নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০৪১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশের সব ইউনিয়ন পরিষদকে (ইউপি) শক্তিশালী করতে একগুচ্ছ সাধারণ সেবা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ লক্ষ্য সাধারণ মানুষের দোড়গড়ায় সকল প্রকারের সেবা পৌছে দেওয়ার লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিসের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে তৈরী করা হয়েছে ওয়েব সাইট।
কিন্তু সাতক্ষীরা জেলা তালা উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্য ১২টি ওয়েব সাইটে গিয়ে কোন তথ্যই ঠিকমতো পাওয়া যায় না। যা কিছু তথ্য প্রথমে যুক্ত করা হয়েছিল সেসব তথ্যই এখনও রয়ে গেছে। অধিকাংশ ইউনিয়ন পরিষদের ওয়েব সাইটে নতুন করে কোন তথ্য হালনাগাদ করা হয়নি। কোনটিতে চেয়ারম্যান বা পরিষদের সদস্যদের কোন তথ্যই নেই। নেই বর্তমান পরিষদের সদস্যদের তালিকা।
এছাড়া বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। আবার কোনোটিতে এক ইউনিয়নের তথ্য এনে অন্য ইউনিয়ন পরিষদের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে কঠোর নির্দেশনা থাকলেই মানছেননা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের কর্তারা। এমনি এই সকল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকারিভাবে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে দেওয়া হয়েছে ২-৩টি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ। নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ২ জন করে নিয়ন্ত্রক। তবে এদের কোন বেতন ভাতাদি দেওয়া হয় না সরকারিভাবে। এদেরকে কর্ম করে অর্থ উর্পাজনের জন্য বিভিন্ন সময় ট্রেনিং করা হয়েছে। তার পরেও এরা কেউ কর্ণপাত না করে বসে আছেন।
এতে করে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল পদ্ধতিতে তথ্য জানার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেকেই। এছাড়া ত্রাণ ও পূনর্বাসন বিষয়ক, হতদরিদ্রের তালিকা, ভিজিএফ, মহিলা বিষয়ক, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ভিজিডি, সমাজসেবা বিষয়ক, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, প্রবাসীদের তালিকা, মুক্তিযোদ্ধার তালিকা, হাটবাজারের তালিকা, কাবিখা, কাবিটা, টি আর, জি আর, এলজিএসপি, এলজিডি, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, এনজিও, ব্যাংক, বীমা, মসজিদ, মন্দির, ঈদগাহ, এতিমখানা, মাজার, আশ্রম, কবরস্থানসহ বিভিন্ন তথ্য থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে এর কোনো পূর্নাঙ্গ তথ্যই নেই।
ওয়েব সাইট ঘুরো দেখা যায়, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্য তালা সদর ইউনিয়নের সহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে নেই চেয়ারম্যান মেম্বরদের নামের তালিকা। ইউনিয়নগুলো হলো ধানদিয়া, নগরঘাটা, সরুলিয়া, কুমিরা, তেতুঁলিয়া, তালা সদর, ইসলামকাটি, মাগুরা, খলিষখালী, খেশরা, জালালপুর, খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদ।
উপজেলার সীমানা ক্যাটা গড়ির হিসেবে ১নং ধানদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য বাতায়নের সাইটে দেখা যায়, সর্ব শেষ হালনাগাদ করা হয়েছে ২০১৯ সালের ২মাসের ১৯ তারিখে। সময় হলো ১০টা ১৫ মিনিটে। এই পোর্টালে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নাম দেওয়া থাকলেও নেই কোন প্রকারের ছবি। নেই অগণিত তথ্যর আপডেট। ২নং নগরঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের বাতায়নে দেখা গিয়েছে,শুধু মাত্র চেয়ারম্যানের নাম দেওয়া আছে। তবে দেওয়া নেই কোন প্রকারের মেম্বারদের নাম ছবি মোবাইল নাম্বার। এই পোটালটি সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়েছে ২০১৯ সালের ১০ মাসের ২৮ তারিখ। সময় ১২টা ৩৩ মিনিট।
৩নং সরুলিয়া ইউনিয়নের ওয়েব সাইটের চিত্রে দেখা যায়, পূর্ববর্তী চেয়ারম্যানদের নাম ছবি মোবাইল নাম্বার সঠিক ভাবে দেওয়া নেই। বর্তমান চেয়ারম্যান পরিষদের কোন আপডেট সঠিক নই। নেই কোন প্রকারের সাধারণ সেবার তথ্য। তবে বর্তমান চেয়ারম্যান ২-৩ পিরিয়ড চেয়ারম্যান গিরি করলেও এসব কাজের বিষয়ে উদাসীন। ৪নং কুমিরা ইউনিয়ন পরিষদের সর্বশেষ হালনাগাদের সময় তারিখ তো দেওয়া নেই। নেই কোন চেয়ারম্যান মেম্বারদের ছবি, নাম, মোবাইল নাম্বার। সাধারণ সেবা তো থাকার কথা ছিলো কিনা জানেন না সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকারীরা।
