নিজস্ব প্রতিনিধি: অনিকের বয়স মাত্র ৫ বছর। বাবা- মায়ের একমাত্র সন্তান অনিকের এ বয়সে হেসে খেলে বাবা-মায়ের মুখের হাঁসি ফুটানোর কথা। কিন্তু তাদের সেই হাসি মলিন হয়ে আছে।
শিশুটি অজানা কিছু কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত। অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করে দিন কাটছে শিশুটির। অসহ্য যন্ত্রণায় মিনিটে ৩-৪ বার চিৎকার করে ওঠে। এই যন্ত্রণাটি ২-১ দিনের নয়, যে বয়সে শিশুরা কথা বলতে শেখে, সে বয়স থেকে অনিক শুধুই চিৎকার দেওয়া ছাড়া আর কোন কথা বলেনি। আবার বাম পায়ের গোড়ালী ধিরে ধিরে বাঁকা হয়ে যেতে থাকে, যার কারণে অনিক ঠিকভাবে হাঁটতেও পারে না। অভাবে তাড়নায় ডাক্তার দেখালেও ঔষধ কিনে দেওয়ার সামর্থ হয়ে ওঠেনি অনিকের বাবা-মায়ের। আর এভাবে চলতে থাকলে হয়ত খুবই দ্রুত অনিক নামের একটি জীবন প্রদীপ নিভে যাবে, সবার অগোচরে। একমাত্র শিশু সন্তান অনিকের এই কষ্ট সইতে না পেরে কাতর হয়ে পড়েছে দরিদ্র্য বাবা-মা। অশ্রুসিক্ত নয়নে একমাত্র বুকের মানিককে বাঁচাতে বিধাতার কাছে সাহায্যের আকুতি করছে অনিকের মা। হয়ত কোন একদিন অনিক মা বলে ডাকবে এই আশায় বুক বেঁধে আছে।
একমাত্র সন্তান অনিককে নিয়ে জীবিকার তাগিদে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার রেজিস্ট্রি অফিসপাড়ায় বসবাস করছে অনিকের বাবা অসিম ঘোষ ও মা সন্ধ্যা ঘোষ। ছোট্র একটি চায়ের দোকান ভাড়া নিয়ে কোনমতে সংসার চালানো যেখানে দায়, সেখানে একমাত্র প্রতিবন্ধী ছেলে চিকিৎসার অভাবে অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করার দৃশ্য প্রতিনিয়ত সহ্য করে যেতে হচ্ছে। হঠাৎ হঠাৎ কান চেপে ধরে চিৎকার করে ওঠে অনিক। চিৎকার করে নিজের যন্ত্রণা প্রকাশ করতে চায়, কিন্তু কোনো কথা বলতেও সে অক্ষম। না ডাকতে পারে মা’কে, না বাবাকে। না কোথাও হেঁটে যেতে পারে, না সে নিজে খেতে পারে। দিন-রাত বাবা-মায়ের সামনে যন্ত্রণায় ছটফট করে কাতরালেও বাবা-মায়ের চোখের জল ফেলে শুধু দেখে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারছে না।
অনিকের মা সন্ধ্যা ঘোষ জানান, গর্ভকালীন অপুষ্টির কারণে অনিক সাত মাসে জন্ম নেয় ১ কেজি ৪শ’ গ্রাম ওজন নিয়ে। জন্মের পরবর্তী ১০ মাসের মধ্যে তিনবার নিউমোনিয়া হয় অনিকের। ২২ মাস বয়সে অনিকের শারিরীক সমস্যার নানান লক্ষণ দেয়া দেয়। স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক থেরাপি দিয়েও কোন ভালো ফলাফল হয়নি। ২০১৮ সালে ডাক্তার মেহেদি নেওয়াজ বলেন, অনিক টেমো রোগে আক্রান্ত। তাকে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা হলে আরো গুরুত্বর সমস্যার আশংকা রয়েছে। কিন্তু অর্থাভাবে বিগত ২ বছর যাবত কোন চিকিৎসাই করা হয়নি। এছাড়া ডা. হাফিজুল্লাহ ও ডা. মো. শামছুর রহমান।
বর্তমানে হোমিও প্যাথি চিকিৎসা চলছে। শিশুটিকে বাঁচাতে দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানায় শিশুটির বাবা-মা। শিশুটির চিকিৎসার জন্য এখন কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা প্রয়োজন বলে জানান অনিকের মা। কিন্তু অভাব-অনটনের সংসারে দারিদ্র্য বাবার পক্ষে এই টাকা জোগাড় করে ছেলের চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। যতই দিন যাচ্ছে, ওই শিশুর বেঁচে থাকার আশা ততই অনিশ্চয়তায় পড়ছে। তাই শিশু সন্তানকে বাঁচাতে সমাজের বৃত্তবানদের সহযোগিতা চাইলেন অনিকের বাবা মা।
অনিকের সাথে দেখা করা বা যে কোন ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের উত্তর পাশে সাতক্ষীরা ইভেন্টস লি. এর অফিসে এসে অনিককে দেখতে পারেন এবং প্রয়োজনে ০১৭১৯-৫৬৫৬৬৯ (অনিকের পরিবার) নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন।
The post মা ডাকটি শোনার আকুতি অনিকের মায়ের appeared first on Daily Patradoot Satkhira.
from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/37V3sWG
No comments:
Post a Comment