Saturday, August 22, 2020

দিন বদলের পালায় বাংলাদেশ https://ift.tt/eA8V8J

মো. কায়ছার আলী
যুগের পর যুগ, শতাব্দীর পর শতাব্দী এ পৃথিবীতে মহামারী এসেছে। হঠাৎ থমকে দিয়েছে ক্ষণিকের জন্য মানবযাত্রা। তখন পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়েছে। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সে দিন আমার এক বন্ধু আমাকে বললেন, ‘এখন আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় প্রয়োজন একজন লুই পাস্তুর বা আলেকজান্ডার ফ্লেমিং।’ তিনি আপাতত ভুলে গেছেন মাইকেল ফ্যারাডে বা টমাস আলভা এডিসনদের মতো অনেক অনন্য অসাধারণ মহানুভব নির্লোভ আলোকিতদের কথা। একবিংশ শতাব্দীতে বিজ্ঞান এর সাথে তথ্য ও প্রযুক্তির জয় জয়কারের সাফল্যগুলো। অসীম তথ্য ভান্ডার তথা ইন্টারনেট বিশ্বকে একটি গ্রামে পরিণত করেছে। কোন আবিস্কারক বা বিজ্ঞানীকে কারো সাথে কারো তুলনা বা কাউকে অনেক বড় ছোট ভাবা আমাকে ভীষণভাবে পীড়া দেয়।

 

তাঁদের সকলের অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে এবং থাকবে অনন্তকাল। যেদিন থেকে গুহাবাসী মানুষ পাথরে পাথরে ঘষে আগুন জ্বালাতে শুরু করছে সেদিন থেকেই এই অন্ধকার অবনীতে আলো জ্বলতে শুরু করেছে। একদিনে গড়ে উঠেনি পরিবার, গোত্র, সমাজ বা আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। সভ্যতা, বিজ্ঞান এবং তথ্য ও প্রযুক্তির ধর্ম হলো সামনের দিকে এগিয়ে চলা। একশ্রেণির মহামানব সত্য প্রতিষ্ঠা এবং মানব সভ্যতা বিকাশের জন্য নিজের সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। কেউ কেউ পরিবার, দেশ, সমাজচ্যুত, অপমানিত এবং নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। আজ অনেকের মেধা এবং শ্রমের বিনিময়ে মানব সমাজ হয়েছে ঐশ্বর্যসম্ভার বা বিপুল শক্তির অধিশ্বর। প্রাচীন মানবেরা তথা গুহাবাসীরা আজ বেঁচে থাকলে তাঁরা বিস্ময় ভরা চোখে তাকিয়ে থাকতেন। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ আমরা স্বাধীন সার্বভৌম দেশের নাগরিক। বর্তমান সরকার ২০০৮ সালের ১২ ই ডিসেম্বর তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে জাতির কাছে অঙ্গীকার করেছিল ডিজিটাল দেশগড়ার স্লোগান। তখন মানুষজন ঠাট্টা-মশকরা করেছিল। লক্ষ্য ছিল ‘২০২১ সাল, বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল।’ সে সময়ের দলীয় নির্বাচনী ইশতেহার বর্তমানে কেবল সরকারের কর্মসূচী নয়, আজ এটি জাতির গন্তব্য। শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্লোগান নয়, বাস্তবতার কাছাকাছি এক অর্জন। জ্ঞানভিক্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সোপান।

 

 

’৭১ এর স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের রুপকল্প। একটি আধুনিক যুগোপযোগী দর্শন। আজ কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় এখন ‘ডিজিটাল’ সুবিধা সবাই পাচ্ছেন। একসময় যা কল্পনা করা যেত না ডিজিটালের বদৌলতে ভার্চুয়ালি তা এখন অনায়সে করা যাচ্ছে। করোনার মধ্যেই অনলাইনে কোরবানির পশু ক্রয়বিক্রয় করা, চিকিৎসা সেবা নেয়া, পড়াশুনা, পরীক্ষা, আউট সোর্সিং ইনকাম, অফিস আদালতের কার্যক্রম ব্যাংকের বোর্ড সভা থেকে শুরু করে ভার্চুয়ালি চলছে দেশের সরকারি, বেসরকারি ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম। টাকা লেনদেনের সমস্যা হয়নি। বিকাশ, নগদ বা রকেটের মাধ্যমে অনায়সে লেনদেন হয়েছে। সকল রাজনৈতিক দল সাংগঠনিক কর্মকান্ড করছেন হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে। এই লকডাউনের সময় গ্রামের সাধারণ মানুষ টেলিমেডিসিনে রাজধানীর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা পাচ্ছেন। ই-কমার্স, বাড়িতে বসে টকশো, লকডাউনে আটকা পড়লে গ্রামে বাবা মায়ের সাথে ভিডিও কলে নিয়মিত কথা বলছেন সবাই বন্ধুদের সাথে আড্ডাও হচ্ছে অনলাইনে। আর এ সকল কিছুই সম্ভব হচ্ছে দেশের ডিজিটাল বিপ্লবের কারণে।

 

এই পদ্ধতি মানুষের জীবনকে এগিয়ে নেওয়ায় নতুন পথের সন্ধান দিয়েছে। এর সুফল আজ কার্যত আপামর জনগণের ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষও ডিজিটাল উপকার ভোগী হচ্ছেন। ১২ বছরের মধ্যেই সরকারের সে স্বপ্ন পুরণ হয়েছে। সুচিন্তিত নেতৃত্বে সর্বত্রই ডিজিটাল ব্যবহারে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশংসিত হচ্ছে। প্রচুর সম্ভাবনাময় এদেশে তথ্য ও প্রযুক্তি যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। বর্তমান সরকার ২০১১ সাল থেকে নতুন প্রজন্মের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বা শিক্ষা ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানের করার লক্ষ্যে নবম শ্রেণি থেকে সর্বক্ষেত্রে আইসিটি বিষয় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যে জাতি ভাষার জন্য রক্ত দিতে পারে, যে জাতি মহান স্বাধীনতার জন্য ত্রিশ লাখ প্রাণ এবং দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম বিসর্জন দিতে পারে, গণতন্ত্রের জন্য রাজপথ রঞ্জিত করে, সে জাতির জন্য ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার’ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অসম্ভব নয়। এ বিশ্বাস আমাদের সকলের রাখতে হবে। লেখক: শিক্ষক, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট

The post দিন বদলের পালায় বাংলাদেশ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/3gmEbFU

No comments:

Post a Comment