Saturday, February 20, 2021

এ সময়ে ভোট ভাবনা https://ift.tt/eA8V8J

অধ্যাপক ইদ্রিস আলী
আমরা এখন এক কঠিন সময় অতিক্রম করছি। নতুন তথ্য প্রযুক্তির যুগে এসে নবীন ও প্রবীনদের মধ্যে চিন্তা ভাবনার ব্যাপক পাথর্ক্য দেখা যাচ্ছে। অবশ্য নতুন পুরাতনের মধ্যে দ্বন্দ্ব সব সময় ছিল। লেখক কবি সাহিত্যিক দার্শনিক যুগে যুগে পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে নতুন নতুন তথ্য ও তত্ত্ব আবিস্কার করেছেন। বতর্মান কোভিড-১৯ এ আমরা বহু দেশের সাথে পরিচিত হয়েছি। জ্ঞান-বুদ্ধিওয়ালা বহু মানুষ এখন হতাশা প্রকাশ করেন। আবার অনেকে আশাবাদী হচ্ছেন। সভ্যতার ক্রম বিকাশের ইতিহাস আমাদের অনেক তথ্য দেয়। বাঙালি জাতির আত্ম পরিচয় এবং
মর্যাদার জন্য যে দীর্ঘ সংগ্রাম সেটার প্রাপ্তিই হল বাংলাদেশ। এখন আমাদের ভাবতে হচ্ছে আমরা কি আমাদের কাক্সিক্ষত বাংলাদেশ পেয়েছি ? সংবিধান সংসদ আমাদের বলছে এদেশের মালিক জনগণ। কিন্তু বাস্তবে সেটা দেখা যাচ্ছেনা। আমি আমার কথা বলব, নির্ভয়ে বলব। আমার ভোট আমি দেব। যাকে খুশী তাকে দেব। একথা অসার অবাস্তব বলে মনে হচ্ছে।

মানুষের সাধারণত আগ্রহ থাকে সাময়িকভাবে কী পাবে তার উপর। নিজের এক শতক জমি চলে গেলে যার মাথা ঠিক থাকেনা, সেখানে ভোট দেওয়া না দেওয়ার বিষয়টি মেনে নিচ্ছে কেন? আসলে আমরা যখন সবাই নিজে নিজের কথা না, নিজের স্বার্থের কথা ভাবি বেশী করে, তখন যৌথ স্বার্থ, যৌথ চিন্তা খুব বেশি কাজ করেনা। হতাশা আর লোভ আমাদের গ্রাস করে ফেলে।

হতাশা একটি রোগ। এ রোগের চিকিৎসা হওয়া দরকার। তার জন্য বেশি বেশি পড়াশুনা দরকার। শিশুদের জন্য নিরাপদ বিশ্ব যদি আমরা গড়তে চাই, তাহলে ভাবতে হবে কিভাবে সামনের দিকে অগ্রসর হব। মুনাফা ব্যবসা ব্যক্তিগত লোভ লালসা মানুষের সাধারণ প্রবনতা। বিকল্প হিসেবে সহজ উপায় খুঁজে বের করতে হবে আমাদের। তাই নতুন করে সমস্যা চিহ্নিত করে তার উত্তর খুঁজে বের করতে হবে। নিজস্ব বুদ্ধি ও মেধা দিয়ে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। যিনি ভোটে দাঁড়ােচ্ছেন তার সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে। আবার যিনি ভোট দিবেন তারও ইচ্ছা পছন্দের বিষয় আছে। পছন্দ অপছন্দের বিষয়ে অবশ্যই কারণ থাকে। সাধারণত জ্ঞান বুদ্ধির তারতম্যের কারণে মানুষ অনেক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। নিজের স্বার্থ নিয়ে অল্প অল্প সচেতন হলেও সমাজ বা দেশ সম্পর্কে খুব বেশি সচেতন না। কিছু কিছু সচেতন মানুষ সমাজ বা দেশ সম্পর্কে সচেতন। তাই বিশেষ বিশেষ জ্ঞানে সমৃদ্ধ মানুষ হয় রাজনীতি সচেতন। তারা সমাজ রাষ্ট্র রাজনীতি নিয়ে চিন্তা করেন, গবেষণা করেন। মানুষ হওয়ার যে দীর্ঘ সংগ্রাম সেখানে লড়াই, লড়াই এবং লড়াই। এছাড়া কোন পথ নেই। এখন বলা হচ্ছে ভোট ব্যবস্থা একটি সমস্যা। আসল সমস্যা হল পুজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা। এখানে সকল কাজের মধ্যে মুনাফার খোঁজ করা হয়। সমাজের প্রায় সর্বক্ষেত্রে মুনাফাভিত্তিক মনোবৃত্তিতে আচ্ছন্ন। আধুনিক সমাজ চলে জ্ঞান বিজ্ঞানের আলোকে। কিন্তু বাস্তবে মাদ্রাসা মসজিদ মন্দির গির্জাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে মানুষের সামনে ধর্মীয় বয়ান দিয়ে ভোট চায় যেকোন নির্বাচনে প্রার্থীরা। ইউনিয়ন উপজেলা জাতীয় সংসদ যে কোন নির্বাচনে প্রার্থীরা জনগণের সামনে ইশতেহার দিবেন। মাঝে মাঝে দিয়েও থাকেন। কিন্তু বাস্তবে কাজ না হওয়ায় জনগণ নেতাদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন।

 

এই আস্থা হারিয়ে ফেলার কারণে বর্তমানে ভোট ব্যবস্থা এক মহা তামাশায় পরিণত হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের যুগে মানুষের মধ্যে এত হতাশার কারণ কি? কারণটি হলো বিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাব। আমরা যদি পড়াশুনা করি জ্ঞান বিজ্ঞান নিয়ে, তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়। উন্নত নীতি নৈতিকতার ভিত্তিতে মানুষের সাথে জোট করে ভোট করে জয় লাভ করা সম্ভব। এখন শ্রমজীবী মানুষের জীবন জীবিকা এক ধরনের। পেশাজীবী ও কর্মজীবীদের জীবন জীবিকায় পার্থক্য আছে। একটি সমাজে শ্রমজীবী পেশাজীবী ও কর্মজীবী মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা এক নয়। ফলে ভিন্ন ভিন্ন সেক্টরের মানুষ তাদের চাওয়া পাওয়া নিয়ে নির্বাচনী ব্যবস্থায় নির্বাচনী প্রার্থীদের কাছে অনেক কিছু প্রত্যাশা করে। যখন প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল পায়না তখন ভোটাররা নির্বাচনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে সর্বক্ষেত্রে নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে শ্রমজীবীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি কর্মজীবীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি পেশাজীবীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি থাকার বিধান রেখে নির্বাচন করলে সাধারণ জনগণের মধ্য আগ্রহ সৃষ্টি হবে-এ জন্য আমাদের নিরন্তর সংগাম চালিয়ে যেতে হবে। লেখক: শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ জাসদ

The post এ সময়ে ভোট ভাবনা appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3bsZbug

No comments:

Post a Comment