্যাবার আন্দোলন সংগ্রাম ও মানববন্ধন হয়েছে কিন্তু আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এই অদৃশ্য কারনের ধুব্রজ¦ালকে সরিয়ে অতিদ্রুত পৌরসভা বাস্তবায়নের দাবি জানা”্ছ।ি
পৌরসভা বাস্তবায়ন কমিটির নেতা সাংবাদিক মীর জাকির হোসেন, সাংবাদিক এসএম জাহাঙ্গীর হাসান জানান, আমার তালা কে পৌরসভায় রুপান্তিরত করা জন্য জন্য অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। করেছি মানববন্ধনও। কিন্তু অদৃশ্য কারণে আটকে আছে পৌরসভার রুপান্তরের কার্যক্রম। আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি তালাকে পৌরসভা করা হোক।
তালা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার জানান, তালা পৌরসভা হওয়াটা অতিব প্রয়োজন। তালাবাসীর দীর্ঘদিনের আশা এবং স্বপ্ন। তবে অনেক আগেই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে ডকুমেন্টরি জমা দেওয়া হয়েছিল পরে করোনা ভাইরাসের কারনে সেটি তদারকির অভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। মাননীয় প্রাণ মন্ত্রী দেশে যে ভাবে উন্নয়ন করে চলেছেন তাতে দেশবাসী খুশি। আমারও দাবী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তালাকে যেন পৌরসভা ঘোষণা করেন।
The post খোলা কলাম: তালাকে পৌরসভা করার বাধা কোথায়? appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3iRYgqx
No comments:
Post a Comment