Wednesday, August 26, 2020

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জুম মিটিং সাতক্ষীরার দূর্গত এলাকায় বাঁধ নির্মাণের ওপর গুরুত্ব আরোপ https://ift.tt/eA8V8J

নিজস্ব প্রতিনিধি: বাঁধ মেরামত এবং উপদ্রুত মানুষকে দ্রুত সরিয়ে আনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জুম মিটিংয়ে বলা হয়, এজন্য দরকার বল্লী, বাঁশ ও বস্তা। এছাড়া মানুষের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা। এখন তাদের কাছে যে পানি পৌছাচ্ছে তা খাবার পানি। অথচ সেই পানি অযুগোসল এবং বাথরুমে ব্যবহার করা হচ্ছে ফলে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অবিলম্বে সেখানে স্যানিটেশন সমস্যার সমাধান করার ওপর জোর দেন তারা।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই জুম মিটিংয়ে যোগ দেন সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আফম রুহুল হক এবং সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ্। এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যানগণ, ইউপি চেয়ারম্যানগণ, ইউএনওগণ এবং পানি উন্নয়ন দুটি বোর্ডের কর্মকর্তা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীসহ নির্ধারিত ও অনির্ধারিত বিভিন্ন পেশার লোকজন এতে অংশ নেন।

দুর্গত এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে ভাসমান টয়লেট এবং পানি বহনের জন্য পর্যাপ্ত ফ্যান চাই উল্লেখ করে সভায় বিদ্যুৎ না থাকায় সোলার, হারিকেন, কেরোসিন ও ম্যাচ বাতি সরবরাহ করার দাবি জানানো হয়। সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, ১৫ থেকে ২০টি নৌকা অনতিবিলম্বে এখানে পৌছানোর কথা রয়েছে। এছাড়া আশাশুনির প্রতাপনগরে ৫টি, শ্রীউলায় ৪টি এবং আশাশুনি সদরে ২টিসহ মোট ১১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কিন্তু নানা কারণে মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে সেখানে যেতে সম্মত না হওয়ায় সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে। তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকায় খাদ্য সহায়তা হিসেবে ৪৭৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী জানান, আশাশুনিতে ২টি এবং শ্যামনগরে ২টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসানো হয়েছে। ৫ লাখ পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট প্রস্তুত থাকলেও এরই মধ্যে ১ লাখ বিতরন করা হয়েছে। অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে। তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইকবাল হোসেন বলেন, তালার টিআরএম (জোয়ার-আধার প্রকল্প) আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর যাতে ক্ষতি না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশ শেখর সরকার খুলনার কয়রা উপজেলাকে সাতক্ষীরা থেকে সরিয়ে খুলনায় সংযুক্তকরন এবং তালা উপজেলাকে যশোর থেকে সরিয়ে সাতক্ষীরা জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সংযুক্ত করার দাবি জানান। উপজেলা চেয়ারম্যানগণ কমপক্ষে ৩০০টি টাবু সরবরাহ করে উঁচু স্থানে অপসারিত উপদ্রুত মানুষকে রক্ষার দাবি জানান।

জুম সভায় ডা. আফম রুহুল হক-এমপি বলেন, তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মেডিকেল টীম ও ওষুধপত্র রয়েছে। চাইলেই তিনি তা সাথে সাথে দিতে পারবেন। তিনি সোলার লাইট ও হারিকেনের ব্যবস্থা করার জন্য তহবিলের টাকা ব্যবহার করার নির্দেশ দেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মুনসুর আহমেদ বলেন, এ অঞ্চলের মানুষকে রক্ষা করতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিতে হবে। তা না হলে তারা প্রতিবছরই ভাঙনের শিকার হবেন।

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ অঞ্চলের জনগণকে রক্ষা করতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে প্রকল্প হাতে নিতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ এসব ব্যাপারে সরকারকে সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।

বিভিন্ন বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, দূর্গত মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা পৌছে দিলেও ইউনিয়ন পরিষদে বসে তা বিতরণ করা হচ্ছে। এজন্য উপজেলা চেয়ারম্যানদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, উপদ্রুত মানুষ জেলা প্রশাসনের বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য যাতে তাদের ঘরে বসেই পেতে পারে সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এলাকায় মেডিকেল টীম পাঠিয়ে তাদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে হবে। জেলা প্রশাসক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মন্ত্রণালয়ে আমাদের চাহিদা পেশ করলেও তারা বুঝাতে চায় আমরা ক্ষয়ক্ষতির কথা বেশি করে বলছি। তিনি বলেন, এতে আমার ব্যক্তিগত বা অন্য কারও লাভ লোকসানের বিষয় নেই। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, এই মূহুর্তে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণের কাজ চালিয়ে যেতে হবে এবং শুষ্ক মওসুম আসতেই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে।

The post দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জুম মিটিং সাতক্ষীরার দূর্গত এলাকায় বাঁধ নির্মাণের ওপর গুরুত্ব আরোপ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2D1ueAl

No comments:

Post a Comment