Friday, February 26, 2021

সাতক্ষীরায় ছড়িয়ে পড়েছে গবাদি পশুর ক্ষুরারোগ https://ift.tt/eA8V8J

এসএম শহীদুল ইসলাম: সাতক্ষীরায় ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে গরুর ক্ষুরারোগ। আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে শতশত গরু। এতে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন খামারীরা।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১ লক্ষ ৬০ হাজার গবাদিপশু রয়েছে চরম ঝুঁিেকতে। গবাদিপশু খামার মালিকরা জানান, সদর উপজেলার ধুলিহর, ব্রহ্মরাজপুর, ফিংড়ি, আলিপুর, লাবসা, ঝাউডাঙ্গা, বল্লী, বাঁশদাহ ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় গবাদি পশুর ক্ষুরারোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ঘোষপাড়ায় মারা গেছে অন্তত ১৮টি গরু। ফিংড়ির বালিথায় মারা গেছে আরও কয়েকটি। একই ইউনিয়নের ফয়জুল্যাপুরে মারা গেছে দুটি গরু। আক্রান্ত হয়েছে শতশত গরু।

 

প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পরও এই রোগে আক্রান্ত পশুকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এই উপজেলার গবাদি পশু নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারীরা। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর বাজার এলাকার সুব্রত বিশ্বাস নয়ন জানান, গত এক সপ্তাহের মধ্যে তার এলাকার সুভাস ঘোষের ১টি, কার্তিক ঘোষের ১টি, গৌর ঘোষের ১টি, বাবুরাম বিশ্বাসের ১টি, বাবু বিশ্বাসের ১টি, নিতাই ঘোষের ১টি, নিরঞ্জন ঘোষ ছট্টু মেম্বরের ৬টি, হরেন্দ্রনাথ ঘোষের ১টি ও বাবু ঘোষের ১টি গরু ক্ষুরারোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় প্রত্যেক গোয়ালের গরু। তিনি আরও জানান, হঠাৎ করেই গবাদি পশুর মধ্যে ক্ষুরারোগ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, প্রথমে গরুর পায়ে ক্ষতচিহ্ন দেখা যায়। এরপর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। মুখ দিয়ে লালা ঝরে। রোগাক্রান্ত গরুটি হাঁটাচলা করতে পারে না। কোনো প্রকার খাবার খেতে পারে না। স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপরও এই রোগে আক্রান্ত গরুকে বাঁচানো যাচ্ছে না। অভিযোগ করেন, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম একেবারেই ভেঙে পড়েছে। রোগাক্রান্ত পশুর ব্যাপারে পরামর্শ নিতে সরকারি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায় না।

 

এই সময়েও বাণিজ্যিকভিত্তিতে পশুর চিকিৎসা দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বলে তারা অভিযোগ করেন। তাদের পশুকে ক্ষুরারোগের আক্রান্ত থেকে প্রতিকার চেয়ে ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবি জানান খামার মালিকরা।সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ডেইরি ফার্মার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাম প্রসাদ মন্ডল বাবু বলেন, হঠাৎ করেই এই রোগ দেখা দিয়েছে। শুধু সাতক্ষীরায় নয়, সারা দেশে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, রোগে আক্রান্ত হওয়ার গবাদি পশু হার্ট লিক হয়ে শ্বাস কষ্টজনিত কারণে তাৎক্ষণিক মারা যাচ্ছে। ভ্যাকসিন দিলেও কাজ হচ্ছেনা। করোনা ভাইরাসের মতই এ রোগের ভাইরাস মিউটেশন চেঞ্জ করে। আমাদের দেশে গবাদি পশুর ৩টি স্টেজের উপর ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। কিন্ত যে রোগ দেখা দিয়েছে তাতে আছে ৫টি স্টেজ। ফলে ভ্যাকসিনে কোন কাজ হচ্ছেনা।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার জয়ন্ত কুমার সিংহ জানান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১লক্ষ ৬০ হাজার গবাদিপশু রয়েছে। কিন্তু ভ্যাকসিন পাওয়া গেছে মাত্র ৪ হাজার। সরকারি ভ্যাকসিন ১২ টাকা। সেখানে বেসরকারি ভ্যাকসিন ৫০টাকা। সরকারি ভ্যাকসিন সংকট থাকায় বেসরকারিভাবেও ভ্যাকসিন দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। খামারীরা বেসরকারিভাবে উন্নত ভ্যাকসিন দিলেও গবাদি পশু বাঁচানো যাচ্ছেনা। বিশেষ করে গবাদিপশুর বাছুর আক্রান্ত হলে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছেনা। তিনি বলেন, সদর উপজেলায় ৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিম বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে। ডাক্তার জয়দেব বলেন, ক্ষুরারোগে আক্রান্ত হয়ে কোন গরু সুস্থ্য হলে সেই সুস্থ্য গরুর রক্ত আক্রান্ত গরুকে দিলে এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। তবে কেউ রক্ত দিতে ও নিতে চায়না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার শহিদুল ইসলাম আগেই বলেছেন, গরু ক্ষুরারোগে আক্রান্ত হচ্ছে খবরটি শুনেছি। এবিষয়ে ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তারা কাজ করছে। চাহিদার তুলনায় ভ্যাকসিন কম থাকায় একটু সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

The post সাতক্ষীরায় ছড়িয়ে পড়েছে গবাদি পশুর ক্ষুরারোগ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3kvdWRE

No comments:

Post a Comment