Friday, June 25, 2021

করোনায় লকডাউন: এনজিও কর্মীদের চাপে নাকাল তালার সাধারণ জনগণ https://ift.tt/eA8V8J

এসএম বাচ্চু, তালা: করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন চলাকালে বিপাকে দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষ। এনজিওকর্মীরা লকডাউনের মধ্যে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে কিস্তি আদায়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের ঋণ গ্রহীতারা। ঋণের কিস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তালা উপজেলার সাধারণ জনগণ।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এর ফেসবুক আইডি হতে জেলার সকল উপজেলা সমূহে চলমান করোনা সংক্রমণ চলমান লকডাউনে সকল এনজিও প্রতি কিস্তি আদায়ের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের প্রতি কোন বাধ্যবাধকতা না রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতে এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে চিঠি দিয়ে জানানো হয় যে, মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকটা অচল হয়ে পড়েছে সাধারণ ক্ষেতে খাওয়া মানুষ। এ সময় এনজিও হতে লোন নেওয়া মানুষের কাছে কোন রকমের চাপ না দেওয়া অনুরোধ জানানো হয় এবং বলা হয় এসজিও কর্মীরা কিস্তি আদায় করতে যাবে না। কেউ কিস্তির টাকা দিতে চাইলে ফোনের মাধ্যমে প্রদান করবে। এসব নির্দেশনা থাকার সত্বেও লকডাউনের মধ্যে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে কিস্তি আদায়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এনজিওকর্মীরা।
উপজেলায় ঋণ কার্যক্রম চালানো এনজিওগুলো বর্তমানে সর্বোচ্চ মাত্রায় ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা ও নিয়মিত কিস্তি আদায় করছে। এছাড়া সমাজসেবা ও সমবায় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন নিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা আরো এনজিও নামক কসাই খানা। বেআইনিভাবে করোনাকালেও লকডাউন উপেক্ষা করে চড়া সুদে ঋণের কিস্তি আদায়ের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে গত ১০ জুন লকডাউন চলাকালীন ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায় না করার জন্য নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে এনজিও কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন সাতক্ষীরার সদ্য সাবেক জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল। অথচ জেলা প্রশাসকের সেই অনুরোধকে দুর্বলতা ভেবে তা মানছে না এনজিওগুলো। এমনকি জেলা প্রশাসনের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে প্রতিদিন সকাল থেকে তালা উপজেলার প্রত্যেকটি অলিগলির বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তি আদায় করে চলেছেন এনজিওর মাঠকর্মীরা। আর এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি ঘুরে বেড়ানোয় ঋণ গ্রহীতা পরিবারগুলোর পাশাপাশি এসব এনজিওর কর্মীরাও মহামারী করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর তীব্র ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানান দেশের সর্বোচ্চ এনজিও ব্র্যাক ও অন্য এনজিওর একাধিক এনজিও কর্মীরা।
এনজিও কর্মীরা আরো বলেন, অফিসের চাপের মুখে পড়ে বাইরে আসতে হচ্ছে করোনার এমন দু:সময়ে উপজেলার ভুক্তভোগী খেটেখাওয়া ঋণগ্রহীতারা যখন তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন, তখন এনজিওকর্মীরা (আমরা) বাড়ি বাড়ি কিস্তি আদায়ের জন্য ধন্না দিচ্ছি। কীভাবে তারা কিস্তি দিবে ? কেউ গালিগালাজ করছে, কেউ পালাচ্ছে, কেউ কাঁদছে। আমরা পড়ে গেছি মহা বিপাকে।
উপজেলার পাটকেলঘাটার ইজিবাইক চালক শফিকুল ইসলাম, টিকারাম গ্রামের পরিতোষ কুমার তালা উপজেলা সদরের আব্দুল কাদেরসহ ভুক্তভোগী ঋণ গ্রহীতারা বলেন, আমরা বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা ও ছোটোখাট গাড়ি কিনে তা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহসহ ঋণের কিস্তি দিয়ে আসছি। কিন্তু করোনাকালীন লকডাউনে ব্যবসা বাণিজ্য প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছি। লকডাউনে কয়েক সপ্তাহ বাড়ি বসে আছি, কোনো আয়-রোজগার নেই। ধার দেনা করে সংসার চলছে, কিস্তি কীভাবে দেবো ভেবে পাচ্ছি না। লকডাউনের সময় কিস্তি বন্ধ না করলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।
কিস্তি আদায় বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা ব্র্যাক এনজিওর সম্মনয়কারী মো: আশরাফুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসকের ফেসবুক থেকে দেয়া ঋণ আদায় না করা সংক্রান্ত পোস্টটি ১০ দিনেও আমরা দেখছি। জোর করে কিস্তি আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে। যদি কোন কর্মী অতি উৎসাহী হয়ে কিস্তি আদায় করতে জবরদস্তি করে সেটি তাদের ব্যক্তিগত বিষয়।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তারিফ-উল হাসান বলেন, লকডাউনে কিস্তি আদায় না করার জন্য আমি উপজেলার সকল এনজিও দের সাথে মিটিং আহ্বান করা হয়েছে আমি তাদের কিস্তি আদায় বন্ধ রাখতে ও করোনার সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

The post করোনায় লকডাউন: এনজিও কর্মীদের চাপে নাকাল তালার সাধারণ জনগণ appeared first on Daily Patradoot Satkhira.



from Daily Patradoot Satkhira https://ift.tt/2UG6IRR

No comments:

Post a Comment