৫নং তেতুঁলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছেন বহাল তবিয়াতে অন্যায় কর্মকান্ড জড়িত থাকার। এখানে নেই সর্বশেষ আপডেটের সময় তারিখ। কোন তথ্য পাওয়া যায়নি এই ওয়েব সাইটে।
উপজেলার প্রাণ কেন্দ্র তালা সদর ইউনিয়ন পরিষদ,এই পরিষদের পাওয়া গিয়েছে সব থেকে বেশি গরমিল। এখানে সর্ব প্রথমে তথ্য ভূল পাওয়া গিয়েছে চেয়ারম্যানের নামের তালিকা বলে একটি ফোল্ডার থাকে। সেই নামে কোন ফোল্ডার নেই। নেই কোন চেয়ারম্যানদের নামের তালিকা বর্তমান চেয়ারম্যান সহ মেম্বারদের তথ্যও। এমনকি যাদের আতœত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামের ভূখন্ড সেই মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা পাওয়া যায়নি ওয়েব পোর্টালে।নেই তথ্য হালনাগাদ তারিখ দেওয়া আছে ২০১৮ সালে ৭ মাসের ১২ তারিখ। সময় হলো ১২ টা ৪০ মিনিট।
৭নং ইসলামকার্টি ইউনিয়ন পরিষদে দেখা যায় কোন প্রকারের তথ্য হালনাগাদের সময় তারিখ দেওয়া নেই। নেই কোন বর্তমান ও পূর্ববর্তী চেয়ারম্যানদের নাম মোবাইল নাম্বার। ৮নং মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়েছে ২০১৮ সালের ১ মাসের ২৫ তারিখ। সময় দেওয়া আছে ১ টা ২৫ মিনিট। নেই কোন চেয়ারম্যান মেম্বারদের নামের তালিকা ও উপকারভোগীদের তথ্যও।
৯ নং খলিষখালী ইউনিয়ন পরিষদের বাতায়ন সাইটে দেখা গিয়েছে সর্বশেষ কবে হালনাগাদ করা হয়েছে তার কোন সময় তারিখ সাল দেওয়া নেই। পূর্ববর্তী মেম্বার ও বর্র্তমান মেম্বরদের নামের তালিকা মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়নি বাতায়নে।
১০নং খেশরা ইউনিয়ন পরিষদ নামে একটি বাতায়ন নাম মাত্র থাকলেও নেই সর্বশেষ আপডেটের সময়, তারিখ সাল। বর্তমান চেয়ারম্যানকে, মেম্বরকে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া নেই।
১১নং জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদে ওয়েব সাইটে সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়েছে ২০১৯ সালের ৯ মাসের ২৩ তারিখ। সময় দেওয়া আছে ১১টা ১১ মিনিটে। নেই কোন চেয়ারম্যান মেম্বরদের সঠিক তথ্য।
১২নং খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদের বাতায়ন সাইটে সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়েছে ২০১৮ সালে ৪ মাসের ২ তারিখ। সময় ৩ টা ২৫ মিনিট। সেটাও আবার প্রায় ৪ বছর আগের হালনাগাদ।
এসব বিষয় নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করে উপজেলার শুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, তালা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক বিএম জুলফিকার রায়হানসহ উপজেলা সুরক্ষা, নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা কমিটির সভাপতি শেখ ইমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক এসএম হাসান আলী বাচ্চু, সদস্য বিএম বাবলুর রহমান, লিটন হুসাইন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের সাইটগুলো আপডেট করা হচ্ছে না সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধানদের গাফিলতির কারনে। ফলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং সহজেই তথ্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার প্রতিটা ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ।
এসব তথ্য হালানাগাদ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের তালা উপজেলার সহকারী প্রোগ্রামার ইমারন হোসেন বলেন, আমরা কয়েকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধানকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছি। তবে তারা কোন প্রকারের কর্ণপাত করেননি এই বিষয় নিয়ে। আমার অতিদ্রুত একটি ট্রেনিংয়ের ব্যাবস্থা করবো।
The post তালা উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের কোনটিতে নেই সঠিক তথ্য appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3sWfVlL
No comments:
Post a Comment